দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্যটা নাগালেই রেখেছিলেন বোলাররা। সাকিব আল হাসানের ব্যাটে ভর দিয়ে সেই লক্ষ্য পেরিয়ে ত্রিদেশীয় টি-২০ টুর্নামেন্টের ফাইনালের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ।
টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ ও চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্ট্রেডিয়ামে গতকাল টস হেরে ব্যাটে নেমে ৭৫ রানের উদ্বোধনী জুটির পরও ৭ উইকেটে ১৩৮ রানে আটকে যায় আফগানস্তান। জবাবে শুরুর ধাক্কা সামলে দলপতি সাকিবের ব্যাটে সাওয়ার হয়ে ৬ বল হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ৪৫ বলে অপরাজিত ৭০ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে ম্যাচের নায়ক সাকিব। গত পাঁচ বছরে আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম জয় এটি।
চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় জয়ে আফগানদের সঙ্গে নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের বাকি দুই ম্যাচ পরিণত হয় শ্রেফ নিয়ম রক্ষার। আগামীকাল মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল। বলতে গেলে তারই প্রস্তুতি হয়ে গেল গতকাল। যে ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাসটা বাড়িয়ে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের দল।
চোটে পড়া তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলামের পরিবর্তে গতকাল দলে ফিরে ১ রান করেন সাব্বির রহমান। দুটি পরিবর্তন এনে মাঠে নামা আফগান দলে অভিষিক্ত ১৯ বছর বয়সী মিডিয়াম পেসার নাভিন-উল-হক ২০ রানে ২ উইকেট নিয়ে হন দলের সেরা বোলার।
বাংলাদেশের জন্য সহজ লক্ষ্যটা কঠিন করে দিয়ে যান দুই ওপেনার লিটন কুমার দাশ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। কেউই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি। সাকিবের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম এসে ৫৮ রানের জুটিতে দলকে পথচ্যুত হতে দেননি। একবার জীবন পাওয়া মুশফিক বিদায় নেন ২৫ বলে ২৬ রান করে করিম জানাতকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে। আগের ম্যাচে জয়ের নায়ক মাহমুদউল্লাহও বেশিক্ষণ টেকেননি। পরের দুই ওভারে সাব্বির ও আফিফ বিদায় নিলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ১০৪ রানে তখন ৬ উইকেট। তবে অপর প্রন্তে আস্থার প্রতীক হয়ে ছিলেন সাকিব। মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে বাকি পথ পাড়ি দেন দলপতি।
এগারোতম ওভারে আলোকস্বল্পতার কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। অষ্টম ওভারে ফিল্ডিং করতে গিয়ে হ্যামিস্ট্রিং চোট নিয়ে মাঠ ছাড়া রশিদ খান ফিরে এসে মাহমুদউল্লাহ ও আফিফকে তুলে নিয়ে চাপে ফেলে দেন। খানিক বাদে রশিদেরই করা দলীয় ১৮তম ওভারে ১৮ রান তুলে চাপ ফিরিয়ে দেন সাকিব। ১২ বলে ৯ রানের হিসাবটা সিঙ্গেল-ডাবল দিয়েই মিলিয়ে নেয় সাকিব-মোসাদ্দেকের অবিচ্ছিন্ন ৩৫ রানের জুটি।
এর আগে বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিংয়ের পরও অল্প রানে আটকে যায় আফগানরা। নিজের প্রথম ও দলীয় দশম ওভারে আফিফ হোসেন বল হাতে এসেই নেন জোড়া উইকেটসহ মেডেন। এরপর আর পথ খুঁজে পায়নি সফরকারীরা। ৩৫ বলে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাই। ৯ রানে ২ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার আফিফ। একটি করে নেন সাইফউদ্দিন, শফিউল, সাকিব ও মুস্তাফিজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আফগানিস্তান : ২০ ওভারে ১৩৮/৭ (রহমানউল্লাহ ২৯, জাজাই ৪৭, আসগর ০, নাজিবউল্লাহ ১৪, নবি ৪, নাইব ১, শফিকউল্লাহ ২৩*, জানাত ৩, রশিদ ১১*; সাইফ ৪-০-২৩-১, শফিউল ৪-০-২৪-১, সাকিব ৪-০-২৪-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১৬-০, মুস্তাফিজ ৩-০-৩১-১, মোসাদ্দেক ১-০-১০-০, আফিফ ৩-১-৯-২)।
বাংলাদেশ : ১৯ ওভারে ১৩৯/৬ (লিটন ৪, শান্ত ৫, সাকিব ৭০*, মুশফিক ২৬. মাহমুদউল্লাহ ৬, সাব্বির ১, আফিফ ২, মোসাদ্দেক ১৯*; মুজিব ৪-০-১৯-১, নাভিন ৪-০-২০-২, জানাত ৩-০-৩১-১, নাইব ২-০-১৬-০, নবি ৩-০-২৪-০, রশিদ ৩-০-২৭-২)।
ফল : বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : সাকিব আল হাসান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন