বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঘরপোড়া মানুষের দুশ্চিন্তা এনজিওর কিস্তি

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকার চারটি বস্তির প্রায় ২২ থেকে ২৩ হাজার ঘর পুড়ে গেছে। এসব বস্তির বাসিন্দাদের অনেকেই বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) এবং সমিতি থেকে ঋণ নিয়েছেন। ঋণের টাকায় কেউ ঘর তুলেছেন, কেউ রিকশা আবার কেউবা সাংসারিক টিভি-ফ্রিজ কিনেছেন। প্রতি সপ্তাহেই তাদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। সব হারিয়ে নিঃস্ব এসব মানুষ কোথায় থাকবেন সে চিন্তার সঙ্গে যোগ হয়েছে কীভাবে এই ঋণ পরিশোধ করবেন। এনজিওর কিস্তি পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মিরপুরের রূপনগরের চলন্তিকা মোড় থেকে আরামবাগের নিচু এলাকা পর্যন্ত মোট চারটি বস্তি চলন্তিকা, ঝিলপাড়, আরামবাগ ও টবলক। প্রতিটি বস্তিতে চার থেকে পাঁচ হাজার ঘর ছিল। সব পুড়ে গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষ অল্প টাকায় এখানে ভাড়া থাকেন। তাদের বেশিরভাগ পোশাক কারখানার শ্রমিক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।

রূপনগরের ঝিলের মধ্যে গড়ে ওঠা বস্তিগুলোর হাজার হাজার ঘর পুড়ে গেছে। আগুন দাউ দাউ করে জ্বরে ওঠায় বেশিরভাগ মানুষ ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেননি। নিম্ন আয়ের মানুষ এক কাপড়ে বের হয়ে চোখের সামনে দেখেছেন জীবনের সব সম্বল পুড়ে যেতে। আগুনের পর বস্তির মানুষ চলন্তিকা মোড়, মিল্কভিটা ও আরামবাগ আবাসিক এলাকার সড়কে অবস্থান করছেন। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষ বলছেন, বস্তিতে এমন আগুন তারা আগে কখনও দেখেননি। আবার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বস্তির পুরনো বাসিন্দারা নিজেরাই ঝিলের ওপর ঘর তৈরি করে থাকেন। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অতিরিক্ত কিছু ঘর তৈরি করে সেগুলো এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকায় ভাড়া দেন।

এনজিওর কিস্তি পরিশোধের দুচিন্তার কথা জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাজিয়া বেগম বলেন, সমিতি থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ৯টি ঘর তুলেছিলাম। এখনও ভাড়া দিতে পারিনি। এর মধ্যেই আগুন। আগুনে সবগুলো ঘর পুড়েছে। এখন কীভাবে এই ঋণ পরিশোধ করবো? গার্মেন্টস শ্রমিক শিল্পী বেগম এই বস্তিতে পরিবার নিয়ে থাকেন। তার জন্মও এখানে। বিয়ের পর স্বামী সন্তান নিয়ে ভালোই চলছিল। স্বামী ভ্যানে করে পেঁয়াজ-রসুন বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ঘরের ভেতরে বেতন বোনাসের টাকা, স্বামীর ব্যবসার চালানের টাকা ছিল। ব্যাংকের ডিপিএসের কাগজপত্র সব পুড়েছে। সমিতি থেকে টাকা তুলে ফ্রিজ টিভি কিনেছিলাম, তাও পুড়েছে। কিছু রক্ষা করতে পারলাম না। কিস্তির টাকা কীভাবে দেবো বুঝতে পারছি না।
বস্তিবাসীর দুরবস্থা দেখে স্থানীয় সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা সাংবাদিকদের বলেছেন, কয়েক সপ্তাহ বস্তির বাসিন্দারা যেন এনজিও এবং সমিতির কিস্তি থেকে অব্যাহতি পান, সেজন্য আমরা ওই সব এনজিও’র সঙ্গে কথা বলবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন