মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

জয়ের অভ্যাস নিয়েই হোক স্বপ্নপূরণ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:১৫ এএম

ঢাকায় জিম্বাবুয়ের কাছে হারতে হারতে জিতেছে, আফগানিস্তানের কাছে জিততে জিতে হেরেছে। তবে চট্টগ্রামে ফিরেই দাপুটে এক বাংলাদেশকেই দেখেছে বিশ্ব। ধুন্ধুমার টি-টোয়েন্টির যুগে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের মহড়াই সেদিন দেখা গিয়েছে সাগরিকায়। আর তাতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দারুণ এক জয় পেয়েছে সাকিব আল হাসানের দল। তাতেই মিলেছে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনালের টিকেট। ফাইনালে উঠে গেছে আফগানিস্তানও। তাই লিগ পর্বে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচটি পরিণত হয়েছে নিয়মরক্ষার লড়াইয়ে। কিন্তু জিততে মরিয়া স্বাগতিক শিবির আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে ম্যাচটিকে। কারণ তারা চান জয়ের ধারাবাহিকতায় থেকে শিরোপার লড়াইয়ের মঞ্চে পা রাখতে। তার সঙ্গে আফগানদের বিপক্ষে জয়খরা ঘোচানো ও নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্য তো থাকছেই বাংলাদেশের।

একদিন বিশ্রামের পর আবার ব্যাট-বলের লড়াই। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল সকালে ঘাম ঝরিয়েছে বাংলাদেশ দল। দুই দলের আগের লড়াইয়ে বাংলাদেশকে পাত্তাই দেয়নি আফগানিস্তান। মিরপুরে ম্যাচ শেষে সেদিন বাংলাদেশ অধিনায়ক অকপটে বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টিতে অনেক বড় দল’। দুই দলের ক্রিকেটীয় স্কিল ও মানসিকতায় ব্যবধান যথেষ্ট। সেই ব্যবধান ঘুচিয়ে কিভাবে আফগানদের হারানো যায়, উপায় খুঁজছে বাংলাদেশ। আজ সেই প্রচেষ্টায় আরেকবার মাঠে নামবেন সাকিব-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা।
গতকাল দলের অনুশীলনে আফগান স্পিনারদের সামলানো নিয়ে কাজ করা হলো। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে পাল্টা জবাব দেওয়ার ভাবনা থাকতে পারে দলের, সেটির ইঙ্গিত মিলল নেটে অনুশীলনে। দারুণ পেশীশক্তির আফগান ব্যাটসম্যানদের থামিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ নিতে নেটে প্রস্তুতি সারলেন বোলাররা। সেই বোলারদের একজন শফিউল ইসলাম। দুই বছর পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরে আগের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিয়েছেন ৩ উইকেট। নতুন বলে কিছুটা সুইং করানোর সামর্থ্য বাংলাদেশের যে হাতে গোণা দুয়েকজন বোলারের আছে, শফিউল তাদের একজন।

কিন্তু চোট প্রবণতা ও অধারাবাহিকতা মিলিয়ে দলে থিতু হতে পেরেছেন কম সময়ই। ক্যারিয়ারে অসংখ্যবার দলে আসা-যাওয়ার পালায় এটি তার নতুন অধ্যায়। অনুশীলন শেষে দলের প্রতিনিধ হয়ে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হলেন ২৯ বছর বয়সী এই পেসার। জানালেন, ফাইনালের আগে আফগানদের হারাতে কতটা মরিয়া দল, ‘আমরা চেষ্টা করছি ভালো প্রস্তুতি নিতে। কালকের (আজ) ম্যাচটি আমাদের সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভালো খেলতে পারলে সেটি থেকে আমাদের সবার আত্মবিশ্বাস বাড়বে। জয়ের অভ্যাসটি আমাদের ফাইনালে ভালো খেলতে সহায়তা করবে। আমরা যদি আমাদের ভুলগুলি শোধরাতে পারি, নিজেদের কাজটি সবাই ঠিক মতো করতে পারি, শতভাগ দিতে পারি, তাহলে ওদের হারানো সম্ভব।’

সা¤প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ দলে ঘন ঘন পরিবর্তন আসছে। একের পর এক খেলোয়াড়দের দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ফল পাচ্ছেন না নির্বাচকরা। অবস্থার পরিবর্তন করতে আনকোরা তরুণদেরও তারা দলে এনেছেন। ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডারের পরিবর্তন আসছে যখন তখন। বেড়েছে স্পিনারদের প্রাধান্যও। তবে বোলিং আক্রমণ যেভাবেই সাজানো হোক না কেন, নিজেদের শক্তির জায়গাটা ধরে রাখতে বললেন শফিউল, ‘পেসাররা খেলুক বা স্পিনাররা, যদি নিজের শক্তির জায়গায় থেকে-শক্তির বাইরে না গিয়ে ঠিক জায়গাটায় তারা বল করে, তাহলে ভালো করা সম্ভব।’

এই আত্মবিশ্বাসের শুরুটা করে দিয়েছেন জিম্বাবুয়েকে গুড়িয়ে দেবার ম্যাচে ৪১ বলে ৬২ রানের ইনিংস খেলা জয়ের নায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সেদিনও তিনি জানিয়েছিলেন জয়ের ধারাবাহিতকায় ফেরা কতটা জরুরী, বলেছিলেন ফাইনালের আগেই আফগানদের বিপক্ষে জয় ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, ‘আমাদের পরবর্তী কাজ হচ্ছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে আরও ভালো পারফরম্যান্স করে জয় পাওয়া। যেন আমরা ম্যাচটা জিততে পারি এবং ফাইনালের জন্য তৈরি হতে পারি। সামনের জয়টি আমাদের আরও আত্মবিশ্বাসী করবে। আমার কাছে মনে হয় আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু র‌্যাঙ্কিংয়ে তারা আমাদের চেয়ে এগিয়ে। আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। চাওয়া থাকবে, আমরা সেরা পারফরম্যান্স দিয়েই যেন ম্যাচটা খেলতে পারি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমরা ম্যাচটা জিতে আত্মবিশ্বাস নিয়ে যেন ফাইনালে যেতে পারি।’

ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় অনেকটা নির্ভার থেকেই ম্যাচটি খেলার কথা বাংলাদেশ দলের। আফগানদের বিপক্ষে চাপমুক্ত থেকে নিজেদের সেরাটা দেখানোর সুযোগ এটিই। তাই টুর্নামেন্টের বাস্তবতায় ম্যাচের গুরুত্ব খুব না থাকলেও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ম্যাচটিকে ঘিরে কৌতূহল থাকবে যথেষ্টই। এই চ্যালেঞ্জে নতুন অস্ত্র আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে পাবে কিনা বাংলাদেশ, সেটি নিশ্চিত নয় এখনও। অভিষেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২ উইকেট নেওয়ার পথে তরুণ লেগ স্পিনার চোট পেয়েছেন বাঁহাতে। হাতে তিন সেলাই নিয়েই এদিন অবশ্য নেটে বোলিং করেছেন দীর্ঘসময়। এই চোট নিয়ে ম্যাচ খেলা অসম্ভবও নয়। তবে ফাইনালের আগে হয়তো তাকে খেলিয়ে ঝুঁকি নেবে না দল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন