শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কাশ্মীর সঙ্কট সমাধানে ট্রাম্পের প্রতি সিনেটরদের চিঠি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫২ পিএম

কাশ্মীর সঙ্কট সহ ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সৃষ্ট সব বিরোধ সমাধানে প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে তার প্রভাব ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান। এর মধ্যে রয়েছেন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন, টড ইয়াং, বেন কার্ডিন ও লিন্ডসে গ্রাহাম। তারা বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে ভারত দখলীকৃত কাশ্মীরে মানবাধিকার পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ৫ই আগস্টের আগে-পরে আটক রাখা হয়েছে অনেক মানুষকে। ট্রাম্প যেন তার প্রভাব ব্যবহার করে এসব মানুষকে মুক্তির ব্যবস্থা করেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।

ওই চিঠিতে ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে তারা লিখেছেন, আপনার প্রতি আমাদের অনুরোধ- ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রতি আপনি আহ্বান জানান কাশ্মীরে টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি চালু করতে, অচলাবস্থা ও কারফিউ তুলে নিতে এবং আটক কাশ্মীরিদের মুক্তি দিতে। তারা চিঠিতে লিখেছেন, কাশ্মীর পরিস্থিতিতে আমরা এই চিঠির মাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। কাশ্মীরের এ পরিস্থিতি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর ভয়াবহ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে চিঠিতে আরো বলা হয়, কাশ্মীরের মর্যাদা বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য সব পক্ষকে সহায়তা করা আপনার লক্ষ্য। আমরা আপনার এ লক্ষ্যকে সমর্থন করি। কিন্তু (কাশ্মীরে) এখন যে মানবিক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে তা বন্ধে অবিলম্বে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ওদিকে আলাদাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও’র কাছে একটি চিঠি লিখেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন কংগ্রেসওম্যান প্রমিলা জয়াপাল। কাশ্মীরে সব রকম যোগাযোগ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ভারতীয় অবরোধ তুলে নিতে, আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে ভারতের প্রতি চাপ সৃষ্টির জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন পম্পেওর প্রতি।

ওদিকে ট্রাম্পকে যে চারজন সিনেটর প্রথম চিঠি লিখেছেন তাতে স্বাক্ষরকারী একজন সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম হলেন দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা। অন্যজন করাচিতে জন্ম নেয়া সিনেটর ভ্যান হোলেন। এর আগে গত ২২ শে জুলাই কাশ্মীর ইস্যু ও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধপূর্ণ অন্যান্য ইস্যুতে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই কথা তাকে আবারো স্মরণ করিয়ে দেন এসব সিনেটর। তারা এ কথা স্মরণ করিয়ে লিখেছেন, আপনি জুলাইয়ে সহায়তার যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সেকথা অনুযায়ী আমরা বিশ্বাস করি ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ নিয়ে যোগাযোগ বা সংশ্লিষ্টতা কাশ্মীরের সব মানুষের স্বস্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এই মানবিক সংকট সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে যুক্তরাষ্ট্রের। আমরা আপনাকে আহ্বান করছি যত দ্রুত সম্ভব সেই ভূমিকা পালন করুন।

গত ২২ শে জুলাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সঙ্কট সমাধানে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন। পাকিস্তান এ প্রস্তাবে সমর্থন দিলেও, প্রত্যাখ্যান করে ভারত। এর কয়েকদিন পরেই ৫ই আগস্ট তারা কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে। কাশ্মীরে ভারত মোতায়েন করে হাজার হাজার সেনা সদস্য। জারি করে কারফিউ। বন্ধ করে দেয় সব রকম যোগাযোগ। এ বিষয়টি উল্লেখ করেছেন সিনেটররা। তারা চিঠিতে লিখেছেন, সব কিছু এভাবে বন্ধ করে দেয়ায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। এতে স্থানীয় অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

পাবলিক সেফটি অ্যাক্টের অধীনে কাশ্মীরে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০০০ মানুষকে আটক করা হয়েছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে মার্কিন এসব রাজনীতিক ওই আইনটি সম্পর্কে বলেছেন, এটা একটি বিতর্কিত আইন। এ আইনের অধীনে যেকাউকে কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়াই দু’বছর পর্যন্ত জেলে আটকে রাখতে পারে কর্তৃপক্ষ। এসব আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় রাজনীতিক, নেতাকর্মী, শিক্ষাবিদ ও শিক্ষার্থী। কাশ্মীরের নির্যাতিত জনগণকে স্বস্তি দেয়ার জন্য নিজের প্রভাবকে ব্যবহার করতে ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, প্রতিটি দিন পাড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাশ্মীরি জনগণের অবস্থা আরো জটিল হয়ে উঠছে। এক্ষেত্রে পাকিস্তানের ভিতরে যেসব সন্ত্রাসী বা জঙ্গি গোষ্ঠী আছে তাদেরকে সমর্থন ও নিরাপদ আশ্রয় দেয়া অবশ্যই পাকিস্তানকে বন্ধ করতে হবে। কাশ্মীর উত্তেজনা অস্থিতিশীলতার দিকে যায় এমন পদক্ষেপ নেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন