টাঙ্গাইলে মাদ্রাসা ছাত্রকে বালাৎকারের অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মোঃ হাফিজুল ইসলাম (৩০) টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থান মসজিদ দারুস সুন্নাহ এতিমখানা মাদ্রাসা শিক্ষক।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বেলটিয়া গ্রামের ময়দান আলীর ছেলে। গত মঙ্গলবার বিকালে ওই ছাত্রের বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গতকাল বুধবার গ্রেফতারকৃত হাফিজুল ইসলামকে আদালতে প্রেরণ করলে টাঙ্গাইলের সিনয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সদর আমলি আদালতের বিচারক অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মনিরা সুলতানা তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
এদিকে বুধবার বিকেলে আদালতে ভিকটিমরে জাবনবন্দি গ্রহণ করেন।
মামলার বিবরণ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো. শফিকুল ইসলাম তার ছেলেকে টাঙ্গাইল বেবীস্ট্যান্ড কেন্দ্রীয় গোরস্থান মসজিদ দারুস সুন্নাহ এতিমখানা মাদ্রাসার আবাসিকে রেখে লেখাপড়া করানোর জন্য ৮ মাস আগে ভর্তি করান। ছেলেটি মাদ্রাসা আবাসিকের ২য় তলার উত্তরপাশে কোনার ঘরে থাকত। রোজার মাসে ছেলেটিকে ২য় তলার কোনার সীট হইতে হুজুর তার সীটের কাছে নিয়া আসে। তারপর গত ২৩ মে থেকে বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রকে শিক্ষক মো. হাফিজুল ইসলাম জোড়পূর্বক বলাৎকার করে।
এসময় ছেলেটি হুজুরকে বাঁধা দিলে বা চিৎকার করিলে লেখাপড়ার নাম করে শারীরিক ভাবে মারধর করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। ছেলেটি মাঝে মধ্যেই সকাল থেকে মাদ্রাসায় থাকে কিন্তু রাত্রি হইলে হুজুরের ভয়ে পালিয়ে যায়। এইভাবে কয়েকবার পালানোর পর হুজুর ছেলেটির মাকে বলে “আপনার ছেলেকে মাদ্রাসায় রাখতে হলে লিখিত দিয়া রাখতে হবে”। তখনও ওই ছাত্রের পরিবার বুঝতে পারেনাই, কেন ছেলেটি বারবার মাদ্রাসা হইতে পালিয়ে বাড়িতে চলে আসে।
ছেলে চিৎকার চেঁচামেচি করার চেষ্টা করিলে ঐ শিক্ষক ছেলেটিকে হুমকি দিয়ে বলে, “যদি এই ব্যাপারে কাউকে এমনকি তোর বাবা-মাকে কিছু বলিস তাহলে তোকে খুন করে ফেলবো” বলে ভয়-ভীতি দেখাতো। পরে সে হুজুরের মারধর সহ্য করিতে না পেরে গ্রামের বাড়ী এলাসিন চলে যায়।
পবে তার বাবা-মা ছেলেকে বুঝিয়ে মাদ্রাসায় ফেরত দিয়া আসে।
গত ২৯ জুলাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে আবার সে মাদ্রাসা হতে পালিয়ে বাসায় চলে যায় এবং বাসায় গিয়ে তার মায়ের কাছে কান্নাকাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে সে তার মাকে বলে, মাদ্রাসার শিক্ষক মো. হাফিজুল ইসলাম হুজুর প্রায় রাতেই পায়ুপথে জোরপূর্বক বলাৎকার করে এবং খুন করার হুমকি দেয়। পরে ওই ছাত্রের বাবা গত মঙ্গলবার বিকেলে টাঙ্গাইল সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ প্রাথমিক তদন্ত শেষে তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুহা. মনির আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামীকে আদালতে প্রেরণ করা হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সভাপতি এডভোকেট মো. জিন্নাত আলী জিন্নাহ শিক্ষককে ভালো ছেলে দাবি করে বলেন, এটা তার বিরুদ্ধে একটি চক্রান্ত।
তিনি আরো বলেন, যদি সে এই অন্যায় কাজ শিক্ষক করে থাকে তাহলে তার শাস্তি দাবি করছি। আর যদি না করে তাহলে তার যেন কোন শাস্তি না হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন