মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গরিবের খাবার ধনীর পেটে

চামড়ার দরে বিপর্যয়ের দায় কার?

স্টালিন সরকার | প্রকাশের সময় : ২১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের মধ্যে উদ্বেগের শেষ নেই। এডিস মশায় ভয়ে সবাই ভীত-সন্ত্রস্ত। সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু। এডিস মশা নিধনে ঢাকার দুই মেয়রের কর্মযোগ্যতায় মানুষের মধ্যে অসন্তোষ থাকলেও সরকারের দায়িত্বশীল মহল ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিশেষ করে বেসরকারি হাসপাতালে রোগীদের পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোয় সর্বাত্মক চিকিৎসাসেবা দেয়ার চেষ্টা দৃশ্যমান।

সেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমেনি; কিন্তু এসিড মশার ভীতিকে ছাপিয়ে গেছে পশুর চামড়ার দর বিপর্যয়ের নজিরবিহীন কান্ডের আওয়াজ। যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য গরু, মহিষ, ছাগল বা হালাল পশু কোরবানি করেন তারা সেই পশুর চামড়া বিক্রির টাকা স্থানীয় কওমি মাদরাসার গরিব ছাত্র, এতিম-মিসকিন, আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম বা হতদরিদ্রদের দেন। কোরবানির চামড়ার হকদার সুবিধাবঞ্চিত হতদরিদ্র মানুষ।

দরিদ্র-মাদরাসার এতিমদের টাকা ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের সিন্ডিকেটের কারসাজিতে হারিয়ে গেল। আড়তদার আর ট্যানারি মালিকদের রেষারেষি ও ষড়যন্ত্রে চামড়ার অর্থ হকদাররা পায়নি। বিপুল পরিমাণ চামড়া নষ্ট করা হয়েছে। এতে রাষ্ট্র বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন থেকে বঞ্চিত হলো। এগুলো দেখভালের দায়িত্ব যাদের, তারা কি চামড়ার দাম বেঁধে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন? নাকি অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করছেন?

বিশেষজ্ঞদের মতে, কোরবানির চামড়ার দরে বিপর্যয়ের পূর্বাভাস এবং বিকল্প প্রস্তুতির মাধ্যমে চামড়া বিক্রির পথ খোলা রাখা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল। কিন্তু তারা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন। যখন সিন্ডিকেটের কারসাজিতে হাজার হাজার চামড়া নষ্ট হয়ে যায় তখন মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে, এবার কাঁচা চামড়া রফতানি করা যাবে। ততক্ষণে যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। হাজার হাজার চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে, নদীতে এবং ময়লার ভাগাড়ে ফেলে দেয়া হয়েছে।

চামড়ার দরপতন নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে ১৮ আগস্ট সচিবালয়ে সরকার, আড়তদার, ট্যানারি মালিদের যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হলো তাতে পরস্পরের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে গেছে চামড়ার দরে ধস নামাতে আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের মধ্যে ছিল সিন্ডিকেট। কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ে নৈরাজ্যের জন্য বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা ও আড়তদাররা পরস্পরকে দোষারোপ করলেও এ দুই সংগঠনের নেতাদের একটি বক্তব্য অভিন্ন- কম দরে চামড়া কেনার কৌশল ছিল।

শেষ পর্যন্ত সেই কৌশল দ্ব›েদ্ব রূপ নেয়ায় দুই ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ‘সিন্ডিকেট’ ধরা পড়ে। দুই পক্ষই সচিবালয়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শিল্পমন্ত্রীর সামনেই বাদানুবাদ করেন। এতে একে অপরের ওপর দায় চাপানোর প্রয়াস পান। অতঃপর তারা দাবি করছেন, এ বছর টাকা না পাওয়াটাই কাঁচা চামড়ার দাম কমার অন্যতম কারণ।
আড়তদারদের অভিযোগ, ট্যানারি মালিকদের থেকে টাকা পাননি; আর ট্যানারি মালিকরা বলছেন ব্যাংক থেকে টাকা পাননি। তাহলে চামড়া কেনার জন্য দেয়া ৭শ’ কোটি টাকা কোথায় গেল?

অবশ্য মিডিয়ায় খবর বের হয়েছে, চামড়ার দর বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে মাঠে নেমেছে সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। চামড়া মাটিচাপা দেয়ার বিষয়গুলো তদন্ত শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও দমকল বাহিনী আলাদাভাবে তদন্তে নেমেছে। ব্যাংকগুলো খতিয়ে দেখবে তাদের দেয়া ঋণের অর্থ ট্যানারি শিল্পের মালিকরা সঠিকভাবে ব্যবহার করছেন কি না। কারণ ৭শ’ কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ দেয়ায় মাঠপর্যায়ে তারল্য সঙ্কট থাকার কথা নয়।

মূলত দেশের মোট চাহিদার ৬০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ হয় কোরবানির ঈদে। এ বছর কমপক্ষে এক কোটি ১৮ লাখ পশুর চামড়া কেনাবেচা হওয়ার কথা। এর মধ্যে গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৫ লাখ ৮২ হাজার এবং ছাগল-ভেড়া ৭২ লাখ। এ ছাড়া ছয় হাজার ৫৬৩টি অন্য পশু। পোস্তার ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিএইচএসএমএর হিসাব মতে, ৩০ শতাংশ চামড়া এ বছর নষ্ট হয়েছে। এর অর্ধেকই গরুর চামড়া।

টিভির সচিত্র প্রতিবেদনগুলোতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের রাস্তায় ফেলে রাখা চামড়া ক্রেন দিয়ে ট্রাকে উঠানো হচ্ছে। আরো কয়েকটি জেলায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া বিক্রি করতে না পেরে কেউ মাটিতে পুঁতে রেখেছেন, কেউ নদীতে ফেলে দিয়েছেন; কেউ রাস্তায় ফেলে দিয়ে চম্পট দেন।

এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দরে এমন ধস নেমেছে যে বিক্রির জন্য ক্রেতাই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অথচ অতীতে পড়া-মহল্লায় চামড়া সংগ্রহ নিয়ে লাঠালাঠি হতো। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের স্থানীয় নেতারাই মৌসুমি ব্যবসায়ী হিসেবে চামড়া ক্রয় করত। এবার লাখ টাকার কোরবানির গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ২০০-৪০০ টাকায়।

বিগত ৩১ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম দামে এবার চামড়া বিক্রি হয়। সরকার নির্ধারিত দামে দেশের কোথাও চামড়া ক্রয়-বিক্রয় হয়নি। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কোটি কোটি টাকার চামড়া নষ্ট করে ফেলা হয়। সচিবালয়ের বৈঠকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ বছর ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। ফলে চামড়া সংগ্রহের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ায় রফতানি আয় কমে যাবে। তবে শিল্পমন্ত্রীর দাবি, মাত্র ১০ হাজার চামড়া নষ্ট হয়েছে।

চামড়ার এই দর বিপর্যয়ে ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। তবে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতির। চামড়া এবং চামড়াজাত দ্রব্য রফতানি করে প্রতি বছর যে আয় হতো এবার তা কমে যাবে। এতে দেশ হারাবে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। দরপতনের কারণে চামড়া খাতে প্রায় সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকার রফতানি আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। বলা হয় চামড়া দেশের দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি আয়ের খাত।
২০২১ সাল নাগাদ এ খাতে ৫০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে ১০২ কোটি ডলার আয় করে, যা আগের বছরের চেয়ে ৬ শতাংশ কম। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চামড়া খাতে রপ্তানি আয় ছিল ১২৩ কোটি ডলারের বেশি।

এই চামড়ার দর বিপর্যয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হতদরিদ্র মানুষ। ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তথা কওমি মাদরাসায় পড়ুয়া এতিম ছাত্র, যাদের পিতামাতা নেই, লিল্লাহ বর্ডিংয়ে থেকে লেখাপড়া করেন তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

সরকারি এক হিসাবে বলা হয়েছে, সারা দেশে প্রায় ১৫ লাখ ছাত্রছাত্রী কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা করেন। তাদের বেশির ভাগই লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে থাকেন। এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৬ মাসের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশোনার খরচ আসে কোরবানির পশুর চামড়া আর জাকাতের অর্থ থেকে। কিন্তু এবার সিন্ডিকেট করে সেই চামড়ার অর্থ কোটিপতি ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের পেটে যাচ্ছে।

দেশে এর আগে চামড়া নিয়ে এত বড় বিপর্যয় হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ এ অবস্থার জন্য দায়ী। এর মধ্যে রয়েছে ট্যানারি মালিকদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এ খাত নিয়ে সরকারের পূর্বপ্রস্তুতির অভাব এবং শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতা। ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে শেষ পর্যন্ত কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেটাতে বাধা দিচ্ছে ট্যানারি মালিক সিন্ডিকেট। তাদের দাবি, এতে দেশের চামড়া শিল্প ধ্বংস হবে।

অনুসন্ধান করে দেখা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে সরকার চামড়া শিল্পকে শুধু দিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ, নগদ সহায়তা, রফতানিতে প্রণোদনা এবং কর অবকাশসহ নানা ধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছে ট্যানারি শিল্প মালিকদের। কিন্তু এরপরও এদের চাহিদার শেষ নেই। এবার তারা দেশের মানুষকে জিম্মি করে পানির দামে চামড়া হাতিয়ে নিচ্ছেন।

সচিবালয়ে চামড়া নিয়ে যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হলো সেখানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন থাকলেও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সিকে দেখা যায়নি। ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি অবশ্য কিছু আশার কথা শুনিয়েছেন।

মন্ত্রীদের কেউ কেউ যেন শুধুই অন্যের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে চাইছেন। শিল্পমন্ত্রী চামড়ার দর বিপর্যয়ের জন্য বিএনপির ওপর দায় চাপিয়েছেন। বলেছেন, বিএনপি চামড়া কিনে ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছে। গত ১৯ আগস্ট ১৪ দলীয় জোটের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন মন্ত্রীদের উদ্দেশে বলেছেন, জনগণের কাঁধে দোষ চাপানোর অভ্যাস মন্ত্রীদের বাদ দিতে হবে। বর্তমান সরকারের মন্ত্রীদের কারবার দাঁড়িয়েছে ‘ভাত দেয়ার মুরোদ নেই, কিল মারার গোসাই’-এর মতো।

নবম জাতীয় সংসদে এক অধিবেশনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ‘সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলা’ এক বক্তব্য দেয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতা দেন। প্রধানমন্ত্রী সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘রাজা মিয়ার মাথায় বল, দুই পক্ষই সাবধান হোন; কোন দিকের গোলে বল যায় বলা মুশকিল।’ জনমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, মানুষ বিক্ষুব্ধ-মর্মাহত হন এবং সরকার বিব্রত হতে পারে এমন দায়িত্বহীন কথাবার্তা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মুখে শোভনীয় নয়।

চামড়ার দর বিপর্যয় ঠেকাতে সরকার, আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন দাবি করেন, এক কোটি চমড়ার মধ্যে গরমের কারণে এ বছর ১০ হাজার পিস চামড়া নষ্ট হয়েছে। এ সময় সংবাদিক জানতে চান তাহলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ৩০ ট্রাক চামড়া ময়লায় ফেলে দেয়ার ঘটনা কী? মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি হয়তো রাজনৈতিক কারণে ওইসব চামড়া কিনে সরকারকে বিপদে ফেলতে ময়লায় ফেলে দিয়েছে।’ মন্ত্রীর এ ধরনের বক্তব্য কি দায়িত্বশীলতা নাকি সরকারকে বিব্রত করে?

দীর্ঘ ১১ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। ব্যাপক জনসমর্থন থাকার পরও নেতৃত্বের অদূরদর্শিতার কারণে বর্তমানে বিএনপি কার্যত মেরুদন্ডহীন। সরকারের হাতে এত মেকানিজম থাকার পরও মেরুদন্ডহীন বিএনপি পশুর চামড়া কিনে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে সরকারকে বিব্রত করল? আবার চট্টগ্রাম নগরের রাস্তায় ফেলে রাখা সেই চামড়া আওয়ামী লীগের মেয়র ট্রাক দিয়ে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে সরকারকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করল?

শুধু শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্বহীন কথাবার্তা নয়, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য ডেঙ্গু নিয়ে যে মন্তব্য করে গোটা জাতিকে আহত করেছেন। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় দেশের হাসপাতালগুলো যখন গলদঘর্ম, এসিড মশা নিধনে গোটা জাতি যখন ঐক্যবদ্ধ; তখন গোপালগঞ্জের এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য বললেন, ‘ডেঙ্গু এলিট শ্রেণির একটি মশা। এ মশা সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, কলকাতা শহরে দেখা যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত দেশ হতে যাচ্ছে, তাই এখন দেশে ডেঙ্গু (এডিস মশা) এসেছে।’

মন্ত্রীদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কথাবার্তা ১৮ আগস্ট কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের মুখেও শোনা গেল। হঠাৎ তিনি বিএনপির নেতা ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে ‘ইভিল জিনিয়াস’ অভিহিত করে বললেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একটা আদর্শিক শয়তান।’ ব্যারিস্টার মওদুদের মতো একজন সিনিয়র নেতাকে ‘শয়তান’ বলা কি মন্ত্রীর কাজ? সেই মন্ত্রী আবার পিএইচডি ধারী? এ ধরনের মানসিকতার পিএইচডি ধারী কি দেশ, আওয়ামী লীগ সরকার এবং মানুষের মঙ্গলে কাজে আসবে?

দায়িত্বশীল মন্ত্রীদের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের অভাবেই কার্যত চামড়ার দর বিপর্যয় নিয়ে তোলপাড় চলছে। কোরবানির চামড়ার হকদার কওমি মাদরাসার এতিম ছাত্র, জনসেবাকারী আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম, হতদরিদ্ররা বঞ্চিত হলেন। প্রকৃত হকদাররা বঞ্চিত হলেও চামড়ার দর নিয়ে সঙ্কট নিরসন হলে এ খাত থেকে কিছুটা হলেও বৈদেশিক মুদ্রা আসবে।

এ লক্ষ্যে ট্যানারি মালিক ও আড়তদারদের বিরোধ মেটানোর উদ্যোন নেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি। দীর্ঘ জীবনের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা থেকে তিনি সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নেন। তিনি বলেছেন, খোলামেলা আলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান পাবো। চামড়া শিল্প গার্মেন্টসের পর গুরুত্বপূর্ণ খাত। ভবিষ্যতে চামড়া শিল্প মেইন সেক্টর হিসেবে ডেভেলপ করার চেষ্টা হবে। একই সঙ্গে চলমান সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যতে আবার এমন অবস্থা না হয়, সে চেষ্টা করা হবে। তার এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হবে, এমন প্রত্যাশা সবার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Nizam Uddin ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৯ এএম says : 0
কাঁচামালের সহজলভ্যতার পাশাপাশি মূল্য সংযোজনের হিসেবে সবচেয়ে বেশি রফতানি আয়ের অন্যতম বড় উৎস চামড়া শিল্প। এ কথা শুধু কাগজে কলমেই। স্বার্থান্বেষী সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে হঠাৎ দরপতন হয়েছে এ শিল্পের।
Total Reply(0)
Tajul Islam ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫০ এএম says : 0
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোক্তাদের সমন্বয়হীনতার কারণে এ শিল্প প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি পণ্য হওয়া সত্তে¡ও সিন্ডিকেটের কারসাজিতে শিল্পটি বিপন্ন হতে চলেছে।
Total Reply(0)
Harunur Rashid ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫০ এএম says : 0
চামড়া শিল্পকে রক্ষা করতে হলে সরকারকে এখনই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
Total Reply(0)
Kamal Hasan ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫১ এএম says : 0
বন্ধ করতে হবে সিন্ডিকেটের কারসাজি। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে চামড়া শিল্পের ঐতিহ্য ফিরে আসবে। লাভবান হবে সকলেই। রাষ্ট্রের প্রচুর অর্থ আয় হবে। ভবিষ্যতেও আর কোন সমস্যায় পড়তে হবে না।
Total Reply(0)
Jahir Ahmed Jahir ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫২ এএম says : 0
এতিমের হক হিসেবে খ্যাত কোরবানীর চামড়ার দরপতনে কপাল পুড়েছে এতিম ও মৌসুমী ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়ীদের। অনেক স্থানে এতিখানা ও মসজিদে দানের চামড়াও বিক্রি হয়নি।
Total Reply(0)
Bahar Russell ২১ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫৩ এএম says : 0
thanks to the writer
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন