আইনি প্রক্রিয়ায় বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি মিলবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেল। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে কঠিন আন্দোলনের প্রয়োজন। যেই আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটবে এবং বেগম জিয়া মুক্ত হবে। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক প্রসঙ্গে হাবীব উন নবী সোহেল বলেন, ‘শুধুমাত্র তাদেরকে পদচ্যুত করলেই হবে না। তারা অপরাধী, তাদের বিচার করতে হবে। আজকের এই মানববন্ধন থেকে বলতে চাই, যারা সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ে থেকে ছাত্র রাজনীতিকে কলঙ্কিত করেছেন, ছাত্র রাজনীতির ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছেন তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা উচিত। তাদের বিচার হবে না, এমনটি হতে পারে না।
তিনি বলেন, এদের (শোভন-রব্বানী) তো বয়স বেশি না। এদের তো গডফাদার আছে। বড় ভাই আছে। যারা এদেরকে চাঁদাবাজি শিখিয়েছে। শুধুমাত্র এই দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেই হবে না, যারা এদেরকে চাঁদাবাজি শিখিয়েছে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে সোহেল বলেন, আমি জানি, হয়তো ওবায়দুল কাদের সাহেব কালকেই বলবেন ৮৬ কোটি টাকা কি কোনও টাকা হলো? তিনি বলবেনইবা না কেন, যে দেশে পর্দার দাম ৭০ হাজার টাকা আর বালিশের দাম পড়ে ৭ হাজার টাকা সেই দেশে কাদের সাহেবদের জন্য ৮৬ কোটি টাকা তো কোনও টাকাই না!
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ‘দুর্ভাগা’ উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে দুর্ভাগা বলছি এই কারণে যে, দেশে এখন নিম্ন আদালতে বিচার পাওয়া যায় না, উচ্চ আদালতে বিচার পাওয়া যায় অনেক ক্ষেত্রে। কিন্তু আমাদের নেত্রী দুর্ভাগ্যবান এই কারণে যে, তিনি নিম্ন আদালতের বিচার তো পেলেনই না, উচ্চ আদালতের বিচার থেকেও বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী ন্যায়বিচার চেয়ে যখন আদালতে আবেদন করেন দুঃখজনক হলেও সত্যি উনাদের (বিচারকদের) প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, উনারা যেন আমাদের নেত্রীকে ন্যায়বিচার দেয়ার মধ্যে নিজেদেরকে তখন এসকে সিনহা সাহেবের পরিণতির কথা ভাবেন। ওনাদেরকে (বিচারকদের) বলবো- বাঘ হতে হবে এমন কোনও কথা নেই। আমরা প্রত্যাশা করি, ন্যায়বিচার প্রদানে আপনারা ‘বাঘের মতো’ হবেন। বাঘ হতে না পারলেও বাঘের লেজ তো হবেন। আমাদের নেত্রী বিচার চান, আর কিছুসংখ্যক বিচারক শুনানি শেষ করে দশ মিনিটের ব্রেক দেন। এটা আবার কীসের ব্রেক? ১০ মিনিটের ব্রেক মানে লাল টেলিফোনের ব্রেক।
সোহেল বলেন, আমরা দেখেছি, সাজা হওয়ার পরেও নাজমুল হুদা, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়াসহ আরও অসংখ্য নেতা জামিনে মুক্ত হয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ কোর্টের ফরমায়েশি রায়ের মাধ্যমে আমাদের নেত্রীকে সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তিনি জামিন পান না। এর নাম কি ন্যায়বিচার?’
বিচারকদের উদ্দেশ্যে সোহেল বলেন, আমরা কী বলব আপনাদেরকে? ইহকালে যদিও পার পেয়ে যাবেন কিন্তু পরকালে যে আদালত বসবে সেখানে কিন্তু আপনারা বিচারকের চেয়ারে বসবেন না। আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াবেন। আমাদের নিরাপরাধ নেত্রী জামিন পাবেন না, অথচ হুদা সাহেব মায়া সাহেবরা মুক্ত বিহঙ্গের মতো ঘুরে বেড়াবেন এটা আমরা মানতে পারি না।’
হাবিব উন নবী সোহেল বলেন, যখন দেশের প্রচলিত আদালতগুলোতে ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ রুদ্ধ হয়ে যায় দেশের সাধারণ মানুষ যখন আদালত থেকে প্রচলিত আইনে বিচার পায় না তখন সবার মুক্তির লক্ষ্যে আর একটি আদালত তৈরি হয়ে যায়। সেই আদালতের নাম জনতার আদালত। সেই আদালতে জানালা নাই খাস কামরা নাই লাল টেলিফোনও নাই। জনতার সেই আদালত ইতোমধ্যে বসেছে। সেই আদালতে বেগম জিয়া নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মাহাতাবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আবদুর রহীম প্রমূখ বক্তব্য দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন