বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীরা হয়রানির শিকার

মহসিন মিলন, বেনাপোল থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ঈদের লম্বা ছুটি কাটাতে বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। আর চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন বাংলদেশী পাসপোর্ট যাত্রীরা। প্রতিদিন হাজার হাজার বাংলাদেশী যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাচ্ছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে কেউ যাচ্ছেন বেড়াতে কেউ যাচ্ছে ডাক্তার দেখাতে কেউবা যাচ্ছেন আত্বীয়-স্বজনের বাড়িতে। যাত্রীদের অধিকাংশই প্যাসেনজার টার্মিনালে নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছেন।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট। এ চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী দুদেশের মধ্যে চলাচল করছেন। এবার কোরবানির ঈদের লম্বা ছুটি পাওয়ায় বাংলাদেশি যাত্রীদের ভারতে যাচ্ছে গণহারে। অন্যান্য সময়ের তুলনায় এখন দ্বিগুনের চেয়ে বেশী যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে এই চেকপোস্ট দিয়ে ৪০ হাজার যাত্রী ভারতে গেছেন। ভারত থেকে আসা যাত্রীর সংখ্যা খুবই কম। ভারতে যাওয়ার সময় খোলা আকাশের নিচে রোদ বৃস্টিতে ভিজে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তারা।
একজন পাসপোর্ট যাত্রীকে নোম্যান্স ল্যান্ডে পৌছাতে বাংলাদেশ সাইডে ৭ জায়গায় লাইনে দাড়াতে হচ্ছে। যাত্রীরা বেনাপোল চেকপোস্ট কাস্টম ও ইমিগ্রেশন পুলিশের সেবায় সন্তষ্ট হলেও অভিযোগ করেন প্যাসেনজার টার্মিনালের সেবারমান ও কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের বিরুদ্ধে। যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, প্রত্যেকে বন্দর প্যাসেনজার টার্মিনাল ফি বাবদ ৪২ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও তাদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। তারপরও এখানে কোন বসার জায়গা নেই। ঈদের পরে ভারতে যাওয়ার যাত্রীদের চাপ বেশী থাকায় ঘন্টার পর ঘন্টা যাত্রীদের রোদ বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এখানে আবার রয়েছে আনসার ও আর্মড পুলিশ বাহিনী। এ আর্মড পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিয়ে লাইন ছাড়াই আগে পার করে দিচ্ছেন বলে যাত্রীদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন। কারো কারো কাছ থেকে ১০০০ টাকাও নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। টাকা নিয়ে লাইন ছাড়াই ভেতরে ঢুকতে দেয়ায় লাইনে থাকা যাত্রীদের লাইনেই পড়ে থাকছে হচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা। এখানে টাকা দিলে টার্মিনালের ভেতরে ঢোকা যাচ্ছে আর টাকা না দিলে ঢোকা যাচ্ছে না। কিন্তু এটা দেখার কেউ নেই।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে সহজে পার হলেও দু’দেশের নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় আবারও বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। ভারতীয় গেটে ধীর গতিতে পাসপোর্ট চেকিং করায় নোম্যান্স ল্যান্ড এলাকায় দীর্ঘ লাইনের সৃষ্টি হচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে এ লাইনের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। ঘন্টার পর ঘন্টা খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে থাকতে হচ্ছে এসব পাসপোর্ট যাত্রীদের। রোদ বৃষ্টি আর ব্যাপসা গরমে অতিষ্ট হয়ে উঠছে যাত্রীরা। বিশেষ করে ছোট শিশু, নারী রোগী ও বৃদ্ধরা পড়ছেন মহাবিপাকে।
তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সেবার মান বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহন করেছেন। তারা একজন সহকারী কমিশনারের নের্তৃত্বে সার্বক্ষনিক যাত্রীদের দেখভাল করছেন। পাসপোর্ট যাত্রীরা যাতে কোন বহিরাগতদের কাছে পাসপোর্ট না দেন সে জন্য মাইকে বারবার যাত্রীদের সতর্ক করা হচ্ছে। কাস্টমস এর মাত্র ৫ মিনিটে স্ক্যানার হলেও দেরি হচ্ছে ইমিগ্রেশন ও নোমান্স ল্যান্ডে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার উত্তম চাকমা জানান, বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোন যাত্রী যাতে হয়রানীর শিকার না হয় তার জন্য আমরা তদারকি করছি। রোগী ও শিশু সাথে থাকা যাত্রীদের লাইন ছাড়া প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি আবুল বাশার জানান, ঈদের লস্বা ছুটির কারনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বেশী সংখ্যক যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। অন্যন্য সময়ের চেয়ে এখন দ্বিগুন যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। গত সাত দিনে এ চেকপোস্ট দিয়ে ৪০ হাজার যাত্রী ভারতে গেছেন। রোগী ও বয়স্ক যাত্রীদের জন্য অগ্রাধীকার দেয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন