শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

সউদীতে হামলার জন্য দায়ী ইরান : যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

সউদী আরবের তেল শিল্পক্ষেত্রে হামলার জন্য সরাসরি ইরানকে দায়ী করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। শনিবারের হামলায় ইয়েমেনের সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দিয়ে তিনি ইরানকে দায়ী করেছেন, পাশাপাশি তেহরানের ক‚টনৈতিক ‘ভানের’ নিন্দাও করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইয়েমেনের ইরানঘনিষ্ঠ হুতিরা সউদী আরবের তেল শিল্পের কেন্দ্রস্থলের দুটি প্লান্টে ড্রোন হামলার দায় স্বীকার করেছে। আক্রান্ত দুটি প্লান্টের একটিতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেল শোধনাগার রয়েছে। এ হামলায় সউদীর তেল উৎপাদন কমে অর্ধেক হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। হুতিরা দায় স্বীকার করলেও টুইটারে পম্পেও বলেছেন, হামলাগুলো ইয়েমেন থেকে হয়েছে এর কোনো প্রমাণ নেই। রুহানি আর জারিফ যখন ক‚টনীতিতে ব্যস্ত থাকার ভান করছেন তখন তেহরান সউদী আরবে প্রায় ১০০টি হামলা চালিয়েছে। উত্তেজনা নিরসনের এত আহ্বানের পরও ইরান বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহে নজিরবিহীন আঘাত হেনেছে। আমরা বিশ্বের সব দেশকে প্রকাশ্যে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে ইরানি হামলার নিন্দা জানানোর আহ্বান জানাচ্ছি, বলেছেন তিনি। মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে তার ‹আগ্রাসী ভ‚মিকার জন্য জবাবদিহি› করতে কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। রয়টার্স জানিয়েছে, পম্পেও এসব দাবি করলেও তার দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ দিতে রাজি হয়নি মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বছরখানেকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র-ইরানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর স¤প্রতি ক‚টনৈতিক যোগাযোগের পথ উন্মোচিত হওয়ার যে সামান্য আভাস দেখা গিয়েছিল পম্পেওর টুইটে তার উল্টো সুর দেখা যাচ্ছে বলে ভাষ্য পর্যবেক্ষকদের। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টুইট তেহরানের প্রতি ওয়াশিংটনের কট্টর অবস্থানেরই ইঙ্গিত, বলছেন তারা। স¤প্রতি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সঙ্গে বৈঠকে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এ ধরনের বৈঠক কোনো প‚র্বশর্ত ছাড়াই হতে হবে বলে শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও। অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আগ পর্যন্ত তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো ধরনের বৈঠকে বসবে না বলে জানিয়েছেন রুহানি। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, ইরান যে শান্তিতে নয়, উল্টো পারমাণবিক অস্ত্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের কর্তৃত্ব নিতে বেশি আগ্রহী শনিবারের হামলাই তার নজির। ইরান যদি এ ধরনের উস্কানি কিংবা তাদের পারমাণবিক সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদের তেল শোধনাগারে হামলার বিষয়টি ভাবার সময় হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের, বলেছেন তিনি। মার্কিন কংগ্রেসের অনেক সদস্য অবশ্য পম্পেওর অভিযোগ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। এটা এক ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন সরল বক্তব্য আর এভাবেই আমরা অহেতুক যুদ্ধে জড়িয়ে যাই। ইরান হুতিদের সমর্থন দিচ্ছে এবং তারা খারাপ পক্ষ; কিন্তু এর মানে এত সরল নয় যে হুতি আর ইরানকে এক করে দেখতে হবে, বলেছেন মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট সদস্য ক্রিস মারফি। গতবছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটনকে ২০১৫ সালে স্বাক্ষরিত ইরান পরমাণু চুক্তি থেকে বের করে আনলে ওয়াশিংটন-তেহরান উত্তেজনার পারদ ফের চড়তে শুরু করে। এরপর পুরনো সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার পাশাপাশি ইরানের উপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন, যা ইরানের অর্থনীতিকে অনেকখানিই পঙ্গু করে দিয়েছে বলে ধারণা বিশ্লেষকদের। এতে দেশ দুটির মধ্যে বিদ্যমান উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। রয়টার্স, সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন