মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মিসরে দ্বিতীয় দিনেও সিসি বিরোধী বিক্ষোভ-সংঘর্ষ হয়েছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৩:১৫ পিএম

মিসরে শনিবার দ্বিতীয় দিনের মতো প্রেসিডেন্ট জেনারেল সিসি বিরোধী বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর ধারাবাহিকতায় এদিনও দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজপথে নেমে আসে আন্দোলনকারীরা। এ সময় বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। রবিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
বন্দরনগরী সুয়েজে রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে নিরাপত্তা বাহিনী। এরপরও যারা সেখানে জড়ো হয় তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের তাড়িয়ে দিতে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
জেনারেল সিসি-র পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে মানুষ রাজপথে নেমে এলে মিসরের আন্দোলন সংগ্রামের প্রাণকেন্দ্র তাহরির স্কয়ার চত্বরে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে দেশটির ইতিহাসের প্রথম নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিসরে এ ধরনের বিক্ষোভ বিরল। ওই অভ্যুত্থানের পর আইন করে এ ধরনের বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করে জেনারেল সিসি সরকার। তবে একদিকে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অন্যদিকে সেনাশাসক জেনারেল সিসি ও তার বলয়ের লোকজনের ব্যাপক দুর্নীতি সাধারণ মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে তুলেছে।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে প্রকাশিত সরকারি ডাটা অনুযায়ী, মিসরে মোটাদাগে প্রতি তিনজনে একজন মানুষ দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। তাদের দৈনিক আয় ১.৪০ ডলারেরও কম।
এদিকে শুক্রবারের বিক্ষোভ থেকে আটক ব্যক্তিদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। শনিবার সংস্থাটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের অধিকারের সুরক্ষা দিতে মিসর সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র ফরাসি সংবাদমাধ্যম এএফপি-কে জানিয়েছেন, শুক্রবারের বিক্ষোভের ঘটনায় অন্তত ৭৪ জনকে আটক করা হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা অঞ্চলের পরিচালক মাইকেল পেজ বলেন, প্রেসিডেন্ট সিসি-র নিরাপত্তা বাহিনী আবারও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ বানচালের জন্য নৃশংসতার আশ্রয় নিয়েছে।
মাইকেল পেজ বলেন, মিসরীয় কর্তৃপক্ষের এটি স্বীকার করা উচিত যে, পুরো দুনিয়া এটি দেখছে। তাদের উচিত অতীতের সব নিপীড়নের পুনরাবৃত্তি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। জাতিসংঘ মহাসচিবসহ মিসরের সব আন্তর্জাতিক অংশীদারদের উচিত মানুষের মতপ্রকাশ ও সমাবেশের স্বাধীনতার প্রতি সম্মান জানাতে দেশটিকে আহ্বান জানানো।
স্বেচ্ছায় নির্বাসিত মিসরীয় ব্যবসায়ী ও অভিনেতা মোহাম্মদ আলীর এক আহ্বানের পর রাস্তায় নেমে আসতে শুরু করে মিসরের সাধারণ মানুষ। জেনারেল সিসি-র বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মানুষকে রাজপথে নামার আহ্বান জানিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলী। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যেখানে দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত সেখানে সিসি ও তার কর্মকর্তারা জনগণের বিপুল অংকের অর্থ অপচয় করছে। তবে নিজের বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগকে ‘মিথ্যাচার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন জেনারেল সিসি। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া পোস্টে মোহাম্মদ আলী বলেন, সিসি যদি পদত্যাগের ঘোষণা না দেয়, তাহলে মিসরের জনগণ রাজপথে নেমে আসবে।
গত ২ সেপ্টেম্বর থেকেই জেনারেল সিসি-র দুর্নীতির বিরুদ্ধে ভিডিও পোস্ট করতে শুরু করেন মোহাম্মদ আলী। অনলাইনে এসব ভিডিও লাখ লাখ বার দেখা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আন্দোলনকারীদের একজন পুরোধা হয়ে উঠেছেন স্বেচ্ছা নির্বাসিত এ ব্যবসায়ী। আল জাজিরা-র মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক ইয়েহিয়া ঘানেম বলেন, মিসরে এখন যা ঘটছে তা সেখানে দীর্ঘদিনের নিপীড়নের ফল। শুক্রবারের বিক্ষোভ দেশটির মানুষের আন্দোলনে গতি সঞ্চার করবে। সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড, আল জাজিরা।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
ওবায়দুল্লাহ ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৪:১৯ পিএম says : 0
আন্দোলন জোরদার হোক।
Total Reply(0)
Akram ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৭:৫২ পিএম says : 0
Down with C C. Establish Democracy in Egypt.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন