মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বেলজিয়ামে চেতনা নাশক ছাড়া পশু কুরবানি নিষিদ্ধ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৪৭ পিএম

বেলজিয়ামের ওয়ালোনিয়া অঞ্চলে আগামী রোববার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে অচেতন না করে পশু কুরবানি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। এর আগে দেশটির ফ্ল্যান্ডার্স অঞ্চলেও এ বছরের প্রথম দিন থেকে এ আইন প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে অনেক মুসলিম ও ইহুদি মনে করছেন, তাদের ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী সেখানে কুরবানি বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে।

স্থানীয় ইহুদিদের প্রতিবাদের মুখে ডাচ ভাষাভাষী ফ্ল্যান্ডার্স অঞ্চলে নেয়া সিদ্ধান্তটি এরই মধ্যে গড়িয়েছে ইউরোপীয়ান কোর্ট অফ জাস্টিসে (ইসিজে)। বেলজিয়ামের সাংবিধানিক আদালত বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য ইসিজের শরণাপন্ন হয়েছে।

শুনানি শেষে সিদ্ধান্ত হতে সর্বোচ্চ দুই বছর লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ তবে সিদ্ধান্ত যেদিকেই যাক, তা ইউরোপের অন্য দেশগুলোর জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে সাধারণভাবে পশু হত্যা করতে হলে তাকে আগে ‘অ্যানেস্থেসিয়া' দিতে হবে৷ তবে ধর্মীয় কারণে জার্মানিসহ বেশিরভাগ দেশই এর ব্যতিক্রমের সুযোগ রেখেছে৷ নরওয়ে, আইসল্যান্ড, স্লোভেনিয়া, ডেনমার্ক ও সুইডেন বিষয়টি আগেই নিষিদ্ধ করেছে৷ এবার বেলজিয়াম সেখানে যুক্ত হলো৷

জার্মানিতে ইহুদিদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিল বিষয়টির প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ তাদের বক্তব্য এমন আইন ধর্ম পালনের স্বাধীনতা খর্ব করছে৷ ‘অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহার করার নীতিমালা যা এবার ওয়ালোনিয়াতেও কার্যকর হতে যাচ্ছে, এসবই হলো ইউরোপে ধর্মের স্বাধীনতা খর্ব করার পায়তারা,’ জার্মানির বার্তা সংস্থা ডিপিএকে বলেন কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ইয়োসেফ শুস্টার৷ শুস্টার আশা করেন যে ইসিজে বিষয়টি ঠিকমত বিবেচনা করবে এবং আইনটি বাতিল করবে৷

তবে বিষয়টির বিরোধিতা করেন প্রাণি অধিকার সংরক্ষণকারীরা৷ বেলজিয়ামের প্রাণি অধিকার সুরক্ষা নিয়ে কাজ করে এমন সংগঠন গায়া৷ এর প্রধান মিখেল ফানডেনবোশ বলেন, ‘আমরা কোনো ধর্মীয় রীতির বিরোধী নই৷ শুধু বলছি, কুরবানির আগে অচেতন করে নিতে৷’

মুসলিমদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাবিভক্তি আছে৷ নিউইয়র্কভিত্তিক ভাইস নিউজের এক খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের দুই প্রধান হালাল সনদপ্রদানকারী প্লাটফর্ম হালাল ফুড অথরিটি ও হালাল মনিটরিং কমিটি ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছে৷ হালাল ফুড অথরিটি বলছে, অচেতন করার পর যদি প্রাণি জীবিত থাকে, তাহলে এই কুরবানিতে কোনো সমস্যা নেই৷ কিন্তু হালাল মনিটরিং কমিটি কোনোভাবেই অচেতন করার পক্ষে নয়৷

জার্মানির ফেডারেল নিউট্রিশন সেন্টারের মতে, জীবিবজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে, ‘আগে অচেতন করে নিলে প্রাণীর মৃত্যুভয় কমে যায় এবং রক্তপাতের সময় ব্যথা কম লাগে৷’

সমালোচনাকারীরা আরো বলছেন, বেলজিয়ামে এ সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে দেশটির রাজনীতিতে অতিডানপন্থি ফ্লেমিশ জাতীয়তাবাদীদের বাড়তে থাকা প্রভাব৷ তারা অভিবাসনবিরোধী৷ অতিডানপন্থি৷ গেল নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৬% ভোট পেয়ে বেলজিয়ামের সংসদে ২৫টি আসন দখল করেছে দক্ষিণপন্থি নিউ ফ্লেমিশ অ্যালায়েন্স৷ রাজনীতিতে তাই এদের প্রভাবও বেড়েছে৷ সূত্র: ডয়েচ ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন