মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ফাইনালের মহড়ায় প্রস্তুত সাকিব-মাহমুদউল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

টসের সময়ও সাকিব আল হাসানের মুখে পরিচিত হাসিটা ছিল না। খেলা শেষে হাসি ফুটল বাংলাদেশ অধিনায়কের মুখে। সে হাসি স্বাভাবিক, যেন এমন কিছুই তো হওয়ার কথা ছিল! ত্রিদেশীয় সিরিজে আগের দুই ম্যাচের একটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এ দুটি ম্যাচের একটিতেও প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি দল। জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হওয়ার আগে অধিনায়ক সাকিবের মুখে তাই হাসি ফোটেনি। কিন্তু জয় তুলে নেওয়ার পর হাসি ফুটেছে, কারণ দল প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স দেখানোর পথে ফিরেছে।

সেটি ফাইনালে ওঠার জন্য না, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যেমন জয় প্রত্যাশিত চট্টগ্রামে তেমন কিছুই করে দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ১৭৫ রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই পিছিয়ে ছিল জিম্বাবুয়ে। বলা ভালো, শুরুতেই ছিটকে পড়েছে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের প্রথম ১০ ওভারেই ৫৬ রান তুলতে ৬ উইকেট হারায় দলটি। তাতে পুরো অবদানই বোলারদের। ফিল্ডাররাও ছিলেন ক্ষিপ্র। সাকিব তাই আপাতত সন্তুষ্ট। তবে বাংলাদেশের ইনিংস শেষে কিছুটা চিন্তা ভর করেছিল সাকিবের মনে। শেষ পাঁচ ওভারে যে দল সেভাবে রান তুলতে পারেনি। এ সময় ৪ উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছে ৪১ রান। শেষ রানটা জয়ের জন্য পর্যাপ্ত হলো তো? অধিনায়কের মন থেকে এ প্রশ্ন দূর করেছেন দলের বোলাররা। সাকিব তাই বোলারদের প্রাপ্য কৃতিত্বই দিলেন, ‘ব্যাটিংয়ে ভালো শুরু পেয়েছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশামতো শেষ করতে পারিনি। তবে বোলাররা দুর্দান্ত ছিল, ফিল্ডাররাও।’ ভালো ফিল্ডিং বোলারদের কীভাবে সহায়তা করেছে তার ব্যাখ্যাও দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘এটা (ফিল্ডিং) পাঁচ বোলারকেই সহায়তা করেছে কারণ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বোলারদের ম্যাচ জেতাতে খুব বেশি দেখা যায় না।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপপর্বে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। ফাইনালে রশিদ খানের দলেরই মুখোমুখি হতে হবে সাকিবদের। আগামীকাল গ্রুপপর্বের দু’দলের ম্যাচটি তাই পরিণত হয়েছে ফাইনালের মহড়ায়। তার আগে গ্রুপপর্বে লড়াইয়ে আফগানদের হারাতে পারাটা হবে মনস্তাত্তি¡ক দিক থেকে এগিয়ে যাওয়া। সাকিব তা ভালোভাবেই জানেন, তাই জয়ের সুরই ঝরল তাঁর কণ্ঠে, ‘পরের ম্যাচটা জিততে পারলে ফাইনালে যাওয়ার আগে তা মানসিকভাবে আমাদের এগিয়ে দেবে। টি-টোয়েন্টিতে এটি গুরুত্বপূর্ণ।’

সাকিবের মতো দলের আরেক সিনিয়র খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠেও ঝরল একই প্রত্যয়। বিশেষ করে দলের বাজে সময়ে জয় ছাড়া আর কিছুই ভাবছেন না অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার। দলের সবাই এই বাজে সময় কাটাতে মরিয়া, আর সে জন্য জয়ের বিকল্প নেই। মাহমুদউল্লাহ সে কথাই জানালেন, ‘সা¤প্রতিক সময়ে আমরা ভালো রেজাল্ট করছিলাম না। তাই সবার ভেতরেই ওই স্পৃহা ছিল। সবাই কথা বলেছিল এ নিয়ে। এখন আমাদের লক্ষ্য, আফগানিস্তানের সঙ্গে যেন একই (জিম্বাবুয়ে ম্যাচ) কিংবা আরও ভালো পারফরম্যান্স করে জিততে পারি। এবং ফাইনালের জন্য যেন তৈরি হতে পারি।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের ধরনকে গুরুত্ব দিচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ। আগে ব্যাট করে এক শ আশি ছুঁই ছুঁই স্কোর গড়ে ৩৯ রানের ব্যবধানে জিতেছে বাংলাদেশ। রান তাড়া করতে নেমে জিম্বাবুয়েকে কখনোই ম্যাচে থাকতে দেয়নি বাংলাদেশের বোলাররা। এ আত্মবিশ্বাসকে পরের ম্যাচে কাজে লাগাতে চান মাহমুদউল্লাহ, ‘আত্মবিশ্বাস তো অবশ্যই থাকবে। ফিল্ডিংয়ে নামার সময় সাকিবের সঙ্গে কথা হচ্ছিল, সম্ভবত ১০-১৫ রান কম হয়েছে। তারপরও বোলাররা যেভাবে ভালো বোলিং করেছে তাই এ সংগ্রহই বড় মনে হয়েছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে পরের ম্যাচটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা ওপরে আছে। তারা আছে ৭ নম্বরে আমরা সম্ভবত ১০ নম্বরে। তাই আমাদের অনেক ভালো খেলতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা যেন আত্মবিশ্বাসটুকু নিয়ে যেতে পারি ফাইনালে।’

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এ পর্যন্ত পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। একটা বাদে হেরেছে বাকি চার ম্যাচেই। আফগানিস্তানকে শেষবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ২০১৪ সালের মার্চে। এরপর শুধুই হার। পাঁচ বছরের এ খরা কাটাতেই গ্রুপপর্বের ম্যাচটা বাংলাদেশের জন্য এখন এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, আর ফাইনালের আগে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখার কৌশলটুকু তো থাকছেই। আগামী মঙ্গলবার শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল। এই সিরেজেও আফগানদের বিপক্ষে আগের ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। তার আগে হারতে হয়েছে টেস্টেও। ঘা-টা তাই এখনো দগদগে। দল যেহেতু ফাইনালে উঠে চনমনে মেজাজে আছে তাই ঘা যতটুকু সম্ভব শুকিয়ে নেওয়ার এটাই মোক্ষম সময়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন