শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চীনা মধ্যস্থতায় ফের বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার

চীন গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে : রাষ্ট্রদূত লি জিমিং

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আদুল মোমেনের সাথে গতকাল ঢাকায় চীনের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন


চলমান রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আবারও মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ। এ বৈঠকের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে থাকবে চীন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা ইস্যুর সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে ঢাকায় নিযুক্ত কূটনীতিকদের ব্রিফ করার পর সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বিকেল ৪টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ব্রিফিং শুরু হয়।
এদিকে, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নবনিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। লি জিমিং বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কটের টেকসই সমাধানের উপায়সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে ড. মোমেন বলেন, বৈঠকের দিন-তারিখ ঠিক হয়নি। চীনের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা মিয়ানমারের সঙ্গে আলাপ করে আমাদের জানাবেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীন বলেছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে বাংলাদেশের পাশে আছে। মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ উভয় দেশই আমাদের বন্ধু। এ সমস্যা দূর করতে একযোগে কাজ করব। চীনের রাষ্ট্রদূত আমার সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনায় প্রয়োজন হলে চীনকে সঙ্গে রাখেন।
এর আগে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ঢাকায় অবস্থানরত বিদেশি রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার ও মিশন প্রধানসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনকে আরও আগ্রাসী ও বেশি বেশি উদ্যোগ নেওয়ার আহŸান জনান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, আমরা যা যা করার করে যাব, করছি। কিন্তু আপনারা যারা গেøাবাল লিডার আছেন, আপনাদেরও দায়-দায়িত্ব আছে। আমরা অ্যাপিল করেছি, আপনারা (আন্তর্জাতিক বিশ্ব) এই সমস্যা সমাধানে আরও অ্যাগ্রেসিভ, আরও বেশি করে উদ্যোগ নেবেন। কেননা, এটা শুধু আমাদের সমস্যা না, এটা সবার সমস্যা। রাষ্ট্রদূতদের উদ্দেশ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা আরও সক্রিয় উদ্যোগ নেবেন, যেন মিয়ানমারকে তাদের স্বজাতিকে নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়।
ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা এখনো প্রত্যাবাসনের জন্য প্রস্তুত। কিন্তু লোকগুলোকে সেখানে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে হবে মিয়ানমারকে। এছাড়া সেখানে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও চলাফেরার স্বাধীনতা বিষয়েও মিয়ানমারকে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
কূটনীতিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ঢাকায় যত কূটনীতিক আছেন এবং জাতিসংঘের এজেন্সিতে যারা কাজ করেন তাদেরকে আজ জানিয়েছি, মিয়ানমার গত ২২ আগস্ট একটি প্রেসরিলিজ দিয়ে আমাদের ওপর বেøইম করেছে। বলেছে, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে ফেইল করেছে। সে প্রেক্ষিতে আজকে আমরা আন্তর্জাতিক বিশ্বকে বললাম, আমাদের (বাংলাদেশের) যা যা করার আমরা সব করেছি। দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তি মতে, মিয়ানমারের দায়িত্ব ছিল রোহিঙ্গাদের মাঝে আস্থা বা বিশ্বাসের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা, যাতে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরে যায়। কিন্তু মিয়ানমার সেই আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এখানে আমাদের দায়িত্ব ছিল লজিস্টিক সাপোর্ট জোগাড় করা, যা আমরা শতভাগ করেছি।
তিনি বলেন, মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের জন্য ৩ হাজার ৪৫০ জনের তালিকা আমাদের দিয়েছিল আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেই তালিকা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থাকে দিয়ে দিয়েছি, যাতে রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যাবে কি না সেটা তারা জানতে পারে। এবং সেখানে মিয়ানমারের প্রতিনিধি ও চীনের প্রতিনিধি পুরো প্রক্রিয়ায় জড়িত ছিল।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার বলছে যে, তারা রাখাইনে ইতিবাচক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। যদি করে থাকে, তাদের লোক তাদেরকে বিশ্বাস করে না, এই যে ট্রাস্ট ডেফিসিয়েট, এখানে কাজ করতে হবে। সেজন্য মিয়ানমারকে আমরা আবার বলেছি যে আস্থা বা মিয়ানমারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য দুনিয়ার যত মিডিয়া আছে বা আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় কিংবা জাতিসংঘের লোকজন কিংবা অন্য দেশ-বিদেশের লোককে রাখাইনে নিয়ে তোমরা (মিয়ানমার) দেখাও যে কী করেছ। আরও বলেছি, রোহিঙ্গা শিবিরের যে সব নেতারা (মাঝি) আছে তাদের নিয়ে রাখাইন ঘুরিয়ে দেখানো হোক যে সেখানে মিয়ানমার কী করেছে।
‘মিয়ানমার রাখাইনে কী করেছে তা অন্যদের নিয়ে দেখায় না কেন?- এমন প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের যথেষ্ঠ চিন্তা আছে। কেননা এক সময় তারা নিপীড়িত হয়েছিল, তারা নিহত হয়েছিল। এ জন্য রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা এবং চলাচলের স্বাধীনতা চায়। মিয়ানমার আমাদেরকে একাধিকবার বলেছে যে, রাখাইনে রোহিঙ্গারা নিরাপদে এবং স্বাধীনভাবে চলতে পারবে। যদি তাই হয় তবে মিয়ানমার অন্যদের নিয়ে দেখায় না কেন? একটি দলকে নিয়ে দেখায় না কেন? আমরা এগুলোই আজকে আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে জানিয়েছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পররাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Mohammed Kowaj Ali khan ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ২:১২ এএম says : 0
খোনি বারমা। এতোদিনে জুতাদি বাইরাইয়া শেষ করার দরকার ছিলো। চীন ওরা অসম্ভব অসভ্য । আর ভোট চুন্নি নমরুদ ফেরাউনের চেয়ে নিকৃস্ট। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
ash ৩০ আগস্ট, ২০১৯, ৪:৫৬ এএম says : 0
ROHIGGADER NAGORIKOTTO SARA PATHANO JABE NA, PATHANO WCHITH O NOY, PROJONE UK, USA KE NIE SHADHIN RAKHAIN GORAR CHESHTHA KORA WCHITH, OTAI HOBE PARMANENT PEACEFULL PONTHA
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন