রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

রাজধানীতে ফ্ল্যাটেও অবৈধ ক্যাসিনো

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৫:৪৪ পিএম

শুধু ক্লাবই নয়, রাজধানীর বহুতর ভবনের ফ্ল্যাটেও অবৈধ ক্যাসিনো চলছে বছরের পর বছর। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলের কতিপয় প্রভাবশালী নেতাদের সেল্টারে চলতো এসব অবৈধ ক্যাসিনো। আর এসব ফ্ল্যাট ও ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনার কারিগরি দিকগুলো দেখতো শতাধিক নেপালি নাগরিক। অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদসহ অন্যান্যদের জিজ্ঞাসাবাদে ২১টি ফ্ল্যাটে ক্যাসিনোর বিষয়ে তথ্য পেয়েছে র‌্যাব।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম দৈনিন ইনকিলাবকে জানান, ক্যাসিনো সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ সব তথ্য র‌্যাব তদন্ত করছে। শিগগিরই এ সব অবৈধ ক্যাসিনোগুলোতে অভিযান চালানো হবে। ক্যাসিনো চালানোর সঙ্গে যুক্ত নেপালি নাগরিকদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তারা যাতে পালিয়ে যেতে না পারে সে জন্য সব জায়গায় তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

একটি সূত্র জানায়, রাজধানীর বেইলি রোডের ৩টি ফ্ল্যাটে, গুলশানে ১টি, বনানীতে ১০টি ও উত্তরায় ৭টি ফ্ল্যাটে অবৈধ ক্যাসিনোর ব্যবসা রয়েছে। বেইলি রোডের ৩টি ফ্লাটে যে ক্যাসিনো চলে সেগুলো যুবলীগের একশীর্ষ নেতা পরিচালনা করেন। ওই নেতার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো চালানোসহ চাঁদাবাজির বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বনানীর কয়েকটি ভবনে ক্যাসিনো পরিচালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের এক নেতা। স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় ওই ক্যাসিনোগুলো চলতে বলে তদন্তে তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা জানান, উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের পূবালী ব্যাংকের দোতলায় ক্যাসিনো চালাচ্ছেন উত্তরা পশ্চিম থানা শ্রমিক লীগের এক নেতা। এ বিষয়ে জোর তদন্ত করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, রাজধানীর বহুতল ভবনের ফ্ল্যাটে ক্যাসিনো চালানোর সাথে জড়িতরা সবাই রাজনীতির সাথে জড়িত। র‌্যাবের অভিযানের পর থেকে জড়িতরা সবাই পলাতক রয়েছে। এদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সূত্র জানায়, উত্তরার ৪ ও ৯ নম্বর সেক্টরেও ফ্ল্যাট নিয়ে ক্যাসিনো চালাচ্ছেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের এক নেতা। গুলশান ১ নম্বরের ১৩ নম্বর সড়কে একটি বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি এ এইচ এম হাশিম আহমদ ও কাজী মিশকাত হোসেন নামে দু’জন ওই বাড়ির নিচতলা ভাড়া নিয়ে ‘৮৯ ক্লাব’ নামে একটি ক্লাব চালু করেন। পরে সেখানে ক্যাসিনো ও জুয়ার আসর বসান। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার ও পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনারের কাছে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ জন নেপালি থাকতেন পল্টন থানার উল্টো দিকে নয়াপল্টনে ও সেগুনবাগিচার একটি বাসায়। বুধবার ক্যাসিনোতে র‌্যাবের অভিযান শুরুর পর খবর পেয়ে পুলিশ ও একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় সব নেপালি গা ঢাকা দেন। ওই দিনই ভোররাতে র‌্যাব ওই বাসাগুলোতে অভিযান চালায়, কিন্তু কাউকে পায়নি। সেখান থেকে র‌্যাব ছয়জন নেপালির পাসপোর্ট উদ্ধার করে। তারা হলেন-প্রসয়ন প্রবীণ, সিধাই নিরোজ, ড্যাঙ্গল বিকাশ নান, নাকর্মি গৌতম, রণজিৎ বচ্চন ও নয়াজি শেরেস্থা। ওই সূত্র জানায়, সেগুনবাগিচার সিসি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ওয়াকিটকি হাতে ফ্ল্যাটে প্রবেশকারীদের একজন একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহকারী প্রোগ্রাম ম্যানেজার। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। আরেকজন রমনা থাকার পুলিশ কনস্টেবল দীপংকর চাকমা। এ ব্যাপারেও তদন্ত চলছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
দীনমজুর কহে ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৮:০৯ এএম says : 0
এ সব বন্ধে কার্যকারী ব্যাবস্থা নিতে হবে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন