বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সড়কে বেপরোয়া গতি

অতিরিক্ত গতিতে ৫৩%, চালকের কারণে ৩৭%, অন্যান্য ১০%

আবদুল্লাহ আল মামুন | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

কে জানত এই সেলফিই তাদের জীবনের শেষ। সিলেট থেকে ফেরার সময় প্রাইভেটকারে ব্যবসায়ী স্বামী ইমরান হোসেনকে পাশে নিয়ে নববধূ সাদিয়া আক্তার সাথী সেলফি তোলেন। এরপর ফেসবুকে পোস্ট করেন এবং কিছুক্ষণ পরই সবকিছু স্মৃতি -সংগৃহীত


হাতের মেহেদির রঙ এখনো শুকায়নি। এর মধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সাদিয়া আক্তার (২৬) ও তার স্বামী ইমরানের (৩৫) জীবন। তাদের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন জান্নাত (২৫) ও আকিব (২৭) নামের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া আরও দুই শিক্ষার্থী। বিয়ের পরে সহপাঠীদের নিয়ে সিলেটে হানিমুনে গিয়েছিলেন সাদিয়া। ফেরার পথে গত শুক্রবার মধ্যরাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের নরসিংদীর শিবপুরের কারারচর এলাকায় বাস-প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

সড়ক সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলেন, দেশের সড়ক-মহাসড়ক যেন মৃত্যুকূপ! সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না। গত বছর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশেজুড়ে কঠোর আন্দোলন হলেও অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ঈদ এলেই সড়কে নামে মৃত্যুর মিছিল। ঈদের আগে-পরে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কয়েকগুণ বেড়ে যায়। তবে আগের চেয়ে ঈদের পরে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেশি ঘটে। এবারের ঈদুল আজহার আগে-পরের এক সপ্তাহে সড়কে প্রায় শ’খানেক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। গত ঈদুল ফিতরের ছুটিতে এ প্রাণহানির সংখ্যা ছিল দেড়শ’ জনের বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ফাঁকা সড়কে অতিরিক্ত গতি, চালকদের বেপরোয়া মনোভাব, ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালক, না ঘুমিয়ে বিরামহীন গাড়ি চালানো, মালিকদের বেশি ট্রিপের চাপ, অনিয়ন্ত্রিত ওভারটেকিং, সড়ক-মহাসড়কে তিন চাকার নিষিদ্ধ যান, যাত্রীদের তাড়াহুড়ো এবং আইনের প্রয়োগ না থাকা ও ঈদের পরে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতার কারণে এসব দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত গতির কারণে ৫৩ শতাংশ ও চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে।

হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানায়, মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তারের সঙ্গে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমরানের বিয়ে হয় সপ্তাহখানেক আগে। নবদম্পতির বিয়ে উপলক্ষে সহপাঠীদের নিয়ে সিলেটে হানিমুনের আয়োজন করেন তারা। সেখানে পিকনিক করে রাতেই প্রাইভেটকার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন তারা। প্রাইভেটকারটি শিবপুরের কারারচর নামক এলাকায় পৌঁছলে ঢাকা থেকে সিলেটগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সরাসরি প্রাইভেটকারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতেই অকালে ঝরে পড়ে তাজা চারটি প্রাণ।

পরিবহন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৯ আগস্ট থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ঈদের আগে-পরের ৯ দিনে সড়কে অন্তত ১২০ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এর মধ্যে গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজনসহ মারা গেছেন ১২ জন। ১৬ আগস্ট ময়মনসিংহে দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৫ জনসহ ১০ জেলায় মারা গেছেন ১৬ জন। ১৫ আগস্ট ২৮ জন। ঈদের দিন এবং ঈদের আগের ও পরের তিন দিনে মারা গেছে ৩৩ জন। এছাড়া ১১ তারিখ ৫, ১০ তারিখ ১৩ ও ৯ তারিখে ৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ ছাড়া এসব দুর্ঘটনায় হাজারখানেক মানুষ আহত ও অনেকে পঙ্গুত্বের শিকার হন। এর মধ্যে ঈদের ছুটি শুরুর (১১ আগস্ট) পর থেকে গত ৭ দিনে (গতকাল পর্যন্ত) নিহতের সংখ্যা ৮৮ জন।

সড়ক বিশেষজ্ঞ ও পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলেন, মহাসড়কগুলোতে দূরপাল্লার অধিকাংশ বাস ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতির ওপরে চলে। এই গতি নিয়ে পরিবহনগুলো একটি আরেকটিকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পাশ কাটিয়ে (ওভারটেক) যাওয়ার চেষ্টায় লিপ্ত থাকে। প্রতি এক মিনিটে অন্তত একবার এভাবে পাশ কাটিয়ে যেতে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়ে থাকে। যার কারণে অতিরিক্ত গতি নিয়ন্ত্রণ ও চালকের বেপরোয়া মনোভাব বন্ধ করা না গেলে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমানো যাবে না।

সরকারি হিসাবে দেশে বছরে প্রায় আড়াই হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তবে যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে এ সংখ্যা ৮ হাজার। আর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে বছরে সারাবিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়।

সামাজিক সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)-এর এক পরিসংখ্যান মতে, ২০১৮ সালে রাজধানীসহ সারাদেশে ৩ হাজার ১০৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ৪ হাজার ৪৩৯ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয় ৭ হাজার ৪২৫ জন।

গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১ হাজার ২০৬ জন কম ছিল। ২০১৭ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৫ হাজার ৬৪৫ জন। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১৮ সালে বেশির ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে বড় বড় শহর ও মহাসড়কে। ২০১৭ সালে বাস দুর্ঘটনার সংখ্যা বেশি থাকলেও ২০১৮ সালে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মিলিয়ে সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশ।

এ দিকে, রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন জানায়, গত ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে ও পরের ১৪ দিনে সারাদেশে ১৫৩টি দুর্ঘটনায় ২০১ জন নিহত হয়। এ সময় আহত হয় ৪০৯ জন। যদিও অন্যান্য সংগঠনের সাথে প্রাণহানির সংখ্যার তারতম্য রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) এক গবেষণায় দেখা যায়, গত ঈদুল ফিতরের আগে-পরে ১৫ দিনে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ১৭২টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৫৪ জন। এর মধ্যে ঈদের আগের সাত দিনে ৫০টি দুর্ঘটনা ঘটে। আর ঈদের দিন থেকে পরের আট দিনে দুর্ঘটনার সংখ্যা ১২২টি। ঈদের আগে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ৭২ জনের আর পরের আট দিনে প্রাণ হারান দ্বিগুণ তথা ১৪৪ জন।

এআরআইয়ের তথ্য বলছে, ২০১৬ থেকে গত ঈদুল ফিতর পর্যন্ত সাতটি ঈদ উদযাপিত হয়েছে। এসব ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ হাজার ৬১৩ জন। প্রতি ঈদের আগে-পরের সময়টাতে গড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩০ জন। অবশ্য বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে, ঈদের আগে-পরের ১৩ দিনে গড়ে ৩০০ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য মতে, ২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের আগে ও পরের ১৩ দিনে ১২১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৮৬ জন নিহত হয়। আহত হয় ৭৪৬ জন। ২০১৭ সালে ঈদের ছুটিতে সারাদেশে ২০৫টি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ২৭৪ জন। আহত হয় ৮৪৮ জন। ২০১৮ সালে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৬৫ জন আহত হয়।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির নেতা হোসেন আহমেদ মজুমদার বলেন, ঈদে অনেক পেশাদার চালক ছুটিতে যান। এই সুযোগে অপেশাদার চালকদের হাতে গাড়ি চালানোর দায়িত্ব পড়ে। তারা সড়ক ফাঁকা পাওয়ায় বেশি যাত্রীর লোভে এবং বেশি ট্রিপ মারার খেয়ালে মাত্রাতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে থাকে। যার কারণে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বহুগুণে বেড়ে যায়।

বুয়েটের এআরআই ১৯৯৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। ওই গবেষণার তথ্য বলছে, দেশে ৫৩ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। আর চালকদের বেপরোয়া মনোভাবের কারণে ঘটে ৩৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে। পরিবেশ-পরিস্থিতিসহ অন্য কারণে দুর্ঘটনার পরিমাণ ১০ শতাংশ। অর্থাৎ চালকের বেপরোয়া মনোভাব ও গতির কারণে ৯০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে।

এ দিকে, পুলিশ ও বিআরটিএ সূত্র বলছে, দেশের কয়েকটি মহাসড়কে বাসের চেয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা বেশি চলাচল করে। এছাড়া উত্তরবঙ্গের প্রতিটি মহাসড়কে অবাধে নছিমন, করিমন ও ভটভটি চলে। একইভাবে রাজধানীর মতো সারাদেশে ব্যপকভাবে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বেড়ে গেছে। মহাসড়কে কম গতির এসব যান চালার কারণেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে।

মোটরযান আইনে একজন চালক একটানা পাঁচ ঘণ্টা যানবাহন চালাতে পারেন। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে দিনে সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা চালানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু গত ১৫ দিন অনেক চালক অনবরত গাড়ি চালাচ্ছেন। তাদের বিশ্রাম না দিয়ে অতিরিক্ত ট্রিপ মারানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর চালকের বিশ্রাম ও কর্মঘণ্টা মানার বিষয়ে নির্দেশনা দিলেও পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা তা মানছেন না। যার কারণে একদিকে মালিকদের চাপ অন্যদিকে বেশি টাকার লোভে চালকরাও ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত ট্রিপ মারায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে।

এআরআইয়ের গবেষক ও বুয়েটের শিক্ষক কাজী সাইফুন নেওয়াজ বলেন, সড়কে প্রাণহানির জন্য বেপরোয়া গতি বেশি দায়ী। আর ঈদের পরে বেশি দুর্ঘটনার পেছনে চালকের ক্লান্তির বিষয়টি রয়েছে। এ ছাড়া ঈদে বাড়তি আয়ের আশায় নগর পরিবহনের ফিটনেসবিহীন অনেক বাস দূরপাল্লায় চলাচল করে। এসব বাসের চালকও অনেক অদক্ষ থাকে। যার কারণে ঈদের সময় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেশি ঘটে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ঈদের আগে যেভাবে মনিটরিং করা হয়, ঈদের পরে সেভাবে করা হয় না। সড়কমন্ত্রী থেকে শুরু করে সড়ক সচিব, পুলিশের আইজি, র‌্যাবের ডিজিসহ সড়ক সংশ্লিষ্ট অনেকে কাউন্টার ঘুরে প্রকৃত চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু ঈদের পর তাদের একই রকম উদ্যম না থাকায় ফাঁকা মাঠ পেয়ে চালক ও পরিবহন মালিক সংশ্লিষ্টরা বেপরোয়া হয়ে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, বিগত ঈদগুলোতে সড়ক দুর্ঘটনার যেসব কারণ বলা হয়েছিল এবারের ঈদেও সেই একই কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব সমস্যার সমাধানে সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ দিয়ে সেগুলো আমলে নিতে বলা হলেও গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এমনটি হলে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি প্রাণহানি অনেক কমানো যেত।
এ দিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে বিস্তারিত :

চট্টগ্রাম : নগরীতে বেপারোয়া ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ গেল এক ব্যবসায়ীর। গতকাল শনিবার পুরাতন চান্দগাঁও থানার সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মো. লোকমান হোসেন (৬০) নগরীর তামাকমুন্ডি লেইন বণিক সমিতির উপদেষ্টা। তার বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায়।

নোয়াখালী : কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চাপায় মুনতাহা (৪) নামের এক শিশু নিহত হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাস্তার মাথা-বসুরহাট সড়কের নতুন বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মুনতাহা চরকাঁকড়া ৭নং ওয়ার্ডের বেছু মাঝি বাড়ির মাসুদের মেয়ে।

ধামরাই (ঢাকা) : ঢাকার ধামরাইয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত গরু ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় সময় একই পরিবারের চারজনসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ধামরাইয়ের কালামপুর-সাটুরিয়া সড়কের খাগুর্তা ব্রিজের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত গরু ব্যবসায়ীর নাম জহির উদ্দিন (৩২)। তিনি উপজেলার সানোড়া ইউনিয়নের ঝাউবাধা গ্রামের জয়নাল হোসেনের ছেলে।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনা-মোহনগঞ্জ সড়কের বারহাট্টা উপজেলার অতিথপুর নামক স্থানে গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে সাইফুল ইসলাম (৪০) নামক এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছে।

রূপগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে প্রাইভেট কারের ধাক্কায় ইব্রাহিম সরকার (৩৭) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে উপজেলার পূর্বাচল উপ-শহরের ১ নং সেক্টরের ৩শ’ ফুট সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইব্রাহিম সরকার রাজধানী ঢাকার খিলক্ষেত থানার মধ্য কাউলা এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় ৬ জন আহত হয়েছেন।

সাভার (ঢাকা) : নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের সাভারের জিরানী বাজার এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের চাপায় আলমগীর হোসেন (৩০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরের এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন তার বড় ভাই হযরত আলী। নিহত আলমগীর হোসেন ঢাকার আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউপির গোহাইলবাড়ি মেশিনপাড় এলাকার মুসলিম উদ্দিন বেপারীর ছেলে। আহত হযরত আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গতকাল শনিবার মটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বৈশাখী টিভির ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি, শহীদ নুর আলী কলজের সহকারী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মন্টু এবং দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রতিনিধি মানিক ঘোষ গুরুতর আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রফিকুল ইসলামের অবস্থা গুরুতর।

রংপুর : রংপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে একজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে রংপুর নগরীর হাজিরহাট থানার মন্থনা গংগাহরী এলাকায় সৈয়দপুর-ঢাকা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মাগুরা : মাগুরার শ্রীপুরে বাসের ধাক্কায় জিয়াউর রহমান নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল সকালে মাগুরা-শ্রীপুর সড়কের বরিষাট বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
M Imran Kibria Sohag ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪২ এএম says : 0
সড়ক যেন মৃত্যুর মিছিল! আরো কত সময় গেলে মানুষরা আরেকটু সচেতন হবে? বেপরোয়া গতি সবকিছুর জন্যই হুমকি। সচেতন হোন, নিরাপদে থাকুক সবাই..
Total Reply(0)
Ferdous Naeem ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫৩ এএম says : 0
নিয়ম না মানার প্রবণতা থেকেই ব্যাপক সড়ক দূর্ঘটনা আর প্রাণহানী
Total Reply(0)
Md Amir Hossain ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫৪ এএম says : 0
ড্রাইভারদের ডোপ টেষ্ট বাধ্যতামূলক করা গতি,অভারটেকিং লিমিট রাখা। সচেতনতা
Total Reply(0)
Al Imran ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫৪ এএম says : 0
রাস্তা জ্যাম থাকাই ভাল, ফাঁকা রাস্তা পেলে গাড়ীর ড্রাইভাররা বেপোরোয়া হয়ে যায়। আর ঘটে দুর্ঘটনা
Total Reply(0)
Aminul Robel ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫৫ এএম says : 0
প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালায় এজন্য এ অবস্থা।
Total Reply(0)
Faruk hassan Liton ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৫৮ এএম says : 0
এমন দুর্ঘটনার হাত থেকে সবাই কে রক্ষা করুন আল্লাহ
Total Reply(0)
সালমান ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৪:০৪ এএম says : 0
দেশের সড়ক-মহাসড়ক যেন মৃত্যুকূপ! সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না।
Total Reply(0)
Md. yousuf Ali ১৮ আগস্ট, ২০১৯, ৫:৫০ পিএম says : 0
যে দেশে যেকোন আন্দোলন করলেই সেটাকে রাজনৈতিক ইসু বানিয়ে দমিয়ে রাখা হয় সেদেশে এধরনের দুর্ঘটনা কোন ব্যপারনা। যেখানে আন্দোলন করলে সরকার স্থায়ী সমাধানের কোন উদ্যেগ না নিয়ে বরং সেটাকে দমিয়ে রাখার উদ্যে নেয়। যার কারনে সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারন করে.......
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন