শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডেঙ্গুর দায় জনগণকে দেয়ার সুযোগ নেই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের নেয়া কার্যক্রম হাইকোর্টকে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে এ বিষয়ে আদালত নতুন করে কোনো আদেশ দেননি। এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, দুই সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এটা নিলে হয়তো এরকম পরিস্থিতি হতো না। যাদের সঠিকভাবে বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব ছিল তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাদের মানসিকতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে।

গতকাল বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
শুনানিকালে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কতজন মারা গেছে তা নিয়ে পত্র-পত্রিকায় দুইরকম তথ্য দেখছি। সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৪৮ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৭২ জন। এটা নিয়ে দুইরকম তথ্য কেন? জবাবে ডিএজি বলেন, সরকারি হিসেবে ৪৮ জন। যারা ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তাদের কারো কারো অন্য রোগ থাকতে পারে। কারো হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।

এসময় আদালত বলেন, ধরে নিচ্ছি, ৪৮ জনই মারা গেছে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবারের কি অবস্থা তা একবার ভেবে দেখুন। ডেঙ্গু এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। যথাসময়ে যদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে হয়তো এত লোককে মরতে হতো না। আদালত বলেন, শরীয়তপুর থেকে একজন ঢাকায় সেবা দিতে এসে মারা গেছে। সে যদি গ্রামে থাকতো তাহলে হয়তো তাকে মরতে হতো না।

আদালত বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা সতর্ক করেছিলাম। দুই সিটির সচিবকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের আদেশের পর দুই সিটির কর্তা ব্যক্তিদের কাছ থেকে যে ধরণের কথাবার্তা শুনলাম তা কারো কাম্য নয়। ডেঙ্গু এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। সরকার বা দুই সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এটা নিলে হয়তো এরকম পরিস্থিতি হতো না। যাদের সঠিকভাবে বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব ছিল তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাদের দক্ষতার অভাব রয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে আদালত বলেন, নিজেরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে জনগণের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। জনগণকে তাদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার করতে বলা হচ্ছে। সত্যিকারে যেখানে এডিস মশা থাকে সেখানে ওষুধ ছিঁটালেই তো হয়। জনগণকে সচেতন হতে হবে- এটা ঠিক। কিন্তু সব দায় জনগণের- এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে গেলে আদালত বলেন, আমরা তো কোনো রুলজারি করিনি। আরেকটি আদালত রুল দিয়েছে। সেখানে রিপোর্ট দিন। এসময় ডিএজি বলেন, এই আদালত মৌখিকভাবে এক আদেশে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিলেন। তাই সরকার বিষয়টি জানিয়েছে। তিনি সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে বলেন, সরকার এটা নিয়ে খুবই আন্তরিক। সকল সরকারি হাসপাতালে সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিদেশ থেকে ওষুধ আমদানিতে শুল্ক মুক্ত করা হয়েছে। ১০টি সার্ভিলেন্স টিম গঠন করা হয়েছে। এরইমধ্যে ৪০টি হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। যেসব হাসপাতাল সরকারি নির্দেশনা অমান্য করেছে তাদের আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন