বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থসঙ্কট নেই -সাংবাদিকদের অর্থমন্ত্রী

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:২৩ এএম

বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালকের মতে, ভালো ভবিষ্যতের জন্য অর্থনীতির মজবুত ভিত দরকার

প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের টাকার সঙ্কট নেই জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, শেয়ারবাজার ও বন্ড মার্কেট উন্নয়নে সর্বাত্মক সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক। এছাড়াও অর্থনীতির যেসব জায়গায় আমরা পিছিয়ে আছি, সেসব জায়গার উন্নয়নেও এগিয়ে আসবে সংস্থাটি। এ সময় কোথায় টাকা খুঁজছে এমন প্রশ্ন তোলেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার টাকা খুঁজলে কোথা থেকে পাবে? টাকা তোলার রাস্তাটা কি?
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরে বাংলানগরের মন্ত্রীর দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক জুবিদা খেরুজ এলাউয়া। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় বিশ্বব্যাংকের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা অর্থনৈতিকভাবে যেখানে আছি, সেখান থেকে আরো উন্নতি করতে অনেক শক্তি ব্যয় করতে হবে। এ জন্য আমাদের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। বিশ্বব্যাংক এক্ষেত্রে আরো বেশি করে সাহায্য করতে প্রস্তুত রয়েছে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের বন্ড মার্কেটটা টোটালি উন্নয়ন করা হয়নি। এ মার্কেটটার উন্নয়ন করতে হবে। এ মার্কেটে সরকারি-বেসরকারি উভয় সেক্টরই আসবে। বন্ড মার্কেটের উন্নয়ন হলে শেয়ার বাজারেরও উন্নয়ন হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে বিভিন্ন ফি কমানো হয়েছে। বন্ড মার্কেটকে গতিশীল করার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে। বন্ড মার্কেটকে আমরা উন্নয়ন করবই। কেননা বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে শেয়ারবাজারের উন্নয়ন হবে। এছাড়াও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বন্ড মার্কেটে চলে আসবে। এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ৪৫টি প্রজেক্টে বর্তমানে কাজ চলছে। তাদের কাজ বাংলাদেশে চলমান রয়েছে।

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কিভাবে কাজ করবে এমন প্রশ্নে সভায় উপস্থিত থাকা বিশ্বব্যাংকের এক কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, আমরা কিছু টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, রেগুলেটরি রিফর্ম এবং পলিসির উন্নয়নে সহায়তা করব। তার কথায় সমর্থন জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, শেয়ারবাজারের উন্নয়নের পুরো কাজটাই সমন্বিতভাবে করা হবে। সরকার, বিশ্বব্যাংক এবং যারা এ বিষয়ে ইন্টারেস্টেড সবাই মিলে এ কাজগুলো করব।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বন্ড মার্কেটের উন্নয়নে করপোরেট সেক্টরের প্রভিডেন্ড ফান্ডগুলোও নিয়ে আসা হবে। এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীও একমত প্রকাশ করেছেন। বর্তমানে আমাদের অর্থনীতিতে আর্থিক খাতের উপাদান কম। উপাদান কম থাকলে অর্থনীতিও ছোট হয়ে যায়। অর্থনীতিকে বেগমান করতে হলে আমাদের অনেক টুলস (উপাদান) দরকার। আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার সবসময় পুঁজিবাজারের সঙ্গে রয়েছে। পুঁজিবাজারের উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। আমার কাজ হচ্ছে তাদের সাপোর্ট দেয়া, সেটা আমরা দিয়েছি। আগামীতে ভালো ভালো সরকারি কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি। পুঁজিবাজার পড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা উত্তরণে বিশ্বব্যাংক কাজ করছে। বন্ড মার্কেট ও ক্যাপিটাল মার্কেটে কাজ করছে। ব্যাংকিং খাতে যে পরামর্শ দেয়ার দরকার তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। আমরা এগুলো সংশোধনে কাজ করছি। সরকার নাকি অর্থ খুঁজছে এমন প্রশ্নের জবাবে সরকার কোথায় টাকা খুঁজছে বলে প্রশ্ন তোলেন অর্থমন্ত্রী। আ হ ম মুস্তফা কামাল এ সময় বলেন, আমাদের টাকার কোনো অভাব নেই। আমি আপনাদের বলছি টাকা থাকার একটা বেঞ্চ মার্ক (ভিত্তি) আছে। সেই বেঞ্চ মার্কের ওপর আমাদের এখন ৯২ হাজার কোটি টাকা বেশি আছে। এটা তো লুকোচুরি করার কোনো ব্যাপার না।

কোনো রকম টাকার অভাব নেই দাবি করে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যদি আপনারা কোথাও কোনো ব্যাংকে গিয়ে টাকা না পান, যদি এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) স্যাটেলমেন্ট করতে না পারেন, যদি পেমেন্ট না করতে পারেন, তবে আমাকে এসে বলবেন। তাহলে এগুলো আমরা কিভাবে বিশ্বাস করবÑ প্রশ্ন তুলে অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার কোথায় টাকা খুঁজছে? সরকার টাকা খুঁজলে কোথা থেকে পাবে? সরকারের টাকা না থাকলে দেয়ার কোনো ব্যবস্থা আছে। আপনারা কেউ সরকারকে টাকা দেবেন? তিনি বলেন, টাকা তোলার রাস্তাটা কি? সেভিংস ইনস্ট্রুমেন্ট বিক্রি করতে হবে, না হলে আমেরিকা যা করে কোয়ান্টিটি বেইজিংয়ের নাম করে টাকা ছাপাতে হবে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমি পুঁজিবাজার নিয়ে বসব সেই দিন আপনারাও বসবেন। সেই দিন তারা যদি একটা প্রমাণ করতে পারে সরকার তাদের পক্ষে ছিল না, বা আমরা তাদের বিপক্ষে অথবা এই কারণে পুঁঁজিবাজারে এটা হচ্ছে, তাহলে আপনারা আমাকে বলতে পারেন। আমি তাদের সব সাপোর্ট দিয়েছি। আমার কাজটি হচ্ছে তাদের সাপোর্ট দেয়া, আমি তো বাজারে ঢুকতে পারব না। পুঁজিবাজার ঠিক হয়ে যাবে আশা করছি।
ভালো ভবিষ্যতের জন্য একটি মজবুত অর্থনৈতিক ভিত দরকার জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক জুবিদা খেরুজ এলাউয়া বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি যেভাবে এগোচ্ছে তা প্রশংসাযোগ্য। বাংলাদেশের ডেট টু জিডিপিও (জিডিপির তুলনায় ঋণ) ভালো। এটা একটি সরকারের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নির্দেশ করে। বিশ্বব্যাংক কিছু টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, রেগুলেটরি রিফর্ম এবং পলিসির উন্নয়নে সহায়তা করবে। বন্ড মার্কেট ও শেয়ারবাজারের উন্নয়নে পুরো কাজটাই সমন্বিতভাবে করা হবে।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Nasir Hazary Bin Ahad ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১৩ এএম says : 0
খুব দ্রুত সরকার নিজেকে দেউলিয়া ঘোষনা করবে।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১৩ এএম says : 0
সরকার টাকা খুঁজছে সঞ্চয় পত্রে কর বসিয়ে সরকার টাকা খুঁজছে গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সরকার টাকা খুঁজছে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে সরকার টাকা খুঁজছে মহাসড়কে টোল বসিয়ে সরকার টাকা খুঁজছে তেলের দাম বাড়িয়ে.......
Total Reply(0)
Shamaun Iqbal Shamun ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১৪ এএম says : 0
আমরাও তাই মনে করি! সরকারের টাকার কোনো অভাব নাই!! অভাব শুধু সামান্য সুমতি, শুভবুদ্ধি আর সদিচ্ছার!
Total Reply(0)
Anowar Hossain ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
সরকারি, আধা সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থার কাছে ২ লাখ ১২ হাজার কোটি টাকা অলস পড়ে আছে। এর একটি অংশ রাষ্ট্রীয় হিসাবে আনতে সরকার একটি আইন করতে যাচ্ছে That's mean we are going like Vanijwella
Total Reply(0)
Shafiqur Rahman ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:১৫ এএম says : 0
টাকার অভাব না হলে দয়া করে শেয়ার মার্কেটে কিছু দেন।২৮ লাখ বিনিয়োগ কারিদের বাঁচান। টাকার অভাবে মার্কেট আজ পতনে নিমজ্জিত।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন