শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক চলতি মাসেই চালু হচ্ছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:২৪ এএম

চলতি মাসেই চালু হচ্ছে পুলিশের মালিকানাধীন কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। গুলশানের পুলিশ প্লাজায় প্রধান কার্যালয়ের পাশাপাশি প্রিন্সিপাল শাখাসহ ছয়টি শাখায় ব্যাংকটির কার্যক্রম চালু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংকটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। ওই দিন থেকেই ব্যাংকের গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট খোলাসহ কার্যক্রম শুরু হবে।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউহুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, ব্যাংক চালু করতে প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগসহ টেকনিক্যাল সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আশা করি, চলতি মাসেই (সেপ্টেম্বর) আমরা ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করব। প্রধানমন্ত্রী আমাদের ব্যাংকের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন, এটা আমরা চাচ্ছি। তাই প্রধানমন্ত্রী যেই দিন সময় দেবেন সেদিনই কার্যক্রম শুরু করা হবে।
জানা গেছে, ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় হবে রাজধানীর গুলশান-১ নম্বরে অবস্থিত পুলিশ প্লাজায়। এছাড়া প্রিন্সিপাল শাখাসহ মোট ছয়টি শাখা দিয়ে প্রথমে এ ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করা হবে। ২০১৮ সালে রাজনৈতিক বিবেচনায় পুলিশ বাহিনীকে ‘কমিউনিটি ব্যাংক অব বাংলাদেশ’ দেয়া হয়। ওই বছর নভেম্বরে ব্যাংকটিকে তফসিলি ব্যাংক হিসেবে তালিকাভুক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে সরকারি-বেসরকারি মিলে দেশে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৯টিতে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের টানা তিন মেয়াদে ১৩টি নতুন ব্যাংক অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশি ও প্রবাসী উদ্যোক্তারা ১১টি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) একটি ব্যাংক (সীমান্ত ব্যাংক) পেয়েছে। সর্বশেষ পেল পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানায় কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ।
পুলিশ সদরদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের মার্চে ব্যাংকটির অনুমোদন চেয়ে পুলিশ সদর দফতরের কল্যাণ ট্রাস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে। পরে ২৮ আগস্ট ‘কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ’ নামে পুলিশকে ব্যাংকের অনুমোদন দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত ২৯ অক্টোবর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় কমিউনিটি ব্যাংকের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে বাংলাদেশ পুলিশ বাণিজ্যিকভাবে এ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে ২০১৭ সাল থেকে কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে মূলধনের ৪০০ কোটি টাকা সংগ্রহ শুরু করে। পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে মূলধন সংগ্রহ শেষ হয়। গুলশানে পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে করা হয়েছে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়। মিডল্যান্ড ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি মশিউহুল হক চৌধুরীকে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
সূত্র জানায়, কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে সারাদেশে পুলিশ সদস্যদের বেতন দেয়া হবে। আপাতত পুলিশ সদস্যরাই হবেন এ ব্যাংকের শেয়ার হোল্ডার। এর লভ্যাংশ যাবে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টে। ট্রাস্টের মাধ্যমে ওই টাকা ব্যয় হবে পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে। ব্যাংক লাভজনক হলে তিন বছর পর মূলধন জোগানের ওপর প্রত্যেকে নির্ধারিত হারে লভ্যাংশ পাবেন। এছাড়া পুলিশ সদস্যদের জমি ক্রয়, বাড়ি নির্মাণ, ব্যবসা উদ্যোগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের আয় বাড়লে সদস্য ও তাদের পরিবারের চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা বর্তমানের চেয়ে বাড়ানো হবে। সদস্যরা অবসর সুবিধা, তাদের সন্তানের শিক্ষাবৃত্তি, কারিগরি শিক্ষাবৃত্তি, ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপনসহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন এ ব্যাংকের মাধ্যমে। অন্য অনেক সংস্থার মতো পুলিশের নিজস্ব ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর সঠিক ও স্বচ্ছ লেনদেনের কারণে জনগণের মধ্যে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে পুলিশ ব্যাংক গঠনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রথম দাবি তোলা হয়। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিনই প্রধানমন্ত্রী দাবিটি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন। এর ফলে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্টের মালিকানায় চালু হচ্ছে কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন