শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সাবেক স্বামীর হাতে খুন হন এনজিওকর্মী হাসি

হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা সাবেক স্বামীর

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

প্রেম করে সোহেলকে বিয়ে করেছিলেন হাসি। কিন্তু স্বামী সোহেলের অত্যাচার-নির্যাতনে কয়েক মাসের মধ্যেই দূরত্ব তৈরি হয়। এরপর আলাদাভাবে বাঁচার চেষ্টা করেন হাসি। সোহেলকে ডিভোর্স দিয়ে সুখের আশায় চাকরিও নিয়েছিলেন তিনি। সময়গুলো ভালোই কাটছিলো।
গত ১ মে সাভারের আমিনবাজারের একটি ভাড়া বাসায় হাজির হয় সোহেল। তারপর বেদম মারধরে অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলে এক পর্যায়ে সোহেল ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে হাসিকে।

চাঞ্চল্যকর হাসি আক্তার হত্যা মামলার আসামি সোহেলকে গত রোববার সন্ধ্যায় কুমিল্লা শহরের ধর্মসাগর এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪। র‌্যাবের কর্মকর্তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল হত্যাকান্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে কাওরানবাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক এ সব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, গত জানুয়ারিতে হাসির সঙ্গে সোহেল রানার বিয়ে হয়। বিয়ের চার মাস পর তাদের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় বিচ্ছেদ হয়। বিচ্ছেদের পর হাসি মানসিকভাবে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েন। পরে একটি এনজিওতে চাকরি নেন। তিনি আমিনবাজারের শিবপুর গ্রামে ভাড়া বাড়িতে বসবাস করতেন। এ সময় সোহেল হাসিকে তার অফিসে আসা-যাওয়ার পথে এবং ভাড়া বাসায় গিয়ে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত এবং টাকা দাবি করে। এতে সোহেলকে বাধা দেয় হাসি। কিন্তু সোহেল আরও বেশি করে তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে।

গত ১ মে সকালে হাসির বাসায় জোর করে ঢুকে তার কাছে টাকা দাবি করে সোহেল। টাকা দিতে অস্বীকার করলে হাসিকে এলোপাতাড়িভাবে চড়, থাপ্পর, কিল ও ঘুষি মারতে থাকে। এতে চোখে এবং মাথার এক পাশে মারাত্মক আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। সোহেল হাসির চুল ধরে ফ্লোরের টাইলসের সঙ্গে মাথায় আঘাত করতে থাকে এবং খাটের নিচে থাকা ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে।

এক পর্যায়ে হাসির মৃত্যু হয়েছে ভেবে সোহেল আলমারির ড্রয়ার থেকে তিন ভরি সোনার অলঙ্কার ও নগদ ত্রিশ হাজার টাকা নিয়ে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। পরে বাড়ির মালিক হাসিকে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ছয়দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর ৭ মে তিনি মারা যান।

র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, এ ঘটনায় হাসির মা বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি মামলা করেন। আসামি এবং তার পরিবার মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে হত্যার হুমকি দিতে থাকে। মামলার গুরুত্ব বিবেচনা করে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব-৪ মামলাটির ছায়া তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে পলাতক সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। সোহেল রানা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর থানার বিদ্যাকুট গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র। হত্যার ঘটনার পর ৫ মাস আত্মগোপনে ছিল সোহেল। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
শফিক রহমান ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫১ এএম says : 0
রেব-4 এর সদস্যদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ
Total Reply(0)
Zobaer Hoossain Zobaer ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫১ এএম says : 0
জাতি আদালতের নিকট সঠিক বিচার প্রত্যাশিত
Total Reply(0)
Asgor Ali ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
Very sad
Total Reply(0)
Mahabub Hasan Prince ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
মাদকের হিংস্র পরিণতি
Total Reply(0)
F.i. Rashed ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
দয়া করে উনাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধার অভিযানে যাওয়া হোক, এই সব জানোয়ারেরা বিয়ে করে সাময়িক উত্তেজনা আর টাকার খায়েশ মেটাতে। চাহিদা অনুযায়ী না পেলেই হত্যা করে, কোন না কোনদিন এ আবার বের হবে, আরেকটা বিয়ে করবে আবার হত্যা করবে।
Total Reply(0)
Ahsan Habib ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
উনাকে কেন মারা হয়েছে সেটা তদন্ত করে বের করতে হবে
Total Reply(0)
Raihan Hossain ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
এই সরকারের আমলে কোনো অপরাধী পার পায় নি পাবেও না
Total Reply(0)
Ahsan Habib ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
যদি সে খুনের সাথে জড়িত থাকে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যে কোন কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। প্রতিটা অন্যায় এর এই রকম শাস্তি হলে। খুন করার সাহস হবে না মানুষের
Total Reply(0)
Ahsan Habib ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
সামাজিক অপরাধের জন্য সামাজিক আন্দোলন দরকার পাড়ায় পাড়ায় গ্রামে গ্রামে সর্বস্তরের জনগন ঐক্যবদ্ধ ভাবে এইসব কুলাঙ্গারদের প্রতিহত করুন
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন