বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিমানের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছুটবে হাইপারলুপ ট্রেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৯, ৪:১৩ পিএম

দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছতে মানুষ একের পর এক যান তৈরি করে চলেছে৷ এবার হাইপারলুপ রেল নেটওয়ার্ক নিমেষের মধ্যে অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে ও প্রায় নীরবে পরিবহণের ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পারে৷

হাইপারলুপ ট্রেন চুম্বকের উপর ছুটবে৷ তখন কয়েক মিনিটের মধ্যে ইউরোপের সব শহরে পৌঁছে যাওয়া যাবে৷ নেদারল্যান্ডসের ডেফট প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইপারলুপ বিভাগ এমন স্বপ্নই দেখছে৷ কিন্তু পুরানো এই বিশ্ববিদ্যালয় ভবনে কি সত্যি ইউরোপের ভবিষ্যতের পরিবহণ নেটওয়ার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হচ্ছে?

২৪ বছর বয়সি রিনেকে ফান নর্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ইউরোপীয় হাইপারলুপ নেটওয়ার্কের রূপরেখা তুলে ধরলেন৷ তিনি বলেন, ‘হাইপারলুপের কল্যাণে ইউরোপে আর কোনো সীমানা টের পাওয়া যাবে না৷ কোনো এক স্টেশনে গিয়ে হাইপারলুপে চড়ে বসলে সামান্য সময়ের মধ্যে ইউরোপের যে কোনো প্রান্তে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব হবে৷ বর্তমানে ট্রেনে কয়েক ঘণ্টা, অথবা বিমানে চড়ে যাতায়াত করতে হয়৷ বিমান দ্রুত হলেও তাতে প্রবেশ করতেই অনেক ক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে হয়৷ তাতে কোনো স্বাচ্ছন্দ্য নেই৷’

কিন্তু এটা কি নিছক অলীক স্বপ্ন? নাকি কোনো এক সময়ে ঘণ্টায় ১,২০০ কিলোমিটার গতিতে মানুষ সত্যি যাতায়াত করতে পারবে? ডেভেলপার টিমের প্রধান টিম ফ্লেসহুয়ার বলেন, ‘হাইপারলুপকে আমরা পরিবহণের পঞ্চম যান হিসেবে বর্ণনা করি৷ এ হলো পরিবহণের ভবিষ্যৎ৷ এটি অনেকটা ট্রেনের মতো, যা পাইপের মধ্যে ভরা থাকে৷ নল থেকে বাতাস বার করে নিয়ে প্রায় ভ্যাকুয়াম সৃষ্টি করা হয়৷ ফলে বাতাসের ধাক্কা প্রায় আর থাকে না৷ তাছাড়া ট্রেন চুম্বকের উপর ভাসতে থাকে৷ ফলে ফ্রিকশন বা ঘর্ষণও হয় না৷ তাই অত্যন্ত কম জ্বালানি ব্যবহার করেও বিশাল গতিতে চলা সম্ভব হয়৷’ কিন্তু কীভাবে ও কোথায় ভাসে সেই ট্রেন? ফ্লেসহুয়ার বলেন, ‘ট্রেনের নিচে খাকবে হলবাখ-অ্যারেস নামের অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বক৷ এর সুবিধা হলো চৌম্বক শক্তি নীচের দিকে পরিচালিত হয়৷ তাই যাত্রীরা উপরে বসে কিছুই টের পাবেন না৷’ এই হলবাখ-অ্যারে আসলে বিশেষভাবে সাজানো চুম্বকের সমষ্টি, যার ফলে সম্মিলিত চৌম্বক শক্তি আরও বেড়ে যায়৷ রেল লাইন ও ট্রেনের চুম্বক পরস্পরকে ঠেলা মারে৷ ফলে ট্রেনটি ভাসমান অবস্থায় থাকে৷ এক ইলেকট্রিক ইঞ্জিন ট্রেনটিকে রেলের উপর সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়৷

২০৫০ সালের মধ্যে ইউরোপীয় হাইপারলুপ নেটওয়ার্কের কাজ শেষ করা ডেফট বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমের লক্ষ্য৷ এ এক বিশাল কর্মযজ্ঞ৷ সেখানে একদল তরুণ-তরুণী চলতি বছরের মধ্যেই ক্যাপসুলের মিনিয়েচার বা ক্ষুদ্র সংস্করণ গড়ে তোলার কাজ করছেন৷

সবকিছু দেখেশুনে ডয়চে ভেলের রিপোর্টার হিসেবে কনার ডিলন বলেন, ‘ডেফট টিমের সামনে বিশাল কাজ পড়ে রয়েছে৷ ইউরোপ আদৌ এক হাইপারলুপ নেটওয়ার্ক পাবে কিনা, কেউ তা জানে না৷ সেটা সম্ভব হলে ইউরোপের মানুষ আরও দ্রুত, আরও শান্ত পরিবেশে ভ্রমণ করতে পারবেন৷’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন