শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মামলার আগেই আসামি গ্রেফতার এলাকাবাসীর ক্ষোভ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম


 রাত দুটোয় গ্রেফতার করা হয় আলমগীরকে (৩২)। পরদিন দুপুরে হয় মামলা। আর রাতে আলমগীরকে নৌকায় করে পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময় সে নৌকায় প্রতিপক্ষের লোকজন দুটি গরুও উঠিয়ে দেয়। মামলা হয় গরু চুরির। এ ঘটনায় অবাক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বড়াইল ইউনিয়নের মেরাতলী গ্রামবাসী।

আলমগীরসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দেয়া মামলার এক নম্বর সাক্ষী করা হয়েছে জেলা পরিষদ সদস্য আবুল হোসেন আজাদকে। তাকে সাক্ষী করায় তিনিও বিস্মিত। শুধু তাই নয়, মামলার যে এজাহার দেয়া হয়েছে সেখানে জেলা পরিষদের ওই সদস্য মেরাতলী গ্রামে গিয়ে ৩০ আগস্ট মধ্যপাড়া ঈদগাহ মাঠে বৈঠক করেছেন বলেও উল্লেখ করা হয়। আদতে জেলা পরিষদ সদস্য আবুল হোসেন আজাদ কোনদিনই ওই গ্রামে যাননি বা মিটিংও করেননি। তবে জেলা পরিষদের সদস্যের ক্ষমতার দাপটে থানা পুলিশ এবং এলাকার একটি চক্র এই কাহিনী সাজিয়েছে মুখে মুখে রয়েছে এই অভিযোগ। আলোচিত মামলার আসামি আলমগীর বর্তমানে জেল হাজতে।

প্রায় ১৩ বছর প্রবাসে ছিলেন এই যুবক। ২ বছর আগে দেশে ফিরে কৃষি কাজে নিয়োজিত ছিলো। এখন তাকে গরু চোর বানিয়ে মামলা দেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন গ্রামের মানুষ। গত রোববার সরজমিনে খোঁজ খবর নিতে ওই গ্রামে গেলে মধ্যপাড়ার ঈদগাহ মাঠে জড়ো হন এলাকার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।

ফারুক মিয়া জানান, পুকুরের মাছ ধরা নিয়ে জাহাঙ্গীর ও মজিবুরের মধ্যে বিরোধ হয়। এ ঘটনায় গোসাইপুর বাজারে জাহাঙ্গীরকে মারধর করার চেষ্টা করে মজিবুর ও তার লোকজন। বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে মারধর করা হয়। এরপর তার ঘরবাড়িতে হামলা করা হয়। এই ঘটনার ৩ দিন পর থানায় মামলা দেয়া হয় জাহাঙ্গীর মিয়াসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে। গ্রামের আবেদ আলী (৬৫), মো. হাসান আলী (৭৫), আবুল কাশেম (৭০), হাজী রহিছ উদ্দিন খন্দকার (৭০), সহিদ মিয়া (৮০) ও মুছা মিয়া (৭০) বলেন, মামলা সাজানো। জেলা পরিষদ সদস্য আজাদ মামলার এজাহারে উল্লেখিত দিনেতো নয়ই, কোন দিন আমাদের গ্রামে আসেননি। থানার এসআই রুবেল ফরাজী আলমগীরকে আটক করে নৌকায় উঠানোর পর হেবজু মিয়ার ঘর থেকে একটি এবং আবেদা বেগমের ঘর থেকে আরেকটি গরু এনে নৌকায় উঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানান গ্রামের মানুষ। চোরাই গরু হিসেবে দেখিয়ে মামলা করা হয়। ঘটনাটি এলাকার সংসদ সদস্যকেও জানানো হয়। তিনিও থানার ওসিকে বিষয়টি দেখার জন্যে বলেছিলেন।

আলমগীরের বাবা জামশেদ মিয়া জানান, রাত দুটোয় পুলিশের সাথে গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে হেলালও ছিলো। তারা আলমগীরকে আটক করে। মামলা-মোকদ্দমা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলে থানায় গেলে বুঝতে পারবি বলে থাপ্পর দেয় এক পুলিশ সদস্য।
বড়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাশার বলেন, জেলা পরিষদ সদস্য আবুল হোসেন আজাদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশ দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। বড়াইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, খোঁজখবর নিয়ে দেখেছি এটা পরিকল্পিত ঘটনা। মূলনায়ক আবুল হোসেন আজাদ।

জেলা পরিষদ সদস্য আবুল হোসেন আজাদ বলেন, তিনি মেরাতলী গ্রামে যাননি। তবে গ্রামে গরু চুরির বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছেন। তাকে সাক্ষী করার বিষয়ে তিনি থানার ওসিকে জিজ্ঞেস করেছিলেন বলেও জানান। তবে বাদী যে এজাহারটি দিয়েছিলো সেটি থানায় এফআইআর হয়নি।

এব্যাপারে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রনজিৎত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে জানান।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন