শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভর্তি বিড়ম্বনায় ডেঙ্গু রোগী দিশেহারা

গতকাল ৪ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর পাশে মা। গতকালের ছবি -ইনকিলাব


এক বছরের ছোট্ট শিশু রাফিয়া। গত ৬ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে তার শরীরে জ্বর আসে। বুধবার সকালে রক্ত পরীক্ষা করা হলে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এ সময় তার রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ ১ লাখ ৬০ হাজারে নেমে আসে। এ অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ডেঙ্গু সেলে নিয়ে গেলে তারা ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরের দিন পুনরায় তার রক্ত পরীক্ষা করা হলে প্লাটিলেটের পরিমাণ আরও কিছুটা কম দেখায়। এদিনও বিএসএমএমইউ’র ডেঙ্গু সেল থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, শিশুটির শরীর এখনো ভর্তি করার মতো খারাপ হয়নি। আরও খারাপ না হলে ভর্তি করা যাবে না। অথচ একদিন পরেই শিশু রাফিয়ার শরীর নিস্তেজ হতে শুরু করলে দ্রুততার সাথে তাকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটির কোনো সমস্যা নেই বলে জানান। পরিবারের পক্ষ থেকে সে সময় হাসপতালের একজন কনসালটেন্টের কাছে তাকে নেয়া হলে তিনি ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন এবং জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু করেন। পরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, শিশু রাফিয়াকে আরও আগে ভর্তি করা দরকার ছিল।

আড়াই বছরের শিশু সাদমান। দু’সপ্তাহ আগে জ্বর হলে পরীক্ষা ডেঙ্গু ধরা পড়ে। রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ আড়াই লাখ থাকা অবস্থায় ধানমন্ডির বেসরকারি সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু শিশুটির পরিবারের সদস্যরা স্বল্প শিক্ষিত হওয়ায় এবং চিকিৎসক ও নার্সরা রোগীর স্বজনদের করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝিয়ে না বলায় স্বল্প সময়ের ব্যবধানে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। এ অবস্থায় হাসপাতালে আইসিইউ খালি নেই বলে শিশু আরাফকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়। এ অবস্থায় আরাফের পরিবার একপর্যায়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে।

এ ধরনের ঘটনা প্রতিদিন অসংখ্য শিশুদের ক্ষেত্রে ঘটছে। বিশেষ করে এক শ্রেণীর চিকিৎসক শিশুদের ডেঙ্গু চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ ধারণা না নিয়ে রোগীদের বিভিন্ন ভুল পরামর্শ দিচ্ছেন। অথবা ডেঙ্গুর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেই চিকিৎসা দিচ্ছেন। ইতোপূর্বে রাজধানীর নামিদামি হাসপাতালেও সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না দেয়ায় শিশু ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চিকিৎসকদের এ ধরনের উদাসীনতায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুরোগীদের সঠিক চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ক্ষেত্রবিশেষ তারা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। সরকারের রোগতত্ত¡, রোগনিয়ন্ত্রণ গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু আক্রান্ত সংক্রান্ত পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে মোট আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে শূন্য থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরোগীর হার ২৭ শতাংশ। এরমধ্যে এক বছরের নিচে ২ শতাংশ, এক থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু ৮ শতাংশ এবং ৫ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশু ১৭ শতাংশ।

আনোয়ার খান মর্ডান মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ডা. এখলাসুর রহমান বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুর জ্বর দেখেই বোঝা যাবে না, যে শিশুটি ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত নাকি তার শকসিন্ড্রোম বা হেমোরেজিক ফিবার হতে পারে। তাই শিশুটি আরও অসুস্থ হলে তবে ভর্তি করা হবে এমন কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া একই রোগ প্রত্যেক ব্যক্তির শরীরে একই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই ডেঙ্গু আক্রান্ত শিশুরোগীদের অবশ্যই অবজারভেশনে রাখতে হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে শিশু ডেঙ্গু রোগীদের সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শূন্য থেকে ৬ বছর বয়সী রোগীরদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি। কারণ এসব রোগীরা তাদের সমস্যার কথা বলতে বা বোঝাতে পারে না। বার বার রক্ত নেয়ার কারণে তারা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ শিশুদের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হয় না। চিকিৎসকদের একটি অংশ শিশুদের চিকিৎসা সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখেন না। অনেক শিশু শখে চলে গেলে এনআইসিইউর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় এনআইসিইউর সংখ্যা অনেক কম থাকায় জটিলতার সৃষ্টি হয়।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্যে দেখা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে আরও ১৪৬০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ঢাকায় ৬২১ জন এবং ঢাকার বাইরে ৮৩৯ জন। কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার জানান, ঢাকায় নতুন রোগী ভর্তির হার শুক্রবারের তুলনায় ১৮ শতাংশ কম এবং ঢাকার বাইরে ১৩ শতাংশ কম। চলতি বছর এ পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৫১ হাজার ৪৭৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে ৪৩ হাজার ৫৮০ জন হাসপাতাল ছেড়েছেন এবং ৭ হাজার ৮৫৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ৭০টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৪০টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও আক্রান্ত ও মৃত্যুর এই হিসাব ঢাকার ৪১টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি। এই একই সময়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

আরও ৪ জনের মৃত্যু: শনিবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মনোয়ারা বেগম (৪৫) নামে আরেক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ী কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামৈন উপজেলায়। মনোয়ারার স্বামী সাইফুল ইসলাম জানান, ১০ দিন আগে সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হলে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে থেকে তাকে গত ১৩ আগস্ট ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখনে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বেলা পৌনে এগারোটায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাগুরার এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বুলু এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকালে সুমন মোল­া (১৭) নামে এই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। সুমন মাগুরা সদর উপজেলার ধলহরা চাঁদপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে। স্থানীয় শত্রæজিৎপুর কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সুমনকে ১২ আগস্ট বিকালে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়। তার মস্তিষ্কে সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। এর আগে ৮ আগস্ট থেকে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল।

এদিকে পটুয়াখালীর গলাচিপার গৃহবধূ লিপি রানী দাস (২২) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধী অবস্থা শনিবার ভোর চারটার দিকে মারা যান। লিপির স্বামী বিমল দাশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার আড়াই মাসের একটি কন্যা শিশু রয়েছে। এছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঝিনাইদহে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

নতুন কর্মসূচি: ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষে সরকারের ৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং আরো ৪টি সংস্থার সমন্বয়ে ই-ক্যাবের সহায়তায় ‘স্টপ ডেঙ্গু’ নামের একটি বিশেষায়িত মোবাইল অ্যাপ প্রকাশ করা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে যে কেউ সারা দেশের যে কোনো স্থানে মশার প্রজনন স্থান স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করতে পারবে। যা মশার প্রজনন স্থানের ম্যাপিং তৈরিতে সাহায্য করবে। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে সিঙ্গাপুর থেকে আগত বিশেষজ্ঞ ডা. তৌফিকুল ইসলাম এবং দুই সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে বর্তমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক প্রফেসর ডা. সানিয়া তহমিনা, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শরিফ আহমেদ প্রমুখ।

চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামে গতকাল (শনিবার) আরও ২৬ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২০ জন। অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬ জন। চমেকে বর্তমানে ভর্তি আছেন ১২৬ জন ডেঙ্গু রোগী। এ পর্যন্ত এ হাসপাতালে ৪৯৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হন।

এদিকে গুরুতর অসুস্থ ২ জনকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চমেক হাসপাতাল মেডিসিন বিভাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীদের বিশেষ ব্যবস্থায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। শতাধিক শয্যার ওয়ার্ডটি রোগীতে কানায় কানায় পূর্ণ। নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী আসছে।

বরিশাল : বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গুজ্বর পরিস্থিতি এখনো নাজুক। গতকাল শনিবার সকালের পূর্ববর্তী ৭২ ঘণ্টায় বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর, বরগুনা ও ঝালকাঠী জেলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে প্রায় সাড়ে ৫শ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত মানুষ চিকিৎসাধীন । গড়ে প্রতিদিন দেড়শ। বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই গতকাল দুপুর পর্যন্ত প্রায় পৌনে ৩শ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালটিতে এ পর্যন্ত প্রায় ১২শ ডেঙ্গু জ্বর রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তিকৃত ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজার ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে গত ৭২ ঘণ্টায় বরিশালে ৫১জন, পটুয়াখালীতে ৫০জন, ভোলাতে ৪১জন, পিরোজপুরে ৪৯জন, বরগুনাতে ৩৬জন এবং ঝালকাঠীতে আরো ৭জন ডেঙ্গুজ্বর আক্রান্ত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এসময়ে বরিশাল সদর হাসপাতাল সহ উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসাধীন ছিল ১০৬ ডেঙ্গু রোগী। এছাড়া পটুয়াখালী ও ভোলাতে ৩৫ জন করে এবং পিরোজপুরে ৫২জন, বরগুনাতে ৩০ ও ঝালকাঠীতে ১১জন ডেঙ্গু জ্বর আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন আছে।

রাজশাহী : রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাতপাতালে ভর্তি হয়েছে ১৮জন ডেঙ্গু রোগী। রিলিজ নিয়েছে ৩৫জন। হাসপাতালে ভর্তি আছে ৬৫জন। এখন পর্যন্ত হাসপাতালে মোট রোগী ৪৩০জন। মোট রিলিজ ৩৬৪জন। মৃত্যুবরণ করেছে একজন এবং একজন আইসিএইউতে চিকিৎসাধীন।

পাবনা : পাবনায় ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপন এখনও কমেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ১৭ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। বর্তমানে ৫৫ জনের চিকিৎসা চলছে । পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা: রঞ্জন কুমার দত্ত গতকাল শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় এই তথ্য জানান।

অপরদিকে, ডেঙ্গু রোগ উপজেলা পর্যায়ে বিস্তৃত হচ্ছে । সাঁথিয়া উপজেলায় তাসকিয়া তাবাছুম নামে ১১ মাস বয়সী এক শিশু ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত বলে সনাক্ত করেন চিকিৎসক ডা: আব্দুস শুকুর। সাঁথিয়া উপজেলার দক্ষিণ বোয়ামারী এলাকার বাসিন্দা তাসকিয়া তাবাছুম’র পিতা আমিরুল ইসলাম বলেছেন, তাঁর মেয়েকে বাড়ির বাইরে কখনও নেওয়া হয়নি। সে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এলাকাবাসী মনে করছেন, সাঁথিয়া উপজেলাতেও এডিস মশা রয়েছে।

ফরিদপুর : ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু আক্রান্ত সুমন সেক (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সে মাগুরা জেলার চাদঁপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের পুত্র। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় তার মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সুমন সেক মাগুরা থেকে ডেঙ্গু নিয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়। এরপর থেকে তার অবস্থা অপরিবর্তিত ছিলো। পরে গতকাল শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। এদিকে এ নিয়ে সরকারী হিসেবে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৪জন ডেঙ্গু রোগির মৃত্যু হলো। গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ফরিদপুরের হাসপাতাল গুলোতে ভর্তি হয়েছেন ৭৩ জন। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৯৬ জন এখন। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে ১৩০ জনকে। এরমধ্যে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই গত ২৪ ঘন্টায় ভর্তি হয়েছে ৪৬জন রোগী।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন