শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাবিতে ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে প্রকাশ্যে হামলা

৩ সাংবাদিকসহ আহত ৩০

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ছাত্রদলের ওপর হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এতে সংগঠনটির ৩০ থেকে ৪০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা। আহতদের মধ্যে একজনের পা ভেঙে গেছে। ঘটনাস্থলে ছাত্রদলের ব্যবহৃত একটি বাইক ও কয়েকটি মোবাইল ফোন ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। অন্যদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ছাত্রলীগের হামলায় ৩ সাংবাদিক আহত হন। গতকাল সোমবার সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে এই ঘটনা ঘটে। পরে ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে সনজিতের গ্রেফতার দাবি করেছে ছাত্রদল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসের শ্যামল হাকিম চত্বরে একটি চ্যানেলে ইন্টারভিউ দিতে গেলে সেখানে ৮-৯ জন নেতাকর্মী নিয়ে সনজিত চন্দ্র দাস ছাত্রদলকে ‘এলাকা’ ছাড়তে বলেন। পরে শ্যামল নেতাকর্মীদের নিয়ে টিএসসিতে এসে ইন্টারভিউ শেষ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই টিএসসিতে সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী ৫০ থেকে ৬০ জন নেতাকর্মী রড, লাঠিসোটা নিয়ে ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। ছাত্রদলের আহতদের মধ্যে রয়েছে- খোরশেদ আল সোহেল, কামরুল, ফিরোজ আলম, ফাহিম, সজল, নয়ন, শাহিন, অর্ণব, মাছুম, মাহবুব আলম, মশিউর প্রমুখ।
হামলায় অংশগ্রহণ করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী আপেল মাহমুদ, জসিম উদ্দিন হল ছাত্রলীগের কর্মী মহসিন আলম তালুকদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অনুসারী সূর্যসেন হলের যুগ্ম-সম্পাদক সৈয়দ শরিফুল ইসলাম শপু, সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি রাইসুল ইসলাম, সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জামান খান সোহান, জগন্নাথ হল সংসদের জিএস কাজল সরকার, জসীম উদ্দিন হল সংসদের জিএস ইমামুল হাসান, ঢাবি ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক হাসান রাহাত।
এদিকে ঘটনাস্থলে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে সাংবাদিককে মারধর ও মোবাইল কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন- স্টুডেন্ট জার্নালের ঢাবি প্রতিনিধি আনিছুর রহমান, বিজনেস বাংলাদেশের আফসার মুন্না ও প্রতিদিনের সংবাদের রাহাতুল ইসলাম রাফি।
ভুক্তভোগী আনিছুর রহমান জানান, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হাকিম চত্বরে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাকে এসে ঘিরে ধরে। সনজিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পরও আমাকে মারধর করা হয়। এ সময় আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম আবির বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে আমরা ছাত্রলীগের কাছে বিচার দাবি করেছি; পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হামলাকারীদের বহিষ্কারের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেবো।
সনজিতের গ্রেফতার দাবি
এ দিকে হামলায় নেতৃত্ব দেয়ায় ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্রের গ্রেফতার দাবি করেছে ছাত্রদল। এ বিষয়ে বেলা ৩টার দিকে টিএসসিতে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘আমরা মধুর ক্যান্টিনে গেলে ছাত্রলীগ আমাদের চারপাশ থেকে ঘিরে উসকানি দেয়। পরে হাকিম চত্বরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গেলে সেখানে খারাপ ব্যবহার করে, ওখান থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। টিএসসিতে এলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সনজিতের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অতি দ্রুত হামলায় জড়িত সনজিতের গ্রেফতার দাবি করছি।’
হামলার বিষয়ে সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, হামলার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। আমি লাইব্রেরিতে ব্যক্তিগত কাজে যাই। পরে লাইব্রেরি থেকে বের হয়ে দেখি এ ঘটনা ঘটেছে। কিছু অতি উৎসাহী নেতাকর্মী এটা করে থাকতে পারেন। সেখানে অনেক লোকজন ছিল, সবাই ছাত্রলীগের নয়। সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হবে। সাংবাদিকদের ওপর হামলায় কেউ জড়িত থাকলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Md Saikat ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
সবকিছুরই পতন হবে, শুধু ধৈর্য ধরুন।
Total Reply(0)
Asad Zaman ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
Ai deshe only satro lig thakbe r kisu na
Total Reply(0)
HK Babu ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
এরা তো পড়াশোনা করার জন্য যায় না,এরা যায় রাজনৈতিক দলের চামচামি করার জন্য...
Total Reply(0)
Sk Asaduzzaman ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৮ এএম says : 0
আরেক শোভন, রাব্বানীর জন্ম হলো
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
কথিত শুদ্ধি অভিযান চলা অবস্থায় ঢাবি ক্যাম্পাসে এ ধরনের বর্বরাচিত হামলা এবং হামলাকারীরা চিহ্নিত হবার পরও তাদের কাউকে গ্রেফতার না করা ও এ বিষয়ে ঢাবি প্রশাসনের নিরব ভূমিকা শুদ্ধি অভিযানের শুদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে! এবিষয়ে সন্ত্রাসীদের পক্ষে ছালীগের সভাপতির বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রির দূর্নীতি- সন্ত্রাস বিরোধী কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সন্ত্রাসীদের সমর্থন করার জন্যই কি শোভন- রব্বানীদের সড়িয়ে তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে?
Total Reply(0)
শফিউর রহমান ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১০:২৩ এএম says : 0
এদেশ এখন হিন্দু মৌলবাদের দখলে।.
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন