শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

পুলিশের দক্ষতা বাড়াতে মানসম্মত প্রশিক্ষণ যথাযথ পদায়ন ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছে সরকার- প্রধানমন্ত্রী

রাজশাহী ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৫ পিএম | আপডেট : ২:১৩ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুলিশকে দক্ষ বাহিনী হিসাবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। বর্তমান সময়ে অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুজব রটিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এদের আইনের আওতায় আনতে হবে। পুলিশের দক্ষতা বাড়াতে মানসম্মত প্রশিক্ষণ যথাযথ পদায়ন ও প্রনোদনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। প্রশিক্ষণ সমাপ্তকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের বন্ধু হিসাবে নিজেকে গড়ে তুলবেন নিজ দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সাথে পালন করবেন। দেশের মানুষের সেবক হিসাবে কাজ করবেন। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। পুলিশ বাহিনীকে সাজানো হচ্ছে। বিশেষায়িত ইউনিট গঠন করা হয়েছে। পদ সৃষ্টি করে বাহিনীর জনবল বাড়ানো হচ্ছে।

শুরুতেই জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু চার জাতীয় নেতা ও মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। স্বাধীনতা সংগ্রামে পুলিশের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৫এর কালো মার্চে পুলিশ বাহিনী হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে শহীদ হয়েছেন। আমরা বাংলাদেশ পুলিশকে স্বাধীনতা পদক ২০১১’ এ ভূষিত করেছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, পুলিশের নবীন কর্মকর্তারাও তাদের পূর্বসূরিদের ন্যায় দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব ও অসীম সাহসিকতার সঙ্গে দেশের কল্যাণে কাজ করে যাবেন।
তিনি বলেন, ১৯৭২ সালের ৯ মে বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম প্রশিক্ষণ সমাপণী কুচকাওয়াজ এ সারদায় অনুষ্ঠিত হয়। সেই কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু তার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে সর্বদাই এ দেশের পুলিশকে জনগণের পুলিশ হিসেবে গড়তে অনুপ্রাণিত করেছেন।
তিনি রবিবার সকালে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমীর প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩৬তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের শিক্ষানবীস সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ হেলিকপ্টারে সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন। সকাল এগারোটায় প্রধানমন্ত্রী এবং ৩৬তম বিসিএস সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপণী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি সুসজ্জিত খোলা জিপে চড়ে বর্ণাঢ্য প্যারেড পরিদর্শন এবং সহকারী পুলিশ সুপারদের অভিবাদন গ্রহণ করেন।

প্যারেড কমান্ডার শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার শাহিন আক্তার ও সহকারী প্যারেড কমান্ডার রবিউল ইসলাম খানের নেতৃত্বে এক এক করে মোট ৮টি কন্টিনজেন্ট প্যারেড অংশগ্রহণ করে। ৮টি কন্টিনজেন্ট থাকা মোট ১১৭জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার মার্চপাস্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম জানান। এরপর পতাকাবাহী দল, পুলিশ একাডেমির বিশেষ অশ্বারোহী দল ও সর্বশেষ বাদক দল একে একে মার্চপাস্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে সালাম ও অভিবাদন জানান।

এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণের সময় বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে ট্রফি বিতরণ করেন। পরে তিনি নবীন এই পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী একাডেমি চত্বরে একটি আম গাছের চারা রোপন ও শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারগণের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারগণ হলেন- ‘বেস্ট শ্যুটার’ খায়রুল কবির, ‘বেস্ট ফিল্ড পারফমার’ আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, ‘বেস্ট হর্সম্যানশিপ’ সালাহউদ্দিন, ‘বেস্ট একাডেমিক’ সাইফুল ইসলাম খান এবং বেস্ট প্রবেশনার সালাহ্ উদ্দিন। প্যারেডে ১৭ জন নারী অফিসারসহ ১১৭ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার অংশগ্রহণ করেন।

সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী, সংসদ সদস্যরা, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল মো. নজিবুর রহমান, সরকারের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা, বিদেশি কূটনীতিকরা, অতিরিক্ত আইজিপিরা, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা, মুক্তিযোদ্ধা, রাজশাহীর গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপরাধের ধরণ প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। গতানুগতিক অপরাধের পাশাপাশি সাইবার ক্রাইম, মানিলন্ডারিং, মানবপাচার ইত্যাদি বৈশ্বিক অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদকের মত অশুভ সামাজিক ব্যাধি। সমাজ থেকে এসব অপকর্ম নির্মূলে এবং সমসাময়িক সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে সবসময় সচেষ্ট থাকতে হবে। জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ পুলিশের অব্যাহত সাফল্য শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। এদেশের মাটিতে কোনভাবেই জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও যুদ্ধাপরাধীদের ঠাঁই হবে না।

তিনি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার বিগত ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর এদেশের সার্বিক উন্নয়ন ও জনমানুষের জীবনযাত্রার মানন্নোয়নের লক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছিল প্রতিটি সেক্টরেই আজ কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশেও আমাদের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। যােগাযােগ খাতে আমাদের যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। এছাড়া মেট্রোরেল এবং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যেই জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষনা করেছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Mohammed Shah Alam Khan ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:৫৯ পিএম says : 0
প্রধানমন্ত্রী খুবই ভাল কথা বলেছেন তারপরও নিন্দুকেরা এটা নিয়ে বিভিন্ন কথা বলে বেড়াচ্ছে। তাদের কথা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কথা যেমন তাঁর সোনার ছেলে ছাত্র লীগ শুনে না তেমনি দেশের রাজা পুলিশও ওনার কথা শুনেন না। আবার অনেকে বলছেন প্রধানমন্ত্রী দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করার জন্যে পুলিশের পেছনে যে অর্থ ব্যয় করছে এটা প্রশংসার দাবীদার। এরউপর আবার নিন্দুকেরা বলছে পুলিশকে যতই উন্নত করা হচ্ছে তারা (পুলিশ) ততই উন্নত ভাবে তাদের পকেট ব্যাবসাকে উন্নত করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিরলশভাবে দেশের জন্যে যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এটা অবশ্যই প্রশংসার দাবীদার। আর সেজন্যে তিনি আন্তর্জাতিক ভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এখন আমাদের প্রশাসন যন্ত্রের লোকজন তাঁর এই প্রচেষ্টাকে সঠিক ভাবে রূপায়ন করছে না এজন্যে নেত্রী হাসিনার কি করার আচ্ছে এটাও অনেকের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই মনে করেন আমাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অন্তত্য নেত্রীর আদর্শে আদর্শবান হয়ে মাঠে কাজ করতে পারতেন তাহলেও দেশের আমূল পরিবর্তন আসতে বাধ্য। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে আমাদের কথা মত কাজ করার ক্ষমতা দান করুন। আমিন
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন