বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভীতি আতঙ্ক সর্বত্র

ক্ষমতাসীন দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

এ যেন ওয়ান ইলেভেনের পুররাবৃত্তি। ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি ক্ষমতার পালাবদলের পর দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে রাজনীতিক, প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা, চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজসহ বিতর্কিতদের মধ্যে যে গ্রেফতার ভীতি সৃষ্টি হয়; দল ক্ষমতায় থাকার পরও সেই ভীতির মধ্যে পড়েছেন আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিতর্কিত নেতারা। পরিবহন নেতা, দখলদার, প্রশ্নপত্র ফাঁসের হোতা, ইয়াবা ব্যবসায়ী, কোচিং বাণিজ্যের হোকা, মন্ত্রী-এমপিদের বিতর্কিত স্বজন সবার মধ্যেই এখন গ্রেফতার আতঙ্ক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ‘ছাত্রলীগের পর যুবলীগকে ধরেছি; একে একে সকলকে ধরবো’ প্রচারের পর ভীতি আরো বেড়ে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় গত ১০ বছরে নানা কর্মকান্ডে যারা নিজেদের বিতর্কিত মনে করছেন, তাদের প্রায় সকলেই আতঙ্কে রয়েছেন। এদের অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন; কেউ কেউ প্রকাশ্যে থাকলেও পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন। কেউ হেভিওয়েট নেতার কাছে ধরনা দিচ্ছেন। কেউ আবার আত্মগোপনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন সেক্টরে দাপুটে, বিতর্কিত এবং আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন তাদের অধিকাংশই পর্দার আড়ালে চলে গেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি দমনে ‘শূন্য সহনশীলতার’ মধ্যেও যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর ‘ঝাঝালো বক্তব্য’ প্রচারের পর ‘ঝড় থেমে যাবে’ কারো কারো এমন প্রত্যাশায় ছিলেন; ২৪ ঘন্টা পর যুবলীগের সভাপতির ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গিয়ে বক্তব্য দেয়ায় ‘ঝড় আরো প্রবল হয়ে আসছে আশঙ্কা থেকে আরো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কেউ কেউ ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। দিনে নিজেদের বাসায় থাকলে রাখে অন্যত্র ঘুমাচ্ছেন। আবার একে অপরের সঙ্গে নিজেদের কৃতকর্ম, অভিযান কোথায় গিয়ে ঠেকবে, গ্রেফতারের তালিকায় তাদের নাম রয়েছে কিনা সে সব বিষয়ে আলোচনা করছেন; খোঁজ খবর নেয়ার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিক দেখলেই ‘অভিযান খবর’ জানতে চাচ্ছেন। পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন সেক্টরে টেন্ডারবাজী, আধিপত্যবিস্তারকারী, যেসব মন্ত্রী-এমপিদের পুত্র-শ্যালক ইতোমধ্যেই অপকান্ডে বিতর্কিত এবং মিডিয়ায় শিরোনাম হয়েছেন তাদের মধ্যেও গ্রেফতার ভীতি সবচেয়ে বেশি। গ্রেফতার এড়াতে এদের কেউ কেউ এতোমধ্যেই বিদেশে গেছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
সুত্রের দাবি, দল ও অঙ্গ সংগঠনগুলোয় শুদ্ধি অভিযান বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রকাশ্য হুশিয়ারি দেয়ায় বিভিন্ন সংগঠনের অভিযুক্ত ও বিতর্কিতরা এখন আতঙ্কিত। বিশেষ করে গত দুই মেয়াদে যারা চাঁদাবাজি, ভূমি দখল ও টেন্ডারবাজিসহ নানা অপকৌশলে অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন এখন তারা চরম উদ্বেগ-আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কোনোভাবে তদবির করে নিজের নাম দলের ‘গুড লিস্টে’ আনা যায় কি না সেজন্য অনেকেই পথ খুঁজছেন। কিন্তু এরই মধ্যে আলোচিত বেশকিছু দুর্নীতিবাজ নেতার চাঁদাবাজী, দখলদারিত্ব, মাদক ব্যবসা, দুর্নীতি-টেন্ডারবাজির গোয়েন্দা তথ্য গণভবনে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বিতর্কিত নেতাদের কেউ কেউ আবার এসব নেতার অপকর্ম ফাঁস করে দিতে উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও দুর্নীতি দমন কমিশনের হাতে তুলে দিচ্ছেন। রেকর্ডেট প্রমাণ পেয়েই প্রধানমন্ত্রী ‘সবার কর্মকান্ড আমি জানি’ মন্তব্য করেছিলেন। অভিযুক্ত অনেক যুবলীগ নেতা অসুস্থতা দেখিয়ে এরইমধ্যে দেশের বাইরে চলে গেছেন এবং অনেকেই যাওয়ার চেষ্টাও করছেন। আবার শুদ্ধি অভিযানের খবর পেয়ে বিদেশে যারা রয়েছেন তারা সহসাই দেশে ফেরার চিন্তা বাদ দিয়েছেন।
পুলিশের অভিযানের ব্যাপারে গতকালও কয়েকজন মন্ত্রী কঠোর বার্তা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘যত বড় নেতাই হোক কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। টেন্ডারবাজ, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজরা সাবধান হয়ে যাও, শেখ হাসিনার অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে’। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আছাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন,‘গ্রেফতার অভিযান চলছে চলবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ক্ষমতা অপব্যবহারকারীদের ধরা হচ্ছে’। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগে আগাছা থাকবে না’। দায়িত্বশীল ব্যাক্তিদের এই সব বক্তব্য বিতর্কিত নেতাদের আরো আতঙ্কিত করে তুলেছে।
কেন্দ্রীয় যুবলীগ একাধিক নেতা জানান, প্রধানমন্ত্রীর কঠোর অবস্থানে আওয়ামী যুবলীগের ভেতর কেউ যেন নৈতিক স্খলনজনিত কোনো অপরাধ না করে সেজন্য জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়। জানানো হয় যুবলীগের নিজস্ব ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা জানানো হয়। এ ট্রাইব্যুনালে যুবলীগের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে তা তদন্ত ও অনুসন্ধান করে দোষী নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যুবলীগ নেতাদের এ ধরনের বক্তব্য শীর্ষ নের্তৃত্ব গ্রহণ করেননি।
যুবলীগ সূত্র জানায়, অভিযান আতঙ্কে জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে ঢাকা মহানগরের অনেক নেতাই এখন ঘরছাড়া। বিশেষ করে গতকাল শনিবার ঢাকার বাইরে কয়েকটি স্থানে যুবলীগের কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হওয়ার পর আতঙ্ক আরও চরম আকার রুপ নিয়েছে। ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের এক নেতা গতকাল টেলিফোনে বলেন, স্বাভাবিকভাবে সবার মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছে। এজন্য অনেকেই গাঢাকা দিয়েছে। তিনি নিজেই ঢাকার বাইরে অবস্থান করছেন জানিয়ে ওই নেতা বলেন, এখন ঘোলাটে পরিস্থিতিতে কখন কে কারে কালার করে কে জানে।
অভিযানের ভয়ে রাজধানী ঢাকার অনেক এলাকার চাঁদাবাজিও বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা থেকে মুন্সিগঞ্জগামী ইলিশ পরিবহন থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার টাকা চাঁদা তুলতো স্থানীয় যুবলীগের এক নেতা। গত দুদিন ধরে তিনি গাঢাকা দিয়েছেন। এখন তার পক্ষে দুরপাল্লার বাসগুলোতে কেউ চাঁদা তোলার সাহস করছে না। আলাপকালে পরিবহন শ্রমিকরা জানান, দুদিন ধরে তারা চাঁদা ছাড়াই বাস চালাতে পারছেন। একইভাবে অভিযানের ভয়ে পুরান ঢাকার লক্ষীবাজার, তাঁতীবাজার, ওয়ারীসহ আশপাশের এলাকার বিভিন্ন চাইনিজ রেস্টুরেন্ট নামধারী মিনি চাইনিজগুলোও বন্ধ হয়ে গেছে। এসব চাইনিজের মালিকরা আতঙ্কে দোকান খুলছেন না। স্থানীয়রা জানান, চাইনিজ রেস্টুরেন্ট নামধারী এসব হোটেলে মূলত তরুণ-তরুণীরা শারিরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতো। এজন্য চাইনিজের অভ্যন্তরে ছোট ছোট কক্ষ তৈরী করা আছে। এর আগে স্থানীয়ভাবে চাইনিজগুলো বন্ধের দাবি জানানো হলেও পুলিশ সেগুলো থেকে মোটা অঙ্কের টাকা পায় বলে বন্ধ করেনি। দুদিন ধরে পুলিশের ইশারায় সেগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, টার্গেটে এবার সরকারদলীয় সুবিধাভোগি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা, পরিবহন চাঁদাবাজ, স্কুল ও কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, কোচিং ব্যবসায়ী, নদী দখলদার, ভূমিদস্যু, বনখেকো, মিথ্যা ঘোষণার অবৈধ মালামাল আমদানীকারকসহ বিভিন্ন শ্রেণির দুর্নীতিবাজ। শিগগির তাদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হবে। নতুন এ অভিযানে বাদ পড়বেন না ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলা সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তারাও। এ ছাড়া আয়ের উৎস না থেকেও অবৈধ সম্পদ অর্জন, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে ইতিমধ্যে সমালোচিত হয়েছেন- এমন কেন্দ্র থেকে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধেও বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযান চালানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, টানা ১১ বছর ক্ষমতায় থাকায় অনেক বিতর্কিত ও সুবিধাবাদী ঠাঁই নিয়েছে আওয়ামী লীগে। দলীয় ও বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পরই কঠোর অবস্থান নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দলে স্বচ্ছ ইমেজের নেতৃত্ব ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছাত্রলীগের পর এবার যুবলীগ নেতাদের আমলনামা নিয়ে কাজ করছে দলের হাইকমান্ড। দখল-চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি-ক্যাডারবাজিসহ সারা দেশে নানা অপকর্মে জড়িত যুবলীগের সহস্রাধিক নেতাকর্মীর তালিকা ধরে কাজ করা হচ্ছে। সাথে সাথে চলছে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগি সংগঠনের চাঁদাবাজদের তালিকা তৈরীর কাজ। তালিকা ধরেই চলছে অভিযান। এরপর পর্যায়ক্রমে অভিযান চলতেই থাকবে।
দলীয় সংগঠনের বাইরে আরও যেসব সেক্টরের তালিকা করা হয়েছে সেগুলো হলো বিভিন্ন স্কুল কলেজ পরিচালনা কমিটির দুর্নীতিবাজ সভাপতি ও সদস্যদের। ঢাকাসহ সারাদেশেই স্কুল-কলেজ পরিচালনা কমিটির নাম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা নতুন কিছু নয়। শিক্ষকদের বঞ্চিত করে পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ কতিপয় সদস্য কোটি কোটি টাকার সম্পদের পাহাড় করেছেন তাদেরও তালিকা তৈরী করা হচ্ছে।
এ বাইরে যারা বিভিন্ন নামীদামী স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করেছেন তাদেরও তালিকা করা হচ্ছে। রাজধানীকেন্দ্রীক এ তালিকায় ক্ষমতাসীন দলের এমপিসহ অনেকেরই নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া কোচিং বাণিজ্য করে যারা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তাদেরও তালিকা তৈরী হচ্ছে। এ ছাড়া এলাকায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে জিম্মি করে ফায়লা লুটেছেন তাদেরকে ছাড় দেয়া হবে না বলে সূত্র দাবি করেছে।
অন্যদিকে, ঢাকায় পরিবহনে চাঁদাবাজি কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। প্রভাবশালী মালিকপক্ষ সরকারের ছাত্রছায়ায় কৌশল পাল্টিয়ে চাঁদার অঙ্ক জিঁইয়ে রেখেছে। সরকার এবার পরিবহনের চিহ্নিত চাঁদাবাজদের ছাড় দিবে না। ঢাকায় বিভিন্ন রুটের প্রায় ৬ হাজার বাস, মিনিবাস থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয়। এ চাঁদাবাজির নেপথ্যে সরকার সমর্থক প্রভাবশালী চক্র জড়িত। তাদের তালিকা অনেক আগেই তৈরী করে রেখেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। শুধু বাস মিনিবাস নয়, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় চলাচলকারী টেম্পু, অটোটেম্পু, লেগুনা এমনকি ইজিবাইক ও মোটরচালিত রিকশা থেকেও প্রতিদিন লাখ লাখ চাঁদা তোলা হচ্ছে। সেই সব চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলবে।
এদিকে, অভিযানের ভয়ে রাজধানী ঢাকার ক্ষমতাসীন দলের অনেকেই আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছেন। গতকাল শনিবারও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভূক্ত কমপক্ষে ৫টি ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতাদের ফোন করে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে ফোনের মিস কল এলার্ট দেখে ভিন্ন একটি নম্বর থেকে কলব্যাক করে ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক এক সভাপতি জানান, তিনি দূরে কোথাও আছেন। টেকনিক্যাল কারণে মোবাইল বন্ধ রেখেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বলা তো যায় না ভাই-কখন কি হয়ে যায়।
গত ৭ ও ১৪ সেপ্টেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতিবাচক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত নেতাদের গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের কথা তুলে ধরেন। ওই গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনারও সিদ্ধান্ত দেন। পরে নেতাদের নেতিবাচক কর্মকান্ড একটি ফিরিস্তি আকারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে দিয়ে অভিযানের নির্দেশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ক্যাসিনোতে অভিযান চালায়। এরপর যুবলীগের সমবায় সম্পাদক পরিচয় দেওয়া জি কে শামীমের ডেরায় অভিযান চালানো হয়। পরে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি কৃষকলীগ নেতা শফিকুল আলম ফিরোজকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ধানমন্ডি ক্লাবসহ গুলশান, এলিফ্রান্টরোডের আরও কয়েকটি ক্লাবে অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। এতে করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, এমপি, মন্ত্রীসহ সহযোগি সংগঠনের শতাধিক নেতা পদ হারানোর শঙ্কায় পড়ে গেছেন। এরমধ্যে দলের এমপি, মন্ত্রী, ২০ জন কেন্দ্রীয় নেতা, ঢাকা মহানগর যুব নেতা, কৃষকলীগ, শ্রমিক লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনহুলোর শতাধিক নেতা রয়েছেন।
এদিকে গতকালও কক্সবাজারে ‘শুধু ঢাকা নয়, শেখ হাসিনার অ্যাকশন সারাদেশে চলবে’ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করার জন্য দলের মধ্যে থাকা আগাছা ও পরগাছা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চারদিকে ষড়যন্ত্রের গন্ধ আছে; তাই এদের পরিষ্কার করার এখনই সময়।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Calvin Klein ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫২ এএম says : 0
এরকম একটা অসম্ভব কাজে সফল হতে পারলে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী-আপনার ভোট ব্যাংক সবসময় পূর্ণই থাকবে আর রাজপথেও আপনার জনগনের অভাব হবেনা।শুভকামনা রইল।
Total Reply(0)
Atm Abdur Rahim ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 0
দূর্নীতি চলে আসছে এটাই মানুষের সবসময়ের ধারণা! কিন্তু সেটা দৃঢ়তার সাথে দমন করার দুঃসাহস দেখাতে পেরে শেখ হাসিনা জনগণের মনে নিজেকে অনেক উচ্চ স্তরে প্রতিষ্ঠিত করে নিলেন! সাফল্য কামনার সাথে ধারাবাহিকতা আশা করছি।
Total Reply(0)
Tawhidur Chowdhury ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 0
হতেপারে আই ওয়াশ!! কিন্তু আমরা আশা করি শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বাংলাদেশ।
Total Reply(0)
Md Akram Babu ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৩ এএম says : 0
দূর্নীতি কে করে নাই বাংলাদেশে ? সবাই করেছে, কিন্তু ক'জন এমন নজীর সৃষ্টি করেছে ? ৯১-৯৬,০১-০৬ উক্ত সমায়ে কতজন সরকার দলের নেতা কর্মীকে দেখেছেন গ্রেফতার হতে ? তারা কী তুলসীপাতা ছিল ? এটা একটা সাহসের দরকার ।
Total Reply(0)
Aminur Rahman ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 1
সহজ সমীকরন এতো দিন উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন এবারে শুদ্ধি অভিযান। এরপর কাউন্সিলারদের সম্পত্তির একটা হিসাবও নেওয়া প্রয়োজন।
Total Reply(0)
Md Sufidul Islam Soma ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 0
সহজ ভাবে বললে বলতে সময়ের কঠিনতম সিন্ধান্ত এটি আবারও প্রমান করলো জননেত্রী বাংলার মাটি মানুষের প্রানের নেত্রি বঙ্গবন্ধু র সুয্যোগ কন্যা বাংলাদেশ র প্রধানমন্ত্রী সময়ে কঠিন সিন্ধান্ত নিতে জানেন এ ভাবে ই আমরা সামনে এগিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Rezaul Karim ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৪ এএম says : 0
আমি মনে করি এই অভিযান আগে পুলিশের উপর তার পর সরকারি বড় বড় কর্মচারি কর্মকর্তাদের উপর প্রয়োগ করলে ভালো হতো
Total Reply(0)
Hossain Ahmed ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
এই অভিযান সঠিক ভাবে সফল করে সব চুরদের সাজার ব্যবস্থা করতে পারলে আওয়ামিলিগ এর জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে, যা অতিতে অন্য কোন দল করতে পারেনি। ধন্যবাদ প্রদানমন্ত্রি।দুর্নিতি মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চাই।
Total Reply(0)
Monirul Islam Amanat ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
বাংলাদেশে স্পোর্টস ক্লাব গুলো খেলোয়াড় তৈরি না করে জুয়ার আখড়ায় পরিনত!!ভাল খেলোয়াড় আকাশ থেকে পড়েনা,তৈরি করে নিতে হয়।
Total Reply(0)
Md Hãsäñ Måhmūd ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৫ এএম says : 0
এই দুর্নীতি বাজদের সমস্ত টাকা পয়সা উদ্ধার করে এই টাকা ও সম্পদ দিয়ে দেশের সমস্ত বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান করা উচিত
Total Reply(0)
Nur Salam ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
চুনোপুটির অফিসেই শতকোটি টাকা। রাঘব বোয়ালদের অফিসে অভিযান চালাইলে সেই টাকা দিয়ে কয়েকটা পদ্মা সেতু বানানো যাবে।
Total Reply(1)
Yourchoice51 ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৮:০৮ এএম says : 4
একদম হক কথা বলেছেন ভাই।
Engr Amirul Islam ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:২৯ এএম says : 0
Nothing will happen as it is a eye wash and making the people fool and ........... is very much expert for that
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন