বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দুর্নীতির কারণে সরকারের পদত্যাগ দাবি বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৮:২৭ পিএম | আপডেট : ৮:৩৯ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

দুর্নীতির কারণে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকারের সময়ে শুধু ক্যাসিনো, জুয়ার আসরই নয় সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকান, কি অবস্থা হয়েছে? আজকে বালিশ দুর্নীতি, পর্দা কিনতে ৩৭ লাখ টাকা লাগে, একটি বই কিনতে ৮৫ হাজার টাকা লাগে। কিভাবে ভয়াবহ দুর্নীতি চলছে? এর আগে মেগাপ্রকল্পগুলোতে মেগা দুর্নীতি হয়েছে। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে দুর্নীতি হয়েছে। এভাবে একটি রাষ্ট্র চলতে পারে না। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা (সরকার) রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছেন। এজন্য দয়া করে পদত্যাগ করুন। তত্ত‌্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন করে নির্বাচন দিন। যার মাধ্যমে দেশে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সারাদেশে ক্যাসিনো, জুয়ার আসর চলছে। এই সরকারের সময় তা প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গেছে। কারণ কোন ক্ষেত্রেই সরকারের কোন নিয়ন্ত্রণ নাই। ২৯ ডিসেম্বর যাদেরকে ব্যবহার করে এই সরকার রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণ করেছে, তাদের নিজেদের দলের লোক এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কারো ওপরই সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। কারণ সরকারের নিজেদেরই আইনি বৈধতা নেই। এজন্য গোটা রাষ্ট্রকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রের আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, শাসন বিভাগসহ সকল স্তম্ভকে ভেঙে ফেলা হয়েছে। এজন্য কোন কিছুই কাজ করছে না।

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের বক্তব্যের বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিনি (যুবলীগ চেয়ারম্যান) যেভাবে কথা বললেন, তাতে মনে হয় সবাই জড়িত। কয়েকদিন আগে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন যে, ‘দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে’। সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার পর্যন্ত টপ টু বটম। কারো কোন জবাবদিহিতা নেই। যার যা খুশি তাই করতে পারে।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, গত শুক্রবার দেশনেত্রীর সাথে তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করেছেন। তারা দেখেছেন বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি অসুস্থ্য। তিনি শুকিয়ে গেছেন। নিজে তুলে খেতে পারছেন না। খাইয়ে দিতে হচ্ছে। গত ১৯ মাসের মধ্যে বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। আমরা বারবার তার মুক্তি দাবি করছি, সরকারকে বলছি, তার মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থার দাবি করে আসছি। কিন্তু এই সরকার কোন কথা শুনছে না। আমরা আদালতে গেছি, জামিন তার প্রাপ্য। কিন্তু নানা কৌশলে তার জামিনে বাধা দেয়া হচ্ছে। সরকার জেনে শুনে তার জামিনে বিলম্ব করছে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে- বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখা, তিলে তিলে তাকে শেষ করে দেয়া।

তিনি বলেন, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার এসব করছে। আমরা আবারও স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, আমরা বেগম খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তি চাই। তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চালমান রয়েছে দাবি করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আমাদের অঙ্গসংগঠনগুলো ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন করছে। এতে একটিই দাবি অবিলম্বে দেশনেত্রীর মুক্তি। এছাড়া আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর, সিলেটে, ২৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে এবং ২৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে তার মুক্তির দাবিতে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহŸায়ক শামসুজ্জামান দুদুর বাসায় হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুদু টকশো তে যে কথাগুলো বলেছেন তা আমরা শুনেছি। তিনি সেখানে কোথাও কোন হুমকী-ধামকী দেয়া হয়নি। এরপরও তিনি বিবৃতি দিয়ে তার বক্তব্য পরিষ্কার করেছেন। কিন্তু এই সরকার যে ভিন্ন মত সহ্য করতে পারে না, ফ্যাসিবাদী সরকার তার দৃষ্টান্ত হলো তার বাড়িতে দুই দুই বার হামলা করা। তিনি সরকারকে ফ্যাসিবাদী চরিত্র থেকে বিরত থাকার আহŸান জানান। এর আগে বিকেল ৫টার সময় স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন