মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সিদ্ধিরগঞ্জে দুই শিশুসহ মাকে গলা কেটে হত্যা

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে তরিকুল ইসলাম নয়ন | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সিদ্ধিরগঞ্জে দুই শিশু সন্তানসহ মাকে নৃশংসভাবে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। আরোও এক শিশুকে ছুরিকাঘাতে জখম করা হয়েছে। গুরুতর আহত ওই শিশু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।

নিহতরা হলেন, নাজনীন আক্তার (২৮) ও তার দুই শিশু সন্তান আট বছর বয়সী নুসরাত ও দুই বছর বয়সী খাদিজা। আহত শিশু হলেন নাজনীনের বোনের মেয়ে পনের বছর বয়সী সুমাইয়া। আহত সুমাইয়া কিছুটা বাক প্রতিবন্ধী। নাজনীনের স্বামীর নাম সুমন। সে একটি পেট্রল পাম্পে কাজ করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটা থেকে নয়টার মধ্যে সিআই খোলা এলাকার আনোয়ার হোসেনের ৭ তলা বাড়ির ৬ তলার একটি ফ্ল্যাটে এ নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে।

সিআইডি ও পিবিআই ঘটনাস্থলের আলামত সংগ্রহ করেছে। হত্যাকাÐে ব্যবহৃত একটি ছুরি ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ উদ্ধার করেছে। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার হারুনুর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বলেছেন পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকাÐ সংঘটিত হয়েছে। খুনিকে সনাক্ত করা গেছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ সুপার বলেছেন, নিহত নাজনীনের ভগ্নিপতি আব্বাস তার স্ত্রীর সাথে ঝগড়ার জের ধরে এ খুন করেছে।

আহত সুমাইয়া সন্দেহভাজন প্রধান খুনি আব্বাসের নিজের মেয়ে। বিকেল তিনটায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছেন ময়না তদন্তের জন্য। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাড়ির দারোয়ান কবির হোসেন, নাজনীনের স্বামী সুমন ও বড় বোন জেসমিনকে বিকেল সোয়া তিনটার দিকে থানায় নেওয়া হয়েছে।

থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় জেসমিন জানান, গত মঙ্গলবার রাতে তার স্বামী আব্বাসের সাথে তার ঝগড়া হয়। এরপর সে তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে বোনের এ বাসায় চলে আসেন। সে আদমজী ইপিজেডের একটি গার্মেন্ট কারখানায় কাজ করেন। বৃহস্পতিবার সকালে তার বোন নিহত নাজনীন তাকে রান্না করে খাওয়ান। এরপর সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সে এ বাসা থেকে বের হয়ে কাজে চলে যান। সকাল ১০টার দিকে ঘটনার খবর পেয়ে তিনি বাসায় এসে দেখেন তার বোন নাজনীন, বোনের মেয়ে নুসরাত ও খাদিজার রক্তাক্ত লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। আর তার নিজের মেয়ে সুমাইয়া আহত অবস্থায় আছে। মেয়েকে ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করলে সে জানায় তার বাবা (আব্বাস) ছুরি দিয়ে তাদেরকে হত্যা করেছে। সে বাধা দিলে তাকেও তার বাবা ছুরিকাঘাত করে। নাজনীন আরোও জানায় তার সাথে স্বামী আব্বাসের ঝগড়ার জের ধরেই আব্বাস এ খুন করেছে।

নিহত নাজনীনের স্বামী সুমন বলেছেন, সে ডিউটি শেষে কাঁচাবাজার করে সকাল ৯টার দিকে বাসায় এসে দেখেন দরজা খোলা। ভিতরে ঢুকেই দেখেন তার স্ত্রী ও সন্তানদের গলাকাটা লাশ মেঝেতে পড়ে আছে। এ সময় তিনি চিৎকার আর আহাজারি করতে থাকলে পাশের ফ্ল্যাটের লোকজন ছুটে আসেন। এরপর খবর প্রথমে থানা পুলিশ এসে ঘটনাস্থলের আলামত সুরক্ষার জন্য বাড়ির নিচতলা থেকেই প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে দেয়। এরপর একে একে পিবিআই ও সিআইডর ক্রাইমসিন ইউনিট এসে আলামত সংগ্রহ করেন। বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের ঘটনা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য দেন। বিকেলে খুনের ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন আব্বাসকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল আাটক করেছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জের জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সন্ধ্যায় পুলিশ লাইন্সে সংবাদ সম্মেলনে জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে মা ও ২ মেয়েকে গলাকেটে হত্যার দায়ে গ্রেফতার ভগ্নিপতি আব্বাসই শ্যালিকা ও তার দুই মেয়েকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। সে তার আপন বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকেও রক্তাক্ত জখম করেছে। জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তার শ্যালক চড় মেরেছিল এবং প্রায়ই তার স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে শ্যালিকার (নাজমীনের) বাড়িতে চলে আসতো-এই কারণে সে ধারালো ছুরি দিয়ে তাদেরকে হত্যা করেছে। সে ইয়াবাসক্ত বলে এসপি জানান। হত্যাকাÐে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তার কাছ থেকে আরও তথ্যের জন্য রিমাÐের আবেদন জানানো হবে বলে এসপি জানান।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Omar Faruk ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
দেশের আইন সৃংক্ষলা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো অবস্থানে,,,,হা হা হা
Total Reply(0)
Faysalahammed Rabin ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:২৫ এএম says : 0
ঐই শিশূ বাচ্চাদের কি অপরাদ ছিলো
Total Reply(0)
Mannan Bhuiyan ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:২৬ এএম says : 0
Very Sad News
Total Reply(0)
মেরিন-500 ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:২৭ এএম says : 0
এমন নৃশংসতা মানুষ কেমনে করে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন