মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

টেস্টে ‘টেস্টের’ সুযোগ দেখেন না সাকিব

কে হচ্ছে সাদমানের সঙ্গী?

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৮ এএম

ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস- এই সত্যটা বাংলাদেশের চাইতে আর কে-ই-বা ভালো বোঝে! তাইতো অনুশীলনে সোজা-উল্টো সবভাবেই ক্যাচ ধরার কৌশল রপ্ত করার চেষ্টায় সাকিবরা। গতকাল মিরপুরে -বিসিবি


 টেস্টে আফগানিস্তান নতুন দল, তাদের বিপক্ষে ম্যাচটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আওতায় পড়েনি। একমাত্র টেস্টে বিশ্রামে থাকায় তামিম ইকবালকেও পাচ্ছে না বাংলাদেশ। সপ্তাহখানেক বাকি থাকলেও এখনও একমাত্র টেস্টের স্কোয়াড ঘোষণা করেননি নির্বাচকরা। এরই মধ্যে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো, অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে নিয়ে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানের সামনে সভা সেরে ফেলেছেন দুই নির্বাচক। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু কিছু না বললেও হাবিবুল বাশার জানালেন স্কোয়াডের একটা রূপরেখাও তৈরি হয়ে গেছে। আগামী ৩০ বা ৩১ তারিখ তা ঘোষণা করা হবে। স্কোয়াডে অবশ্য বেশিরভাগ জায়গা নিয়েই কোন প্রশ্ন নেই। কেবল তামিম ইকবাল বিশ্রামে থাকায় ওপেনিংয়ে সাদমান ইসলামের সঙ্গী কে হবেন তা নিয়েই চলছে আলোচনা। হাতে থাকা কয়েকটি নাম নিয়ে দ্বিধা থাকায় দল ঘোষণায় দেরি হচ্ছে।

বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া তামিমকে বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সাকিব নিজেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট এবং আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে এরই মধ্যে ছুটিও নিয়েছেন তামিম।

বাঁহাতি এই ওপেনার না থাকায় নতুন উদ্বোধনী জুটি খুঁজতে হবে বাংলাদেশকে। তামিমের অনুপস্থিতি আর নতুন উদ্বোধনী জুটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সাকিব জানান, নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতিতে কে বা কারা সুযোগ পেতে পারে এমন একটা আলোচনা দলে সবসময়ই চলে, ‘যে জায়গাগুলো ফাঁকা হয় কিংবা ফাঁকা থাকে বা যে জায়গাগুলো নিয়ে আমরা কানসার্ন থাকি সেই জায়গাগুলো নিয়ে আমরা সব সময় আলাপ-আলোচনা করি। সবাই আলাপ-আলোচনা করার পর আমরা একটা সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছাই যে, এই খেলোয়াড় এই এই কারণে এই পজিশনে সুইটেবল হবে। তারপর আমরা আসলে নির্বাচন করি।’

তামিম না থাকায় নতুন কেউ সুযোগ পাবেন নিশ্চিত। এর বাইরে ¯্রফে নতুনদের সুযোগ দিতে কাউকে বসিয়ে রাখতে রাজি নন সাকিব, ‘জায়গা দেওয়া না দেওয়া বড় কথা না। প্রতিটি দল কিন্তু খেলতে নামে জেতার জন্য। দলগুলো যখন ম্যাচ খেলতে যায় তখন কিন্তু এটা চিন্তা করে না যে, আমরা খেলোয়াড় তৈরি করতে যাচ্ছি কিংবা নতুন খেলোয়াড় দেখার জন্য যাচ্ছি। সব কিছুই দেখবে কিন্তু দিনশেষে লক্ষ্য থাকে ম্যাচ জেতার। আমরাও ওই লক্ষ্য নিয়েই খেলব। এর জন্য যদি নতুন খেলোয়াড় নেওয়ার দরকার হয়, তাহলে নতুন খেলোয়াড় নেব। যদি দেখি অভিজ্ঞদের পারফর্ম করার সম্ভবনা আছে তাহলে ওরাই খেলবে।’

তবে বাশার কিংবা সাকিব কেউ স্পষ্ট করে কিছু না বললেও যে ওপেনিং নিয়েই দ্বিধাটা কাটছে না তা আঁচ পাওয়া গেছে বিসিবির অভ্যন্তরীন হিসেবে।

গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে অভিষেকের পর থেকে আস্থা যুগিয়ে টেস্টে ওপেনিং সংকটের সমাধানের ইঙ্গিত দেন সাদমান। অভিষেকেই খেলেন ১৯৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংস। তার ব্যাটে দেখা মিলেছিল থিতু ভাব। পরে নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে আর কোন ফিফটি পাননি। কিন্তু প্রতি ইনিংসেই বিরূপ পরিস্থিতিতে তামিমকে যোগ্য সঙ্গ দিয়ে আনেন ভালো সূচনা।

ওপেনিংয়ে একটা জায়গা আপাতত তারই। আরেকটি জায়গার জন্য আলোচনায় আছেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার, জহুরুল ইসলাম ও সাইফ হাসান। এরমধ্যে গত দুই সিরিজে লিটন ও সৌম্য খেলেছেন নিচের দিকে। নিউজিল্যান্ডে পাঁচে নেমে সৌম্য খেলেন ১৪৯ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস। ওই সিরিজে লিটন রান না পেলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিচে নেমে রান আছে তার।

এই দুজনের কাউকে ওপেন করতে পাঠিয়ে তাদের পজিশন ফের উলটপালট করা হবে কিনা তা আছে চিন্তায়। এদের বাইরে বাকি দুজনের একজন জহুরুল সর্বশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৩ সালে। কিন্তু সা¤প্রতিক সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ ফর্ম আর অভিজ্ঞতার বিচারে বিবেচনায় তিনি। বাকিজন একেবারেই তরুণ সাইফের এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয়নি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে এইচপি দল সব জায়গায় রান করে দলে ঢোকার দাবি জানাচ্ছেন তিনিও।

তবে সাইফের জন্য নেতিবাচক দিক আবার সাদমানের অনভিজ্ঞতা। দুই প্রান্তে দুজন আনকোরা ওপেনারকে খেলানোর ঝুঁকিও নিতে ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সোমবার নির্বাচক হাবিবুল এসব হিসেব নিকেশ করেই জানালেন দল ঘোষণায় বিলম্ব আসলে তা নিয়েই, ‘গত সিরিজ ও (সাদমান) ভালোই করেছে। কিন্তু ম্যাচের দিকে (৫ টেস্ট) যদি দেখেন এখনো সে তরুণ, মাত্র শুরু করেছে। অতটা অভিজ্ঞ নয়। যেহেতু তামিম সঙ্গে ছিল সেজন্য ওর উপর অতটা চাপ ছিল না। ওর সঙ্গে একদম ফ্রেশ কাউকে শুরু করাব কিনা সেটা চিন্তা আছে। আবার পুরনো কাউকে এনেও করানো যায় কারণ তরুণ একজন থাকল সাথে একজন অভিজ্ঞ থাকল। এইসব বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে গিয়ে স্কোয়াড দিতে দেরি হচ্ছে।’
দল ঘোষণার সম্ভাব্য তারিখ দিয়ে হাবিবুল জানালেন বাকি স্কোয়াড ঠিকই হয়ে আছে। দু’একটা জায়গা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সময় নিচ্ছেন তারা, ‘কোচ, অধিনায়কের সঙ্গে টেস্ট দল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা মোটামুটি একটা চিন্তা ভাবনা করেছি কেমন হতে পারে। আমরা একটু সময় নিচ্ছি যেহেতু দেশের মাটিতে খেলা। সম্ভবত ৩০ বা ৩১ তারিখে মূল স্কোয়াড দিতে পারব।’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন