বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আদালতে সুমনের স্বীকারোক্তি

মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে পাঠাও চালক খুন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারে পাঠাও চালক মিলনকে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে নুরুজ্জামান ওরফে অপু ওরফে নুর উদ্দিন ওরফে সুমন (৩২)। গতকাল সোমবার বিকেলে ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহ’র আদালত এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরবর্তীতে সুমনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত রোববার রাত ৩টার দিকে শাহজাহানপুর থানাধীন গুলবাগ এলাকা থেকে নূর উদ্দিন ওরফে সুমনকে গ্রেফতার করে ডিবির মতিঝিল জোনাল টিমের একটি দল। এ সময় তার কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গতকাল দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন। এ সময় তিনি অ্যাপসের পরিবর্তে চুক্তিতে মোটরসাইকেল চালাতে নিষেধ করার পাশাপাশি রাইড শেয়ারিং চালকদের সচেতন হতে আহবান জানান।

গত ২৬ আগস্ট রাত সাড়ে ৩টার দিকে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের মাঝামাঝি স্থানে পাঠাও চালক মিলনকে হত্যা করে তার মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয় ছিনতাইকারী সুমন। তার কাছ থেকে নিহত মিলনের ব্যবহৃত একটি স্যামসাং জে-৫ মোবাইল সেট, দুটি হেলমেট ও ছিনতাই হওয়া ডায়াং ১৫০ সিসি মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়েছে।

আব্দুল বাতেন বলেন, অ্যাপসের মাধ্যম ছাড়া চুক্তিতে মোটরসাইকেল ভাড়া করে যাতায়াত করলে বিপদ আসতে পারে। ছিনতাইকারী যাত্রী সেজে মোটরসাইকেলে উঠে চালককে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিতে পারে। এ জন্য অ্যাপসভিত্তিক মোটরসাইকেল চালকদের সচেতন হতে হবে।

তিনি বলেন, গত ২৬ আগস্ট রাত আনুমানিক ৩টার দিকে পাঠাও চালক মিলন এক যাত্রীকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় নামিয়ে দেন। যাত্রী নামানো শেষে মালিবাগ-মৌচাক ফ্লাইওভারের উঠতে আবুল হোটেলের ঢালে নূর উদ্দিন ভিকটিম মিলনকে সিগন্যাল দিয়ে থামিয়ে গুলিস্তান যাবে বলে ৫০ টাকায় ভাড়া ঠিক করেন। ফ্লাইওভারের সবচেয়ে উপরের সড়কে পৌঁছালে মোটরসাইকেল থামাতে বলে নূর উদ্দিন। মোটরসাইকেল থামানোর পর নূর উদ্দিন মিলনকে বলে সে মোটরসাইকেল চালাবে। এতে মিলন রাজি না হয়ে বলে, ‘আপনাকে আমি কেন চালাতে দিব?’ এভাবে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধ্বস্তা-ধ্বস্তি হয়। সুযোগ বুঝে নূর উদ্দিন এন্টি কাটার দিয়ে মিলনের গলায় উপর্যপুরি আঘাত করে ফ্লাইওভারে রেখে মোটরসাইকেল ও মোবাইল নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় নহত মিলনের স্ত্রী শিল্পী বেগম শাহজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করলে ঘটনাটি তদন্তে নামে ডিএমপি’র গোয়েন্দা বিভাগ।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর ঘটনাস্থলে কোন সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ছিল না, কেউ ঘটনা দেখেনি, এমনকি ঘটনাটি রাতের নির্জনে হওয়ায় এমন ক্লুলেস ঘটনায় অপরাধীকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা খুবই কঠিন ছিল। পরে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাতে শাহজাহানপুর থানাধীন গুলবাগ এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।

নগরবাসী ও অ্যাপস ভিত্তিক মোটরসাইকেল চালকদের আহবান জানিয়ে আব্দুল বাতেন বলেন, অ্যাপসের মাধ্যমে যাত্রী পরিবহন নিরাপদ। তবে চুক্তিতে না যেয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে রাইড শেয়ার করা উত্তম। সেজন্য সকল নগরবাসীকে সচেতন হয়ে পথ চলতে হবে।

আদালত সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মতিঝিল জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম সুমনকে আদালতে হাজির করেন। এরপর আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় ঢাকা মহানগর হাকিম বাকী বিল্লাহর আদালত তা রেকর্ড করেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন