বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

জেজেআই মিলের ৩৪ কোটি টাকার পণ্য অবিক্রীত

দেখা দিয়েছে চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর) | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:২১ এএম

যশোরের নওয়াপাড়া রাজঘাট শিল্পাঞ্চল রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ জেজেআই ৩৪ কোটি টাকার মূল্যের উৎপাদিত পন্য অবিক্রিত থাকায় মিলটি চরম অর্থনৈতিক সংকটে দেখা দিয়েছে। অর্থের অভাবে পাট কিনতে না পারায় উৎপাদন ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। ফলে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
মিল সূত্রে জানা যায়, ৮১.২১ একর জমির ওপর অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া শিল্পাঞ্চলের রাজঘাটে অবস্থিত এই পাটকলটি ১৯৭২ সালে জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে বিজেএমসির (বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন) নিয়ন্ত্রিত এই মিলটিতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। সত্তর দশকের যন্ত্রপাতি দিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মিলটি।

সরেজমিনে কথা হয় মিল কর্তৃপক্ষের সাথে। মিলের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. কালাম মল্লিক জানান, মিলে উৎপাদিত হচ্ছে তিন ধরণের পণ্য। যেগুলো হলো- পাতলা বস্তা (হেসিয়ান), মোটা বস্তা (স্যাকিং) ও কার্পেট ব্যাকিং ক্লথ (চট)। উৎপাদিত এসব পণ্য দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা হয়ে থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়া, ইরান, লিবিয়া ও ইরাক, আফ্রিকার সুদান ও ঘানা এবং পাশবর্তী দেশ ভারতে এসব পণ্য রফতানি করা হয়ে থাকে বেশি। উৎপাদিত এসব পন্য রপতানী না হওয়ায় প্রায় ৩৪ কোটি টাকার পন্য অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বর্তমানে মিলে তিন শিফটের স্থলে চালু রয়েছে ২ শিফট। স্থায়ী শ্রমিক রয়েছে ১ হাজার ১ শ’ জন। অস্থায়ী বা বদলী শ্রমিক রয়েছে ১ হাজার ২ শ’ জন। মিলটিতে বর্তমানে ৪৬জন কর্মকর্তা ও ৯১জন কর্মচারী কর্মরত।

এছাড়া মিলে রয়েছে জেজেআই নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেখানে ১৬ জন শিক্ষক-কর্মচারী এবং প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করছে ১৪২জন ছাত্র ও ১২৬জন ছাত্রী। মিলে তাঁতের সংখ্যা হচ্ছে- হেসিয়ান উৎপাদনে ৩০৬ খানা, স্যাকিং উৎপাদনে ১০৪খানা এবং সিবিসি উৎপাদনে ৫৬খানা। সত্তর দশকের যন্ত্রাংশ দিয়ে চলছে এসব তাঁতগুলো। তিনি আরও জানান, সময়মতো কাঁচা পাট ক্রয় করতে না পারা এবং উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য দামে সঠিক সময়ে বিক্রি না হওয়ায় মিলটির এমন দশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিলের ডেপুটি ম্যানেজার (হিসাব) মো. রবিউল ইসলাম জানান, মিলের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হলো, দৈনিক ২২মে.টন। উৎপাদন হচ্ছে, দৈনিক ১৪মে.টন। প্রতিদিন ঘাটতি পড়ছে, ৮মে.টন। বছর হিসাবে ঘাটতি পড়ছে- ২হাজার ৪০০মে.টন। যার ফলে শ্রমিকদরে সঠিক সময়ে বেতন দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

মিলের শ্রমিক সংগঠন সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান চুন্নু জানান, পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিজেএমসি (বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশন) দুই বছর ধরে পাট কেনার জন্য অর্থ সরবরাহ না করায় মিলের উৎপাদন ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে সরকারের কাছে পাট কেনার অর্থ দাবি করেন। মিলের প্রকল্প প্রধান মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, মিলে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাট না থাকার কারণে উৎপাদন হচ্ছে কম। সঠিক সময়ে পাট কিনতে পারলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হতো।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন