পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জম্মু-কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন ও বিশেষ অধিকার বাতিল করায় ভারতের সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, কাশ্মির নিয়ে ভারতের সঙ্গে পারমাণবিক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ভারতের সঙ্গে প্রচলিত যুদ্ধে পাকিস্তান হয়তো হেরেও যেতে পারে। এই হারের পরিণাম হবে ভয়াবহ। একই সঙ্গে ইমরান খান নিজেকে যুদ্ধবিরোধী দাবি করে বলেছেন, পাকিস্তান কখনও পারমাণবিক যুদ্ধ শুরু করবে না।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার এক বছর পূর্তিতে ইমরান খানের এই সাক্ষাৎকার নেয় আল জাজিরা। ‘নয়া পাকিস্তান’ ¯েøাগানে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল ও দুর্নীতিরোধের প্রতিশ্রæতি দিয়ে ক্ষমতায় আসেন তিনি। তবে তার শাসনামলের প্রথম বছরে পাকিস্তানের অর্থনীতি আরও অবনতির দিকে গেছে। তার শাসনামলে পাকিস্তানি রুপির মূল্য কমেছে ৩৫ শতাংশ।
ইমরানের সমালোচকরা তাকে ‘ইউটার্ন প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। তাদের দাবি, অনেক নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনও পদক্ষেপ তিনি নিচ্ছেন না। সমালোচনার বিষয়ে আল জাজিরাকে ইমরান বলেন, তারা আমাকে এমন সমালোচনা করছে বলে আমি গর্বিত। শুধু নির্বোধরাই কোনও ইউটার্ন নেয় না। গাধা যখন কোনও পথে এগিয়ে যায় এবং সামনে কোনও ইটের দেয়াল পড়ে তখন ওই গাধা দেয়ালে নিজের মাথা ঠুকতে থাকে। বুদ্ধিমান মানুষ তাৎক্ষণিক তার কৌশল পাল্টায় এবং ঘুরে যায়।
পররাষ্ট্র বিষয়ে ইমরান জানান, প্রতিবেশী চীনের সঙ্গে যেকোনও সময়ের তুলনায় ভালো সম্পর্ক রয়েছে পাকিস্তানের। কিন্তু অন্য প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খুব ভালো নেই। ভারতের সঙ্গে বড় ধরনের সংঘাত ও যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান। বলেন, ছয় সপ্তাহ ধরে কাশ্মিরের ৮০ লাখ মুসলমান অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে রয়েছে। এ কারণেই এটা ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছে। ভারত কাশ্মিরে অবৈধ দখল ও গণহত্যা থেকে নজর ঘুরাতে চাইছে। তারা পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের জন্য দায়ী করে মনোযোগ অন্যদিকে দিতে চাইছে।
ইমরান বলেন, পাকিস্তান কখনও যুদ্ধ শুরু করবে না। আমি নিশ্চিত যে, আমি একজন শান্তিবাদী, আমি যুদ্ধবিরোধী। আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধ কোনও সমাধান দেয় না। তবে তিনি আরও যুক্ত করেন, যখন দুই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র যুদ্ধ করে, তারা যদি প্রচলিত যুদ্ধে জড়ায় তাহলে তা পারমাণবিক যুদ্ধে রূপ নেওয়া সব ধরনের আশঙ্কা রয়েছে। এটা একেবারেই ভাবা যায় না।
পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলে চলেন, আল্লাহ না করুন, যদি আমরা প্রচলিত যুদ্ধ করি এবং যদি আমরা হেরে যাই, আমরা যদি এমন পরিস্থিতি পড়ি যে, হয় আত্মসমর্পণ করতে হবে অথবা স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে; আমি জানি পাকিস্তানিরা তাদের স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লড়াই করবে। তাই, যখন পারমাণবিক শক্তির দেশ শেষ পর্যন্ত যুদ্ধরত থাকে তখন সেটার পরিণতি ভয়াবহ হয়। এই কারণে আমরা জাতিসংঘের দ্বারস্থ হয়েছি। সব আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছে যাচ্ছি। কারণ, যুদ্ধের সম্ভাব্য ভয়াবহতা দক্ষিণ এশিয়া ছাড়িয়ে যাবে। সূত্র : এসএসএম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন