শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

নামাজের প্রতি যত্মবান হই

মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ঈমানের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাজ। অন্যান্য ইবাদতের চেয়ে নামাজের কিছু ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। নামাজ ফরজ হয়েছে মেরাজের রাতে আল্লাহ পাকের আরশে। সে রাতে আল্লাহ পাক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছিলেন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসার পথে হযরত মূসা আ.-এর সঙ্গে দেখা হয়। তিনি ৫০ ওয়াক্তের চেয়ে কমিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেন। তাঁর পরামর্শে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর দরবারে ফিরে যান। আল্লাহ তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কমিয়ে দেন। আবারও দেখা হয় হযরত মূসা আ.-এর সঙ্গে। তিনি আরও কমিয়ে আনতে বলেন। এভাবে ৯ বার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে গিয়েছেন আর প্রতিবারই পাঁচ ওয়াক্ত করে কমানো হয়। অবশেষে ৪৫ ওয়াক্ত কমিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ করা হয়।

এরপর আল্লাহ পাক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন : আমার কাছে যখন কোনো বিষয়ের ফয়সালা হয়ে যায় তখন তা আর পরিবর্তন হয় না। অতএব, এ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিনিময়ে পঞ্চাশ ওয়াক্তেরই সওয়াব প্রদান করা হবে। -জামে তিরমিযী : ২২১।

নামাজের দ্বারা গোনাহ মাফ হয় : সহি বুখারিতে এসেছে, এক সাহাবি পরনারীকে চুম্বন করে ফেললেন। চুম্বনের পর সাহাবি অত্যন্ত অনুতপ্ত হন। তিনি পেরেশান হলেন, এত বড় গোনাহ করে ফেললাম, আমার কী উপায় হবে?
তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ঘটনার বিবরণ শোনালে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন আয়াত নাজিল করলেন : (রাসূলকে লক্ষ্য করে আল্লাহ পাকের নির্দেশ,) আপনি নামাজ আদায় করুন। দিনের দুই প্রান্তে ও রাতের কিছু সময়ে। নিশ্চয়ই নেক আমল গোনাহকে মিটিয়ে দেয়। -সূরা হুদ (১১) : ১১৪।

নেক আমল বেশি বেশি করতে হবে, নামাজ আদায় করতে হবে। এর দ্বারাই আল্লাহ তায়ালা গোনাহ মাফ করে দেবেন। সাহাবি প্রশ্ন করলেন, ‘নামাজ পড়লে এবং নেক কাজ করলে গোনাহ মাফ হয়ে যাবে’ এটা কি শুধু আমার জন্যই? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না, এ বিধান উম্মতের সব সদস্যের জন্য। -সহি বুখারী : ৪৬৮৭।

কেউ যদি তাওবার নিয়ত ছাড়াই নামাজ আদায় করে, তাহলে এর দ্বারা সগিরা গোনাহ মাফ হয়ে যায়। প্রতি ফরজ নামাজের পর তিনবার ইস্তেগফার পড়া সুন্নত। তো যে ব্যক্তি ফরজ নামাজের পর তাওবার নিয়তে তিনবার আসতাগফিরুল্লাহ পড়বে তার কবিরা গোনাহও আল্লাহ মাফ করে দেবেন।

সহি বুখারির অপর হাদিসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যদি তোমাদের কারও বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে। সে ওই নদীতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবায়ে কেরাম বললেন, না, তার দেহে কোনো ময়লা থাকতে পারে না।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের দৃষ্টান্ত এমনই। আল্লাহ পাক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সুবাদে সকল গোনাহ মাফ করে দেন। - সহি বুখারী : ৫২৮।

আফসোসের বিষয় হলো, আমরা আজ নামাজের প্রতি বড়ই উদাসীন। ফরজ নামাজ ও জামাতের প্রতি আমাদের সীমাহীন উদাসীনতা। আর অন্যান্য সুন্নত ও নফলের অবস্থা তো আরও করুণ। হাদিস শরীফে নফল নামাজের যেসব ফজিলত ও সওয়াবের কথা এসেছে তা আমাদের জানা আছে। তারপরও কেন নফলের প্রতি যত্মবান হই না। আমরা যদি এ নফল আদায় না করি, তাহলে কারা আদায় করবে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Mostafa Foraji ২১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:২৮ এএম says : 0
Nice
Total Reply(0)
Iftekhar Azom ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৭ এএম says : 0
নামাজ হল আল্লাহর সাথে সাক্ষাৎ। মহান প্রভূ আল্লাহর সাথে বান্দাহর যে গভীর সম্পর্ক তার প্রকাশ হয় নামাজ দ্বারা। মহান আল্লাহর কর্তৃত্বের কাছে প্রকাশ্যে মাথা নত করার নাম নামাজ। এই নামাজে দলবদ্ধ বা একাকী আল্লাহর সামনে কিয়াম, রুকু, সিজদা করে একমাত্র আল্লাহর স্থায়ী গোলামীর চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়।
Total Reply(0)
Foysal Ahmed ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৭ এএম says : 0
অন্য কোন এবাদত এভাবে দেহ, মনের বাস্তব অবনতি হয় না। নামাজ হল বাস্তবভাবে একেবারে আল্লাহর সন্নিকটে পৌছে যাওয়া। নামাজ হল এবাদতের মূল ভিত্তি।
Total Reply(0)
Golam Rabbani ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৮ এএম says : 0
মহান আল্লাহর ঘোষণা হল ওয়ামা খালাকতুল জিন্না ওয়াল ইনসা ইল্লা লিইয়্যাবুদু। অর্থাৎ আমি জি¦ন ও মানুষ জাতিকে সৃষ্টি করেছি কেবলমাত্র আমার এবাদত করার জন্য (আল জাযিয়া-৫৬)। প্রভু আল্লাহর সানে বান্দার যে সম্পর্ক তার মাধ্যম হল নামাজ। নামাজে বান্দাহ তার প্রভুর সাথে কথা বলে। মহান প্রভু আল্লাহর সাথে বান্দার সাক্ষাতের নাম হল নামায।
Total Reply(0)
Delowar Hossain ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৮ এএম says : 0
সালাত এমন একটি সুনির্দিষ্ট ইবাদত যা নির্দিষ্ট সময়ে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে একাগ্রচিত্তে আল্লাহর সামনে দাড়িয়ে তারই কালাম পাঠ করে আদায় করা হয়। রাসূলের করীম (সা:) বলেন-সালাত হচ্ছে মুমিনের মিরাজ।
Total Reply(0)
Saiful Islam ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৯ এএম says : 0
নামাজীদের দ্বারা গঠিত সমাজ বা রাষ্ট্রে কোন অশান্তি থাকে না। সে খানে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হতে থাকে অনবরত। এটাই দুনিয়ার জান্নাত। পরকালের জান্নাত হবে তাদের দ্বারাই। হাশরের প্রথম যে প্রশ্ন হবে তা হলো এই নামাজ। যারা নামাজের পরীক্ষায় পাশ করবে তাদের জান্নাত অবধারিত হয়ে যাবে।
Total Reply(0)
Lema Akter ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৩:৪৯ এএম says : 0
রাসূল (সা:) আরো বলেন- তুমি যখন সালাতে দাড়াও তখন ভাববে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো আর আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। তুমি আল্লাহকে না দেখলেও আল্লাহ তোমাকে দেখছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন