বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশে ৫টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়বে আরব আমিরাত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৩৭ এএম

বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য কয়েকটি প্রকল্পসহ ৫টি মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ের কনরাড হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়। সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ’র (বিএইচটিপিএ) কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনে প্রায় ২৫টি নতুন বিনিয়োগ প্রকল্প বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামে সামনে উপস্থাপন করা হয়। যেখানে বিনিয়োগকারীরা সালমান এফ রহমান ও সফররত বাংলাদেশের সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তাদের প্রকল্প নিয়ে আলোচনা করেন। পাশপাশি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ১০ বিলিয়ন ডলার (৩৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন দিরহাম) বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীরা। এশিয়ান ইনফ্রাক্টাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) এর মতে ২০২১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে বার্ষিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। এআইআইবি তথ্য অনুসারে ২০১৭ সালে অবকাঠামোগত কাজে বিনিয়োগ দিগুণেরও বেশি হয়ে ৩১ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে হয়েছে। যা ২০১৮ সালে আরও বেড়ে ৪৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের বৃহত্তম ৩০তম দেশে পরিনত হতে হলে শুধু অবকাঠামো খাতে ৩২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন। সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগকে (এফডিআই) তরান্বিত করতে বাংলাদেশ একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করছে। ফলে গত বছরে বিনিয়োগের পরিমাণ ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে তিন দশমিক ৬১ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশে অর্থনীতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক স্থানীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগে আগ্রহ দেখে আমি অত্যন্ত খুশি। আমরা সব সময় চীন, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বড় ধরনের বিনিয়োগ দেখে আসছি। এখন আমরা বিশ্বাস করি জিসিসিভুক্ত দেশগুলো বিশেষ করে সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়, অপারেশনস এবং উচ্চতর রিটার্নের সুবিধা নেয়া উচিত। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জিসিসি ভুক্ত দেশগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগের প্রধান উৎস হতে পারে। দেশের ভবিষ্যত অর্থনীতি গঠনে সহায়তা করতে এ বিনিয়োগের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে।

সালমান এফ রহমান বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত আমাদের সর্বনিম্ন শ্রমিক খরচ ও স্বল্প পরিচালনা ব্যয় থেকে লাভবান হতে পারে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ও উপসাগরীয় অঞ্চলের বিনিয়োগকারী বন্ধুরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান সুযোগ নিয়ে লাভবান হতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক এই উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরগুলোতে আমরা ইউএই’র বিশাল কর্পোরেট কমিউনিটির সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাবো, যেন এই খাত থেকে বিনিয়োগের সুযোগ বের করা যায় এবং বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানো যায়। একই সঙ্গে ‘বাংলাদেশ সরকার ও বেসরকারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে বাংলাদেশ একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও ২৮টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করছে। মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলের ধারণা বাস্তবায়ন করতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ একটা সুযোগ।’

বাংলাদেশ ইকোনমিক ফোরামের লক্ষ্য হচ্ছে, সরকারী নীতি নির্ধারক, বেসরকারি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়িক মহলের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক তৈরি করা যেন তা বাংলাদেশসহ জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

বাংলাদেশীরাই আমিরাতের অর্থনীতিতে প্রধান বিনিয়োগকারী যেখানে ৫০ হাজার ব্যবসা বাংলাদেশী প্রবাসী মালিকানাধীন ও তাদের দ্বারা সফলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এইসব ব্যবসা থেকে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের ধারা শক্তিশালী করতে দিনব্যাপী বিনিয়োগভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৩০০ জনেরও বেশি সরকারি কর্মচারি, ব্যবসায়ীক নেতৃবৃন্দ, বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তারা অংশগ্রহণ করেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মাদ ইমরান বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ, জ্বালানী, বন্দর ও অবকাঠামো খাতে আমিরাতের ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার ফলে এই বছর দুই দেশের সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
ফখরুল ইসলাম ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০১ এএম says : 0
এত বড় বিনিয়োগ নিঃসন্দেহে দেশের জন্য দারুন সুসংবাদ, কিন্তু মনে রাখতে হবে শিল্পায়ন করতে গিয়ে যেন পরিবেশ বিপর্যয় না ঘটে। বিপুল জনসংখ্যাপীড়িত সীমিত এ ভুখন্ডে এমনিতেই কৃষি ও বনভুমি অস্তিত্বের সংকটে আছে।
Total Reply(0)
সাইফুল কবির ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
আজকের নেগেটিভ নিউজের কাভার নিউজ এটা, তাই নয় কি?
Total Reply(0)
সাইফুল কবির ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
আজকের নেগেটিভ নিউজের কাভার নিউজ এটা, তাই নয় কি?
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
Good job guys! It's a long journey to reach the point that we are in now.
Total Reply(0)
M Jasem ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
বক্তব্য খালি আমাদের বক্তারাই দিয়ে যান কিন্তু যারা বিনিয়োগ করবেন তাদের কোনো বক্তব্য আসলে দেখি না. একে বলা হয় মূর্খ জাতিকে আরো মূর্খ বানাই.
Total Reply(0)
Md. Lutfar Rahman ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
Dear all concerned, We are hopeful for invest from the investor. But government should ensure safety of everything and make our nation/ all concerned government officer's, MP, minister corruption free. If it's possible to do like that, investor will come in our country to invest because of cheap wages.
Total Reply(0)
Jahidul Islam ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
বিদেশিদের বড় বড় বিনিয়োগে আজ চীন ভিয়েতনাম মালয়েশিয়া সিংগাপুর হংকং তাদের আর্থিক সক্ষমতা এইস্থানে নিয়ে এসেছে। আমাদের অগ্রগতি বড় বড় বিনিয়োগের উপর নির্ভরশীল। এটাই খুব দরকার। যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার কোন দরকার নাই। এই খেলা খেললে কেউ বিনিয়োগে আসবেনা। যেমন পাকিস্তান।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
যাক দেশের টাকা দেশেই আসছে। কতৃপক্ষের আর সুইস ব্যাংকে উঁকি মারতে হবে না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন