শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মেঘনার কান্না

বিআডব্লিউটিএ-এর ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ

মোক্তার হোসেন মোল্লা, সোনারগাঁও থেকে | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সোনারগাঁয়ের বারদীতে বেঙ্গল সিমেন্টের নদী দখল -ইনকিলাব


দখলদারদের কবলে পড়ে মেঘনা নদীর সোনারগাঁয়ের অংশ বর্তমানে অস্তিত্ত্ব সঙ্কটে পড়েছে। ঐতিহ্যবাহী মেঘনা যেন কাঁদছে। বহুদ‚র থেকেও এ কান্না শোনা যায়। দূর থেকে মেঘনা নদীর দিকে তাকালে চোখে পড়ে নদীর তীরবর্তি বিশাল এলাকাজুড়ে শুধু দখলদারিত্ব ও বিশাল বিশাল স্থাপনা। শুধু নদীর জায়গা নয়, শাখা নদী, খাস সম্পত্তি, নদী তীরবর্তী ফোরসোর ল্যান্ডভূক্ত জমি, সরকারি খালের জমি এবং কৃষকের কৃষি জমি জোরপূর্বক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল বিশাল স্থাপনা। প্রভাবশালী নদীখেকোরা দখল-দূষণ করে এবং বিভিন্ন ধরনে স্থাপনা নির্মাণ করে পরিবেশকে মারাত্মক ধ্বংসের মুখে ফেলেছে। মেঘনা নদী প্রতিনিয়ত দখল হলেও নদী উদ্ধারে কোন তৎপরতা নেই বিআডব্লিউটিএ’এর। এর আগে অভিযান পরিচালনা করা হলেও তা ছিল লোক দেখানো। অভিযান পরিচালনা করার পরে কোন নজরদারী নেই বিআডব্লিউটিএ’র। এ প্রসঙ্গে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুস সামাদ ইনকিলাবকে বলেন, নদী উদ্ধারে আমাদের অভিযান বন্ধ হয়নি। নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি এলাকায় মেঘনা নদী দখলের বিষয়ে তদন্ত চলছে জানিয়ে নৌপরিবহন সচিব বলেন, নদীর সীমানা পিলারের জরিপও চলছে। তদন্ত ও জরিপ শেষ হলে আবার অভিযান শুরু হবে।

সোনারগাঁও উপজেলা ভূমি অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো অবৈধভাবে নদী দখল ও ভরাট করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে। আমরা অভিযানে গেলে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাদের নদীর পাড় ব্যবহারের বিআডব্লিউটিএর অনুমতিপত্র দেখানো হয়। যেহেতু শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বিআডব্লিউটিএ থেকে নদী তীরবর্তী ভূমি ব্যবহারের অনুমতি নিয়ে কাজ করে। সেক্ষেত্রে আমাদের আইনগত কিছু করার থাকেনা। ওই কর্মকর্তা বলেন, শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশাল টাকার ঘুষের বিনিময়ে নদী তীরভূমি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে নদী তীরভূমি ব্যবহারের অনুমতি দেয়ার পূর্বে আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা জানায়, বিআডব্লিউটিএ-এর কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে প্রভাবশালী শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্রকাশ্যে একের পর এক স্থানে মেঘনা নদী ও শাখা নদীর জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছেন স্থাপনা। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো পাইলিং, বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ ও বালু ফেলে প্রতিনিয়ত নদীর গভীরে দখল করে চলেছে।

এদিকে, বিগত কয়েকদিন যাবত সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুরে শীতলক্ষা নদী উদ্ধারে ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করছে বিআডব্লিউটিএ। কোথাও কোথাও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও দখলকারীদের দু’একদিনের মধ্যে নিজেদের স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে বিআডব্লিউটিএ। কিন্তু রহস্যজনক কারণে মেঘনা উদ্ধারে ও উদ্ধারকৃত জমি রক্ষায় কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি সরকারি এ সংস্থাটি। এদিকে, বিআডব্লিউটিএ ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগীতা ছাড়া এভাবে নদী দখল সম্ভব নয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ।
জানা গেছে, মেঘনা নদী দখল ও দূষণের বিষয়ে বিগত সময়ে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশ হবার পর টনক নড়ে সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআডব্লিউটিএ-এর। ‘মেঘনা নদীর পাড় দখল’ নিয়ে ৬ পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রতিষ্ঠানটি। চলতি বছরের ১৯ মে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ব্যাপক ঢাকঢোল পিটিয়ে ‹মেঘনা নদীর তীরবর্তী ‘দখল’ উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে বিআডব্লিউটিএ। বিগত ১৯ মে থেকে মেঘনা নদী দখল মুক্ত করার অভিযান শুরু হয় এবং পর্যায়ক্রমে ছয়দিন ব্যাপী চলে অভিযান। অভিযান পরিচালনার সময় মেঘনা নদী সবচেয়ে বেশি দখলকারী দেশের প্রভাবশালী কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দখলকৃত মেঘনা নদী, নদীর তীরবর্তী খাস ভূমি, সরকারি খাল এবং ফোরশোর ল্যান্ডভ‚ক্ত ভ‚মিতে বালু ভরাট করে প্রাচীর দিয়ে দখল করার পরও সেগুলো উচ্ছেদ করেনি বিআডব্লিউটিএ। তখন কর্তৃপক্ষ অবশ্য দাবি করে, বিগত ঈদুল ফিতরের পরে পুনরায় অভিযান পরিচালনা হবে এবং উচ্ছেদের আওতায় পরবে নদী দখলকারী সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান।

এমনকি সে সময়ে নদীতে ভরাটকৃত বালু লোক দেখানো কয়েক কোটি টাকায় নিলামে বিক্রি করার পর এখনো পর্যন্ত সরানো হয়নি বালু। উল্টো আরো বালু ফেলে দখল অব্যহত রাখছে প্রভাবশালী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। অভিযান পরিচালনার সময় বিআডব্লিউটিএ জানায়, মেঘনার পাড় দখলমুক্ত করতে অভিযান অব্যহত থাকবে। কিন্তু অভিযানতো দ‚রের কথা উল্টো তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় দখল হচ্ছে মেঘনা নদী এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮ (ক) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ্ররাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীব-বৈচিত্র, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।গ্ধ অথচ বিআডব্লিউটিএ নদীখেকোদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে নদীর পাড় ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে এবং নদী রক্ষা না করে নদী দখল ও মারাত্মক দ‚ষণে সহায়তা করছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

জানা গেছে, প্রাকৃৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০-এ বলা হয়েছে, ‘প্রাকৃৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণী পরিবর্তন করা যাবে না বা উক্তরূপ জায়গা অন্য কোনোভাবে ব্যবহার করা যাবে না, বা অনুরূপ ব্যবহারের জন্য ভাড়া, ইজারা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর করা যাবে না।’ আইনের সংজ্ঞার ‘চ’ অংশে বলা হয়েছে, ‘প্রাকৃতিক জলাধার’ অর্থ নদী, খাল, বিল, দীঘি, ঝরনা বা জলাশয় হিসেবে মাস্টার প্লানে চিহ্নিত বা সরকার, স্থানীয় সরকার, কোনো সংস্থা কর্তৃক, সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বন্যাপ্রবাহ এলাকা হিসেবে ঘোষিত কোনো জায়গা এবং সলল পানি এবং বৃষ্টির পানি ধারণ করে এমন কোনো ভূমিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে।’ আর শ্রেণী পরিবর্তন বলতে ‘মাটি ভরাট, পাকা, আধাপাকা বা কাঁচা ঘরবাড়ি এবং অন্য যে কোনো ধরনের ভবন নির্মাণসহ কোনোভাবে সেই অবস্থার পরিবর্তন হইতে পারে এমন কিছুকে বুঝাইবে।’ এই আইন অনুযায়ী নদী বা নদীতীরবর্তী প্রাকৃতিক জলাশয় ভরাট, দখল ও জলাশয়ের শ্রেণী পরিবর্তন সম্পূর্ণ বেআইনি ও নিষিদ্ধ। তারপরও কিভাবে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ্যে নদী দখল করে যাচ্ছে-এমন প্রশ্ন অনেকের।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইন অনুযায়ী, যেকোনো আবাসন বা বড় উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা (ইআইএ) করে এর অনুমোদন নিতে হয়। প্রয়োজন হয় অবস্থানগত ছাড়পত্রের। এসবের পর পরিবেশ ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করতে হয়। এসব ছাড়পত্র পেলে তবেই মাটি ভরাটসহ অন্যান্য উন্নয়নম‚লক কাজ করতে হয়। কিন্তু মেঘনা নদী খেকো শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এই প্রক্রিয়া ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই বালু ভরাট করে নদী ও কৃষকদের জমি জোরপ‚র্বক দখল করেছে।

হাইকোর্ট বিভাগের রীট মামলা নং ৩৫০৩/২০০৯, ১১৪৫৪/১৮ এবং ১১৬১৯/১৮ এর আদেশ এবং হাইকোটের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী নদী তীরবর্তী ফোরসোর ল্যান্ডভ‚ক্ত ৫০ মিটার ভূমিতে বালি ও মাটি ভরাটসহ যে কোন স্থাপনা নির্মান করা সম্পূর্ন অবৈধ। এমনকি, নদীখেকো কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাজ বন্ধে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তে¡ও উপজেলা প্রশাসন ও বিআডব্লিউটিএ-এর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় তারা বীরদর্পে নদী দখল ও ভরাট করে বড় বড় স্থাপনা নির্মান করছে।

এদিকে, গত বছর বাংলাদেশ নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ও সচিব ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার আকস্মিকভাবে সোনারগাঁওয়ে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা পরিদর্শন করে মেঘনা নদী দখলের ভয়াবহতা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন। পরে তিনি সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে স্থানীয় নদী রক্ষা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় কালে বলেন, বর্তমানে মেঘনা নদীর অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ। যেভাবে কোম্পানিগুলো নদী দখল করে
আছে, তাতে মনে হচ্ছে তারাই নদীর মালিক। এসব দখলদার যতই ক্ষমতাশীল হোক না কেন, আগামী দু›দিনের মধ্যে তাদের স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে নদী রক্ষা কমিশন থেকে অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঙ্গে এনে অভিযান পরিচালনা করবেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, নদীখেকোরা বিআডব্লিউটিএ এর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় নদী দখল করে। নদী খেকোদের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে, হুমকি ও মামলা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করে। নদী খেকোদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিআডব্লিউটিএ ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে ঘুরেও কোন প্রতিকার পায়নি ভূক্তভোগী জনগন। নদী, সরকারি খাল ও কৃষি জমি উদ্ধারে স্থানীয় এলাকাবাসি ও পরিবেশ বাদী সংগঠনগুলো একাধিকবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, রাস্তা অবরোধ ও স্মারকলিপি প্রদান করে কোন ফল পায়নি।

সরেজমিনে মেঘনা নদীতে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মেঘনা ঘাট, বৈদ্যেরবাজার ঘাট, হাড়িয়া ও আনন্দ বাজার এবং বারদী এলাকাসহ নদী তীরবর্তী প্রতিটি স্থানে মেঘনা নদী দখলের মহাউৎসব চলছে। নদীতীরবর্তী স্থানে গেলে মনে হয়, নদীর মধ্যে ভাসছে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিশাল বিশাল ভবনগুলো। স্থানীয় প্রশাসন ও বিআডব্লিউটিএকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বীরদর্পে নদী দখল করে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রভাবশালী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। বিআডব্লিউটিএ-এর সহযোগীতায় কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের স্থীতিবস্থা বজায় থাকা অবস্থায়ও তারা বালু ভরাটসহ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি, মেঘনা নদীর শাখা ও সরকারি খালগুলো বর্তমানে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। মেনীখালি নদী, ঐতিহাসিক রান্দির খাল, আনন্দ বাজার খাল, পঙ্খিরাজ খাল এবং ছাওয়াল বাগীনী নদের মুখ দখল হওয়ায় শাখা নদীগুলো প্রায় ধ্বংশের পথে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের আগ্রাসনে।

এদিকে, প্রতিনিয়ত দখলে-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে মেঘনা। তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা অসংখ্য কলকারখানা থেকে নির্গত দূষিত পানি ও আবর্জনা অবাধে মিশছে মেঘনা নদীতে। দূষণ আর দখলে হারাতে বসেছে প্রমত্তা মেঘনার পূর্বের জৌলুস। অবৈধ দখলদারের দৌরাত্মে ক্রমেই সরু হয়ে আসছে নদীটির আকার। মাটি আর আবর্জনা ফেলে ভরাট হচ্ছে নদী। আর বিভিন্ন স্থানে বাঁধ ও পাড়ে বালু দিয়ে অবাধে ভরাট হচ্ছে মেঘনা। অতিরিক্ত দখলের কারনে বদলে যাচ্ছে নদীর গতিপথ। মেঘনা নদীতে অবাধে মিসছে কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য। ময়লা আবর্জনা বদলে দিয়েছে পানির রং আর গন্ধ। তৈরি হচ্ছে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি। আর বিভিন্ন শাখা নদী ও খাল দখল করায় মারাত্মক জলাবদ্ধতায় পরেছে স্থানীয় এলাকাবাসী। কিন্তু নদী রক্ষার দায়িত্বে থাকা বিআডব্লিউটিএ মেঘনা নদী উদ্ধারে একেবারেই উদাসিন। এমনকি নদী উদ্ধারে কোন ভ‚মিকা না থাকলেও নদী দখলে সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে বিআডব্লিউটিএ এর বিরুদ্ধে।

বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি কবি জামান ভ‚ঁইয়া বলেন, মেঘনা যেন বুড়িগঙ্গা ও শীতলক্ষ্যা না হয়। নদী উদ্ধারে বিআডব্লিউটিএ-এর ভূমিকা যথেষ্ঠ রহস্যজনক। তারা এখনও পর্যন্ত উচ্ছেদকৃত অংশ এবং নিলামকৃত বালু অপসারন করতে পারেনি। পরিবেশ অধিদপ্তর, বিআডব্লিউটিএ ও স্থানীয় প্রশাসনকে নদী রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জ বিআডব্লিউটিএ এর সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব নেয়া হোক। তাদের দুর্নীতি ও অনিয়ম আছে কি না? সবাইকে বুঝতে হবে, নদী বাঁচলে, তবেই বাঁচবে দেশ। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে মেঘনা নদী উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে মেঘনা নদী বুড়িগঙ্গা হতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর কর্তৃপক্ষের যুগ্ম-পরিচালক শেখ মাসুদ কামাল বলেন, নদী দখলকারীরা যত শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না। কাউকে নদী দখল করতে দেয়া হবে না। আগামী সপ্তাহে মেঘনা নদীতে পরিদর্শন করে অবৈধ দখলদারদের পুনরায় উচ্ছেদের আওতায় আনা হবে। বিশেষ করে, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিকে আমরা অবৈধ দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত নদী তীরভূমি উপহার দিবো।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
আনিছুর রহমান ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
আনিছুর রহমান ================================= বিষাক্ত বর্জ্য দূষণ মৃত্যুর মুখে পড়ছে কৃষি জনম নদ-নদী, খাল-বিল চলছে দখল ও ভরাট বৃথাই চেষ্টা উদ্ধার প্রকৃয়া,ধলেশ্বরী আর বুড়িগঙ্গা। মরেছে তুরাগ নদী এখন বুড়িগঙ্গা আর ধলেশ্বরী মাছের প্রজননের একমাত্র নদী গুলো দখল-দূষণে হচ্ছে, ছোট-ছোট নদীর কথাই নেই। ভয়াবহ রুপরেখা অন্যতম নদী মেঘনা এখন দূষণের কবলে,অনেক নদী মরার পথে নদী বিষয়ক কমিশন,চিঠি দিয়ে করেন আয়োজন। দখল দাড়িত্বে রয়েছে অবৈধভাবে পঞ্চাশ হাজারের বেশি যাদের মধ্যে রয়েছে প্রভাবশালী ব্যাক্তি রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতার নাম। এরপর থেমে গেলো উদ্ধার কাজ এবং মহতী উদ্যোগ এভাবেই রাঘব-বোয়ালরা রয়েছে চুপচাপ সর্বনাশ হচ্ছে নদ-নদী আর কৃষকের মাঠ অবৈধভাবে।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
Tomar Amar Thikana Padma Meghna Jamuna -this was a slogan of our struggle of independence. Now the very thikana is going to be lost allegedly by powerful quarters.
Total Reply(0)
Sharif Sarwar ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
নদী সারা জীবন সকলের উপকার করে এ কথা আমরা সকলেই জানি অথচ নদী গুলো বাংলাদেশে প্রবেশ পথ থেকেই অপরিকল্প ভাবে নানা ভাবে হত্যা করা শুরু হয় ।নদীর শুরু থেকে শেষ অবধি চলে এই হত্যাযজ্ঞ। দেশের বড় নদী থেকে শুরু করে ছোট ছোট নদী নালা খাল বিল পকুর ডুবা নানা ভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ।ফলে নদী আর নদী নেই । দখল এবং দূষণে মৃতপ্রায় দেশের সকল নদ নদী আজ বাংলাদেশের পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
Total Reply(0)
মা হোমিও হল ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
এখনই আমরা সবাই সাবধান ও সচেতন না হলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সেই সাথে দেশের খাদ্যসঙ্কট এবং রোগে-শোকে মানব সভ্যতা আরও বিপন্ন হবে।
Total Reply(0)
MD Rashedul Islam ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
সবাই যে এক যোগে খেয়ে ফেলছে, নদী আর্তনাদ কে শোনে বলেন, এখন এটা মেঘনা নদী না যেন ড্রেন....
Total Reply(0)
Sabuj Mahamud ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
শুধু মেঘনা নয় এমনি ভাবে হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো নদী ।
Total Reply(0)
Zunaied Hasan ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৪ এএম says : 0
সবার উদ্দশ্যে বলছি পরিবেশ রক্ষায় নদীর ভুমি কা অনেক।নদীকে বাচালে আমরা সার্বিক ভাবে অনেক উপকার পাব।।।সরকারি বেসরকারি সব সংস্থা কে এগিয়ে আসতে হবে।।।জনগনকে সচেতন করে তুলতে হবে।।।।আসুন আমরা সবাই দেশকে নিয়ে ভাবি।।।
Total Reply(0)
Rumi Rumi ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
অবাক হওয়ার কিছু নেই ।একসময় বাংলাদেশও মানচিত্র থেকে মুছে যাবে ।এরজন্য দেশের জনগণকে মানসিকভাবে প্রস্তুুত থাকতে হবে ।
Total Reply(0)
Shamsul Hoque ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৩৫ এএম says : 0
সকল অবৈধ দখল, স্থাপনা অপসরণ করে ড্রেজিং করা হউক।
Total Reply(0)
ash ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৫:৩০ এএম says : 0
AMADER CHOTLA ATO CHOWRA NODIR KI KONO DORKAR ASE?? BANGLADESH GHONO BOSHOTI PURNO AKTA DESH, AMADER JOMOR DOKAR, OBOSHO E NODI DORKAR TAI BOLE ATO PROSTHO BUT GOVIR NA (CHOTLA) NODI DIE LAV TA KI HOY?? BORONCHO AKTU CHIKON KORE DUI PAR DHALAI KORE BEDHE GOVIR KORLLE , NIDITE PANI BESHI DORTE PARTO, BONNAY PANI WPCHE BONNA HOTO NA
Total Reply(0)
Enamul Haque Sumon ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:৪১ এএম says : 0
নিউজটি করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন