শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

হারিয়ে যাওয়ার পথে ডাল-কুমড়ো বড়ি

প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : বাঙালি বরাবরই ভোজন রসিক। হোক তা গরম কিংবা শীত মৌসুমে। তবে শীত মৌসুমে খাওয়া-দাওয়ায় একটু বেশিই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে মানুষ। তাইতো নতুন নতুন খাবার তৈরিতে আবহমান বাংলার গ্রামীণ নারীরা সবসময়ই ব্যস্ত থাকেন। শীত এলেই পিঠার সাথে সাথে গ্রামীণ নারীদের হাতের ছোয়ায় তৈরি হয় আরও একটি খাদ্যপদ। যদিও হারিয়ে যাওয়ার পথে খাদ্যপদটি। বলছি, ডালের বড়ির কথা। ঠিকরে কলুর ডাল ও চাল কুমড়ার সমন্বয়ে তৈরি এই খাদ্যপদটির জন্য নারীদের প্রস্তুতি দেখা যায় শীত মৌসুমের আরো দু’তিন মাস আগে থেকে। বড়ি দেয়ার জন্যই অনেকে বাড়িতে চাল কুমড়ার চারা লাগান। উৎপাদিত চাল কুমড়া সংরক্ষণ করে শীতের কোন এক সুবিধাজনক সময়ে বাজার থেকে ঠিকরে কলুর ডাল সংগ্রহ করে গ্রামীণ নারীরা লেগে যান বড়ি দিতে। তৈরিকৃত বড়ি সংরক্ষণ করে রাখেন বছরজুড়ে। সারাবছরই বিভিন্ন তরকারির সাথে রান্না করে খাওয়া যায় বড়ি। এখন শীত চলছে। বড়ি দেয়ার সময়। সাতক্ষীরা পৌর এলাকার রাজার বাগান গ্রামে বড়ি দিতে দেখা গেল গৃহবধূ তাহেরা খাতুনকে। তিনি জানান, বড়ি দেয়ার জন্যই বাড়িতে চাল কুমড়া লাগিয়েছিলেন। তাতে বেশ ফলনও হয়েছে। পরে বাজার থেকে তিন কেজি ঠিকরে কলুর ডাল সংগ্রহ করেন তিনি। বড়ি দেয়ার প্রক্রিয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, চাল কুমড়া ভাল করে কেচে মিহি করে নিতে হবে। একই সাথে ডাল ভিজিয়ে বেটে মিহি করে নিতে হবে। পরে পরিমাণ মতো কুমড়া ও ডাল মিশিয়ে খামির তৈরি করলেই বড়ি দেয়া যাবে। বড়ি দেয়া সম্পর্কে আরেকজন গৃহবধূ বৃদ্ধা আমিনা বেগম জানান, আগে বাড়ি বাড়ি বড়ি দেয়ার উৎসব হতো। কিন্তু এই যুগে মহিলাদের মধ্যে সেই উৎসাহ দেখা যায় না। আবার চাল কুমড়া প্রাপ্তিও দুঃসাধ্য। তাই বড়ি দেয়ার রেওয়াজ কমে গেছে। তারপরও গ্রামের বেশ কিছু বাড়িতে এ বছর বড়ি দিতে দেখা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন