প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে দুধকুমার নদীতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন। বারো দিন ধরে এই কর্মযজ্ঞ চললেও স্থানীয় সিন্ডিকেটের যোগসাজসের ফলে বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। এতে ভ‚মিধ্বস ও ভাঙন বিপর্যয়ে রয়েছে ১২০টি পরিবার।
জানা যায়, সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বাজারের পাশে নুরানী পাড়ায় দুধকুমার নদীতে ড্রেজার বসিয়ে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। বন্যার পর প্রমত্ত ব্রহ্মপুত্র নদের মুখে বালু পড়ায় যাত্রাপুর বাজারে প্রবেশের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এখন যাত্রাপুর বাজারের সাথে যোগাযোগের একমাত্র নৌপথ হল দুধকুমর নদী। শীর্ণকায় দুধকুমার নদী দিয়ে পাশর্^বর্তী নাগেশ^রী-উলিপুর-রৌমারী-চিলমারী ও রাজিবপুর উপজেলার তিন শতাধিক চরের মানুষ এই পথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ এই ভাঙন কবলিত এলাকায় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় আতঙ্কিত হয়ে পরেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। ২০১৮ সালে এই নুরানী ও ফারাজী পাড়া এলাকায় ভাঙন ঠেকাতে দুধকুমার নদীতে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে জিও ব্যাগ ও পাইলিং এর কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই নদীতে ও একই স্থানে ড্রেজার বসিয়ে গত ২১ আগস্ট থেকে বালু উত্তোলনের উদ্যোগ নেয় সিন্ডিকেটের লোকজন। ওই দিনই জেলা প্রশাসকসহ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবকে লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়।
প্রশাসনের নির্দেশে সেদিন ড্রেজার মেশিনসহ সমস্ত মালামাল সরিয়ে নেয়ার কথা বললেও উপজেলা পরিষদের নাজির শফিকুল ইসলামের হুমকিতে সরানো সম্ভব হয়নি। বিষয়টি সংবাদকর্মীদের নজরে আসলে গত সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় সারারাত ধরে মেশিনটি চলেছে। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে দেয়া হলেও নেয়া হয়নি কোন উদ্যেগ।
এ ব্যাপারে যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার জানান, নদী তীরে ড্রেজার বসানোর পর গ্রামবাসীর প্রতিবাদের মুখে মেশিন সরানো হয়েছে। আবার তারা নদীর অপর পাড়ে মেশিন বসিয়ে বালু তুলছে। এটিই এখন মূল নদী। পাইপ বসানোয় নৌকা চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াছমীন সন্দিহান প্রকাশ করে বলেন, আপনি বলছেন বালু তুলছে। কিন্তু আমাদের লোক বলছে মেশিন সরানো হয়েছে। এখন কার কথা বিশ^াস করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন