বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পুঁজি সঙ্কটে চামড়া কিনতে পারে নি আড়তদাররা

চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

পুঁজি সঙ্কটের কারণেই পর্যাপ্ত চামড়া সংগ্রহ করতে পারেনি চট্টগ্রামের আড়তদারেরা। আর এজন্য ঢাকার ট্যানারি মালিকদের দায়ী করছেন তারা। চট্টগ্রামের আড়তদারদের পাওনা প্রায় ৩০ কোটি টাকা আটকে আছে ঢাকার ওই ট্যানারি মালিকদের কাছে। ব্যাপক দেন-দরবার করেও কোরবানীর আগে সে বকেয়া টাকা পাননি তারা।

বকেয়া দেয়া তো দূরের কথা চট্টগ্রামের আড়তদারদের কাছ থেকে চামড়া কেনার আশ্বাস দেয়নি ট্যানারি মালিকেরা। আড়তদাররা বলছেন, একদিকে পুঁজি সঙ্কট অন্যদিকে ট্যানারি মালিকদের চামড়া কেনার প্রতি অনাগ্রহ এ দুই কারণে তারা অনেকটা হাত গুটিয়ে বসেছিলেন। অনেক আড়তদার কোরবানী পশুর কোন চামড়া সংগ্রহ করেননি। আর এ কারণে চট্টগ্রামে প্রায় দুই লাখের মতো গরু ও ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়ে গেছে। শত শত কোটি টাকা মূল্যের এসব চামড়ার ঠাঁই হয়েছে সিটি কর্পোরেশনের দুটি আবর্জনার ভাগাড়ে।

চট্টগ্রামে ৫০ বছর ধরে কাঁচা চামড়ার ব্যবসা করে আসছেন রুহুল আমীন। কিন্তু গেলো কয়েকবছর ধরে ঢাকার ট্যানারি মালিকরা তার ৮২ লাখ টাকা পরিশোধ না করায় নিঃস্ব হয়ে যান তিনি। তাই এবারই প্রথম চামড়া সংগ্রহ করতে পারেননি এ ব্যবসায়ী। তার মতো চট্টগ্রামের বেশিরভাগ ব্যবসায়ীর একই অবস্থা। খোদ আড়তদার সমিতির নেতারাই সংগ্রহ করেননি চামড়া।

তাদের অভিযোগ, কোরবানির দুইদিন আগ পর্যন্তও বারবার ধরনা দিয়ে পাননি বকেয়া টাকা। এমনকি চামড়া কেনার আশ্বাসও দেননি ট্যানারি মালিকরা। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে তারা চামড়া সংগ্রহে পিছুটান দেন। যার প্রভাব পড়ে মাঠপর্যায়ে। আড়তদারদের অভিযোগ, তারা ট্যানারি মালিকদের কাছে পুরোপুরিই জিম্মি। কেননা তাদের কাছেই বিক্রি করতে হবে চামড়া। সরকার এবার রফতানির অনুমতি দিলেও এবছর এর সুফল কতটুকু মিলবে তা নিয়ে সন্দিহান তারা। এজন্য সরকারের সহযোগিতা চান ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে লোকসান দিতে দিতে অনেক ব্যবসায়ী এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।
চামড়ার আড়তের ব্যবসার বদলে অন্য ব্যবসা করছেন অনেকে। আড়তদারদের অনেকে ঢাকার ট্যানারি মালিকদের বদলে এখন দেশের বাইরে চামড়া বিক্রির চেষ্টা করছেন। তবে ভারত ছাড়া অন্য কোন দেশ কাঁচা চামড়া আমদানি করে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে স্মরণকালের ইতিহাসে ভয়াবহ দরপতনের কারণে একদিকে মওসুমি ব্যবসায়ীরা পুঁজি হারিয়ে পথে বসে গেছেন। অন্যদিকে চামড়ার দাম না পেয়ে হতাশ মাদরাসাসহ বিভিন্ন দাতব্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। কোরবানি পশুর চামড়া বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় তার পুরোটাই গরীবের হক। সমাজের হতদরিদ্র, ভিক্ষুক, পঙ্গু, অক্ষম ব্যক্তি, মাদরাসা ও এতিমখানায় চামড়া বিক্রির টাকা দান করেন কোরবানি দাতারা।
চামড়ার দাম না পাওয়ায় এবার সকলেই তাদের পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। লাখ লাখ চামড়া বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় চামড়া খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। চট্টগ্রামে এবার চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে পাঁচ লাখ। তবে এ লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে না। এরমধ্যে ৬০ ভাগ চামড়া সংগ্রহ করতে পেরেছেন আড়তদাররা। বাকি ১০ থেকে ১৫ ভাগ সংগ্রহ করা হবে জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে। নষ্ট হয়েছে দুই লক্ষাধিক চামড়া। চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়। আর এ কারণে প্রতিবছর চট্টগ্রাম থেকে বেশি চামড়া সংগ্রহ করেন আড়তদারেরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন