মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

স্টপ দ্য ক্যু বিক্ষোভে উত্তাল ব্রিটেন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পার্লামেন্ট স্থগিত করার প্রতিবাদে ব্রিটেনজুড়ে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর এই প্রচেষ্টাকে ‘অভ্যুত্থান’ হিসেবে অভিহিত করে সেøাগান দিয়েছেন ‘স্টপ দ্য ক্যু’। শনিবার দুপুরে এমন বিক্ষোভে যেন মানুষের ঢল নেমেছিল মধ্য লন্ডনে। আয়োজনকারীরা বলছেন, এতে যোগ দিয়েছিলেন প্রায় এক লাখ মানুষ। এ সময় তাদের হাতে ছিল নানা রকম সেøাগান সম্বলিত প্লাকার্ড। সরকারের হৃদপিন্ড বলে পরিচিত হোয়াইট হলের দিকে নেমেছিল জনতার ঢল। তারা সমবেত হন ডাউনিং স্ট্রিটে। এ সময় তারা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বিরোধী সেøাগান দিতে থাকেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের প্রভাবশালী অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। এ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী জনসন ঘোষণা দেন তিনি এই শরতে ৫ সপ্তাহের জন্য পার্লামেন্ট স্থগিত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন। তার এ পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছেন রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। তবে সমালোচকরা বিষয়টিকে ভালভাবে দেখেননি। তার এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যেমন অবস্থান নিয়েছে বিরোধী লেবার পার্টি, ঠিক তেমনি বেঁকে বসেছেন নিজের ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ দলের অনেক এমপি। তারা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী জনসন চুক্তিবিহিন ব্রেক্সিট সম্পাদন করবেন। তার এই প্রচেষ্টা যাতে বিরোধী এমপিরা আটকাতে না পারেন সে জন্য তিনি পার্লামেন্ট স্থগিত করেছেন। তবে জনসন বলছেন, তাদের এমন দাবি পুরোপুরি অসত্য। রয়টার্স জানায়, পার্লামেন্ট স্থগিত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ওয়েস্টমিনস্টারে। শনিবারের বিক্ষোভে তাই যোগ দিয়েছিলেন বিরোধী দলের রাজনীতিকরাও। এর মধ্যে ছিলেন ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডায়ানে অ্যাবোট এবং ছায়া চ্যান্সেলর জন ম্যাকডোনেল। হোয়াইট হলের সমাবেশে তারা বক্তব্য রেখেছেন। সেখানে ম্যাকডোনেল বলেছেন, আমাদের লড়াই হলো গণতন্ত্রকে রক্ষা করা। তিনি আরো বলেন, প‚র্ববর্তী প্রজন্মগুলো লড়াই করে গেছেন। তারা বিরাট ত্যাগ স্বীকার করেছেন। অনেকে পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রের লড়াইয়ে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন। ফলে নীতি ও দেশের ভবিষ্যতের বিষয়ে তাদেরও কথা বলার আছে। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, বরিস জনসন বিষয়টি পার্লামেন্ট বনাম জনগণ নয়। এ লড়াইটা হলো আপনি বনাম জনগণ। পরে বিক্ষোভকারীরা ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজে যান চলাচল আটকে দেন। এ সময় তারা সেøাগান দিতে থাকেন এই বলে যে, আপনি যদি আমাদের পার্লামেন্ট অচল করে দেন। আমরা আপনাদের ব্রিজ অচল করে দেবো। বিক্ষোভকারীদের অন্য একটি গ্রæপ তাফালগড় স্কয়ারের কাছে ও ওয়াটারলু ব্রিজ অবরুদ্ধ করে দেয়। এসব বিক্ষোভ থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের গ্রিন পার্টির সহ-নেতা সিয়ান বেরি বলেছেন, যাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মধ্যে লন্ডন এসেম্বলির একজন সদস্য রয়েছেন। তিনি হলেন ক্যারোলাইন রাসেল। ওদিকে লন্ডন থেকে দ‚রে বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। আয়োজকরা বলেছেন, ব্রিস্টলে বিক্ষোভ করেছেন প্রায় ৫ হাজার মানুষ। আর ম্যানচেস্টারে সমবেত হয়েছিলেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভ হয়েছে মধ্য গøাসগোর জর্জ স্কয়ারে। সেখানে বিরোধী নেতা জেরেমি করবিন সহ সরকারি বিভিন্ন নেতার বক্তব্য শুনতে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হন। সেখানে জেরেমি করবিন বলেন, এখানে আপনারা সবাই সমবেত হয়েছেন বরিস জনসনকে এটা বলতে যে, এটা আমাদের পার্লামেন্ট। এর বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। তাই আপনাদের সমর্থন দিতে এখানে আসতে পেরে আমি গর্বিত। চুক্তিবিহিন ব্রেক্সিটের জন্য কোনো পথ খোলা নেই। এমনটা করতে গেলে আমরা আপনাকে থামিয়ে দেবো। জনগণকে তাদের অধিকার দিন। তাদের ভবিষ্যত কি হবে এটা তাদেরকে নির্ধারণ করতে দিন। শনিবার বিক্ষোভে যোগ দেয়ার আগে জেরেমি করবিন সতর্কতা দেন। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে যখন হাউজ অব কমন্সের অধিবেশন বসছে তখন সেটাই হচ্ছে চুক্তিবিহিন ব্রেক্সিট সম্পাদন বন্ধের জন্য সর্বশেষ সুযোগ। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন