শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জড়িতদের গ্রেফতারে একাধিক টিম মাঠে

সাইন্সল্যাব মোড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

রাজধানীর পল্টন-মালিবাগসহ কয়েকটি স্থানে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল হামলা ও বোমা রাখার ঘটনায় করা মামলাগুলো তদন্তে একটি বিশেষায়িত কমিটি করেছে ডিএমপি। গত রোববার ডিএমপি কমিশনারের পক্ষে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) শেখ নাজমুল আলম স্বাক্ষরিত একটি তদন্ত সহায়ক কমিটি গঠনের আদেশ জারি করা হয়। এই অফিস আদেশের পর কমিটি গঠন করা হলো। আদেশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি পুলিশের ওপর হামলার তদন্ত কাজে সহায়তার নিমিত্তে ১ সেপ্টেম্বর থেকে কমিটি গঠন ও কাজ শুরু করবে।

অন্যদিকে গত ৩১ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর রোডের সাইন্সল্যাব মোড়ে পুলিশকে লক্ষ্য ককটেল বিস্ফোরণ ও ২ পুলিশ আহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবিসহ বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাটি তদন্তে কাজ করছে।

নব্য জেএমবির নামে জামায়াত-শিবিরের লোকজনই পুলিশকে টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম। সায়েন্সল্যাব এলাকায় পুলিশের ওপর চালানো হামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিককের করা এক প্রশ্নের জবাবে সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে তিনি আরও বলেন, গত কয়েক মাসে চার-পাঁচটি ঘটনার বাইরে আগের সব সন্ত্রাসী ঘটনার রহস্য উদঘাটন এবং অধিকাংশ মামলার চার্জশিট হয়েছে। এছাড়া কিছু কিছু মামলার বিচার হয়েছে, কিছু বিচারাধীন রয়েছে। সে কারণে পুলিশের প্রতি তাদের প্রচন্ড একটা ক্ষোভ আছে।

ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, কমিটির সভাপতি করা হয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুল ইসলামকে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর রোডের সাইন্সল্যাব মোড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় সেখানে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল আমিনুল ইসলাম ও মন্ত্রীর নিরাপত্তা দলের এএসআই শাহাবুদ্দিন আহত হন। এ বছরের ২৬ মে রাত ৯টায় রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে সিএনজি পাম্পের বিপরীতে ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ঢাকা ডিএমপির ট্রাফিক পূর্ব (সবুজবাগ) বিভাগের এএসআই রাশেদা খাতুন, রিকশাচালক লাল মিয়া এবং আরেক পথচারী আহত হন। গত ২৯ এপ্রিল রাজধানীর গুলিস্তানে ককটেল বিস্ফোরণে দুজন ট্রাফিক ও এক কমিউনিটি পুলিশ সদস্য আহত হন।

সিটিটিসি প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম জানান, নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই গ্রেফতার হয়েছে, কেউ কেউ পুলিশি অভিযানে নিহত হয়েছে ও আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হয়েছে। জেএমবি ছিল মূলত জামায়াত-শিবিরের সাবেক নেতাকর্মীদের তৈরি একটি জঙ্গিবাদী সংগঠন। আমরা দেখেছি, বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বা সাবেক নেতাকর্মী জেএমবিতে জড়িত হয়েছে। ২০১৬ সালের পরেও যারা জড়িত হচ্ছে তাদের মধ্যে অনলাইন অ্যাকটিভিস্টই বেশি। কারণ, হলি আর্টিজানের পরে তাদের যে সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে উঠেছিল, তাতে সাবেক শিবির ছাড়াও আরও কিছু তরুণ যোগ দেয়, যারা মিসগাইডেট হয়েছিল। অনলাইন প্রচারণার ল্যাংগুয়েজ এবং ছাত্রশিবিরের ব্যবহৃত কিছু ট্রেডমার্ক ল্যাংগুয়েজ এখন পর্যন্ত ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন সময় যারা ধরা পড়ছে তারাও দেখা গেছে শিবিরের সঙ্গে জড়িত ছিল। এমনও কেউ কেউ আছে, ছাত্রশিবিরের নেতা হিসেবে ১৫-১৬টি মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সে এই জঙ্গি গোষ্ঠীতে নাম লিখিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে।

তিনি বলে বলেন, কিছুদিন আগে রাজধানীর দুটি পুলিশ বক্সের সামনে বোমা রাখা হয়েছিল, সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। রাজনৈতিকভাবে যুদ্ধাপরাধের বিচার যখন শুরু হয়, তখন তারা যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, সেটার প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা দেখেছে পুলিশকে। তারা নৈরাজ্য যাতে তৈরি হতে না পারে, তা প্রতিহত করেছে পুলিশ। পুলিশ জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে, জানমালের ও সরকারি সম্পত্তির নিরাপত্তার স্বার্থে আইন প্রয়োগ করেছে। এটি তাদের বিপক্ষে গেছে। ফলে সেদিক থেকে পুলিশের প্রতি তাদের একটি ক্ষোভ রয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন