শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজ নেতারা আতঙ্কে

প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি এবং জঙ্গিদের মত দুর্নীতিবাজ-চাঁদাবাজদের দমন করা হবে এমন হুঁশিয়ারিতে হঠাৎ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের দুর্নীতিবাজ নেতারা। দুর্নীতি বা চাঁদাবাজির জন্য কে কখন আলোচিত হন বা দল কখন কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা নিয়ে চরমভাবে উদ্বিঘœ হয়ে পড়েছেন সেই নেতারা। প্রধানমন্ত্রীর দফতরে অভিযোগ গিয়েছে কি না তা অনেকেই নিশ্চিত হবার চেষ্টা করছেন।

গত রোববার রাত থেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে অনেক নেতা যোগাযোগ করেছেন। গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গেও নেতারা বৈঠক করছেন যেন তাদের বিষয়ে অভিযোগ পাঠানো হয়েছে কি না এবং ভবিষ্যতে যেন অভিযোগ না পাঠানো হয় তা নিশ্চিত করার জন্য।

দলীয় সূত্র জানায়, শনিবার গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর অপসারণ এবং যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ও সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদের চাঁদাবাজি ও অস্ত্রবাজির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দলের মধ্যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে। টেনশনে পড়ে গেছে দুর্নীতিতে জড়িত চাঁদাবাজ নেতারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর টেনশনে পড়ে যায় যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের নেতারা। রোববার যুবলীগের কাকরাইলের অফিসে নেতাকর্মীরা তেমন আসেননি। নেতারা দিন থেকে রাত বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করেছেন যেন তাদের কমিটি না ভাঙা হয় এবং অন্য কোনো ব্যবস্থা যেন গ্রহণ না করা হয়। গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন যুবলীগ নেতারা। যেন যে কোনোভাবে এই বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। বিশেষ সূত্র জানায়, প্রত্যেক মহলেই বিশাল অংকের টাকা দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণ।

এদিকে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী জানিয়েছেন, নিজস্ব দলীয় ট্রাইব্যুনালে দলের অপরাধীদের বিচার করা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুবলীগের একাধিক নেতা বলেন, অপরাধ করে সবাই তবে এখন দোষ হচ্ছে সব যুবলীগ ঢাকা দক্ষিণের। একদিনেই সবাই হঠাৎ করে শত্রু হয়ে গেছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের এমন পরিস্থিতি দলের সকলেই যেন সাবধান হয়ে গেছেন। দলের মধ্যে যারা কমিটি নিয়ে বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর অভিজ্ঞ তারা হঠাৎ থমকে গেছেন। সমালোচিত হবার ভয়ে মানসিক টেনশনে পড়েছেন মন্ত্রী ও এমপিরা। প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রত্যেক এমপি ও মন্ত্রীদের কাজ, দক্ষতার বিষয়ে গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট প্রদান করে। সে রিপোর্ট ভাল যাচ্ছে না খারাপ যাচ্ছে তা নিয়ে এতোদিন এমপি-মন্ত্রীরা চিন্তা না করলেও এখন তা নিয়ে মাথার ঘাম ঝড়াচ্ছেন। কোন ধরণের বিতর্কের যেন তারা না পড়েন সে বিষয়ে অধ:স্তন নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন।

আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে আওয়ামী লীগের সকল জেলা ও উপজেলায় সম্মেলন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন সময় কমিটি নিয়ে বাণিজ্য হলেও এবার একটি অভিযোগও যেন না আসে সে ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকেরা নির্দেশনা দিয়েছেন তৃণমূলে। কোনো বিতর্কিত নেতা যেন কমিটিতে স্থান না পায় এবং বিগত সময়ে অনুপ্রবেশকারীদের তালিকা সাংগঠনিক সম্পাদকদের কাছে নির্ভুলভাবে দেয়ার জন্যও তাগিদ দেয়া হয়েছে।

সম্প্রতি নিজেদের বিতর্কমুক্ত করতে তাঁতী লীগ তাদের কেন্দ্রীয় সংগঠনের তিনজন নেতাকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি। গত রোববার তাদের বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কৃতরা হলেন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর বিশ্বাস, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নেছার আহম্মেদ, দফতর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম। ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ফাঁসি দাবি, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, ছবি পদদলিত করা এবং কমিটি বাণিজ্যে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে গতকাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলের ভেতরে যত বড় নেতাই হোক না কেন অপকর্ম করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Mamun Ahmed ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৪ এএম says : 0
সবার প্রতি নির্দেশ দেয়া আছে- যত পারো খাও, যা খুশী করো, কোন সমস্যা নাই। তবে মিডিয়া কিংবা সিসি ক্যামেরায় আসলে রেহাই নাই।
Total Reply(0)
Zia Rahman ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৫ এএম says : 0
Stop Corraption Then only Bangladesh can be a Sunar Bangla
Total Reply(0)
Mamun Al Rashid ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৭ এএম says : 0
বিএনপি অপরাধীদের আশ্রয় দেয়, কিন্তু আওয়ামী লীগ দেয় না। এটাই সবচেয়ে বড় পার্থক্য। এখন চীনের মতো বাংলাদেশেও রাজনৈতিক শুদ্ধি অভিযান অনতিবিলম্বে চালু করা উচিত।
Total Reply(0)
তন্ময় ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৭ এএম says : 0
চাঁদাবাজি ও নানা অনৈতিক কুকর্মের জন্য ছাটাই হওয়া ছাত্রলীগের নেতাদ্বয়ের বিরুদ্ধে কেন চাঁদাবাজির মামলা রুজু করা হইবেনা বলিয়া সু-মো-টো রুল নিশি জারি করা হোক!
Total Reply(0)
Maksud Khan ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৭ এএম says : 0
দলকে অবশ্যই আদর্শ ও নীতির উপর দাঁড়াতে হবে। নইলে দল একদিন বিপদে পড়বে।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৮ এএম says : 0
কারো পকেটে অনৈতিকভাবে পয়সা ঢুকলে, সেটা বের করে মালিককে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সবচেয়ে বড় সফলতা। শুধু দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিলে, পয়সাতো পকেট থেকে সরবে না।
Total Reply(0)
Nasir Hazary Bin Ahad ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ২:২৯ এএম says : 0
ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আশা করি এবার দুর্নীতিবাজরা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন