শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রায়গঞ্জের সোনাখাড়া ইউনিয়নের ডিলারের বিরুদ্ধে কৃত্রিম সার সংকট সৃষ্টির অভিযোগ

সিরাজগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৪:৫৪ পিএম

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের বিসিআইস নিয়োজিত সার ডিলার রেজওয়ান ওয়াসিফ রনি বিধিবহির্ভূতভাবে সরকার নিবন্ধিত খুচরা সার ডিলারদের প্রয়োজনীয় সার সরবরাহ না করে অতিরিক্ত মূল্যে স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী ও তার কিছু অনুসারীদের সরবরাহ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, অধিকাংশ সময় ডিলারের দোকান বন্ধ থাকায় এ ইউনিয়নে কৃত্রিম সার সংকটের দেখা দিয়েছে। ফলে ধানের ফলন বিপর্য়য়ের আশংকা করছেন খুচরা সার ডিলাররা। সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য ১৮সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক এবং জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ড. ফারুক আহাম্মদ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের খুচরা সার ডিলারগণ। অভিযোগকারী খুচরা সার ডিলাররা হলেন- শাহ আলম সরকার, আলহাজ আব্দুল মোন্নাফ তাং, শ্রী কামাক্ষাচরনণ পোদ্দার, খোকন চন্দ্র মাহাতো, চন্দ্রকান্ত মাহাতো, দীলিপ কুমার মাহাতো, নির্মল কুমার, সাইফুল ইসলাম ও নিহার রঞ্জন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অত্র ইউনিয়নের বিসিআইসি নিয়োজিত সার ডিলার মেসার্স তালুকদার টেডার্সের সত্বাধিকারী রেজওয়ান ওয়াসিফ রনির কাছে খুচরা সার ডিলাররা সারের জন্য গেলে তিনি নানা টালবাহানা করেন এবং প্রায়ই গুদামে সার মজুদ নেই বলে জানান। এ ছাড়া প্রায় সময় দোকান বন্ধ রেখে তিনি গোপনে অন্যত্র অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রি করেন। এতে এলাকায় কৃত্রিম সার সংকট দেখা দিয়েছে। চলতি ভরা মৌসুমে সার সংকট দেখা দেয়ায় আমন ধানের ফলন বিপর্যয়ের আশংকা করছেন কৃষক। এমতাবস্থায় সার সংকট থেকে পরিত্রাণের জন্য অতিদ্রুত একজন অতিরিক্ত বিসিআইসি সার ডিলার সমন্বয়ের জোর দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিসিআইসি নিয়োজিত সার ডিলার রেজওয়ান ওয়াসিফ রনি এলাকায় অত্যন্ত প্রভাবশালী। তারা বাবা মরহুম আতাউর রহমান ছিলেন অত্র ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি। তিনি ২০১৫সালে মারা গেলে তার ছেলে রনি এভিডেভিটের মাধ্যমে ডিলারশীপটি তার নামে করে নেন। বাবার প্রভাবপ্রতিপত্তি ও বিএনপির স্থানীয় ক্যাডারদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে তিনি ধরাকে সড়াজ্ঞান করেন। সরকারি আইন অমান্য করে তিনি সরকার নিবন্ধিত খুচরা সার ডিলারদের সার সরবরাহ না করে তার অনুসারী বদরুল আলম তাং, ইউনুস আলী, রফিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, সুজাবত মেম্বর, জ্যাকি পোদ্দার, নয়নসহ নিমগাছী বাজার এলাকার ১১জন কিটনাশক ব্যবসায়ীকে সার সরবরাহ করছেন। এতে সরকার নিবন্ধিত সার বিক্রেতারা যেমন ক্ষতির মুখে পড়েছে, তেমনি কৃত্রিম সার সংকট দেখা দিয়েছে।
এব্যাপরে সার ডিলার রেজওয়ান ওয়াসিফ রনির বক্তব্য নিতে গেলে তিনি তার অনুসারী ক্যাডারদের ডেকে এনে উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেন। এক পর্যায়ে তিনি তার বিরুদ্ধে অনীত অভিযোগসমূহ মিথ্যা বলে উল্লেখ করেন।

সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. মোস্তফা কামাল রিপন অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে মোট ১৫জন সার ডিলার রয়েছে। ইতিপূর্বে এ ইউনিয়নে তিনজন ডিলার ছিলেন। দু’জন ডিলারকে অন্য ইউনিয়নে সমন্বয় করা হয়েছে। এতে কৃত্রিম সার সংকট দেখা দিয়েছে। অতিদ্রæত এ ইউনিয়নে একজন ডিলার দিয়ে সমন্বয় করা জরুরী।

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যসোসিয়েশন(বিএফএ) সিরাজগঞ্জ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি কিন্তু এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম খুচরা সার ডিলারদের অভিযোগ প্রাপ্তি স্বীকার করে জানান, নিবন্ধিত সার ডিলার ওই ইউনিয়নের সরাসরি কৃষক ও ৯জন খুচরা সার ডিলার ছাড়া অন্য কারো কাছে সার বিক্রি করতে পারবেন না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন