বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

‘দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়, সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন দিন’

বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

মো. শামসূল আলম খান | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৮:১৯ পিএম

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। প্রশাসনের শত বাঁধা, গ্রেফতারসহ নানান প্রতিবন্ধকতা স্বত্বেও ময়মনসিংহে লাখো মানুষের এই সমাবেশ এটাই প্রমান করে। তাই সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। ইনশাল্লাহ জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, সমাবেশের আগে বিএনপি নেতা লিটন আকন্দসহ ময়মনসিংহে প্রত্যেকটি উপজেলা থেকে ১০/১২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের শত বাঁধা উপেক্ষা করে খালেদা জিয়া মুক্তির সমাবেশে লাখো মানুষ উপস্থিত হয়েছে। দেশের মানুষ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। বেগম জিয়া শুধু নেত্রী নন, তিনি এদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণের স্পন্দন, জনগণের প্রতিনিধি। এ সময় সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখতে পারবেন না। বন্দুক পিস্তলের জোরে সব হবে না। ৭১ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে রক্ষি বাহিনী তৈরী করে নির্যাতন চালিয়েছিল। এখন নেতা-কর্মীদের তুলে নিয়ে খুন, গুম করা হয়েছে। পায়ে গুলি করা হচ্ছে। তবুও কারো মাঝে ভয় নেই। এটাই বিএনপি। আমাদের সংগ্রাম কোন দলকে ক্ষমতায় বসানো হয়। আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্রের মুক্তির সংগ্রাম, সংবিধান রক্ষার সংগ্রাম। দেশের পতাকা সমোন্নত রাখা, মা-বোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সংগ্রাম।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ময়মনসিংহ নগরীর কৃঞ্চচূড়া চত্বরে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।
এ সময় মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ভোট ডাকাতি করে নির্বাচনের আগের রাতেই ভোট লুট করে নিয়ে গেছেন। এটা ক্যাসিনো থেকে বড় অপরাধ। জবাব দিতে হবে। ব্যাংক লুট করেছেন, নির্বাচনের আগে ১০ টাকা করে চাল খাওয়াবেন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৪০ টাকা দরে চাল খাওয়াচ্ছেন। বিনা পয়সায় সার দেওয়ার কথা বলে প্রত্যারনা করেছে। কৃষকরা এখন ধানের দাম পায় না। ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের জন্য টাকা পাচ্ছে না। সব টাকা পাচার হচ্ছে সুইচ ব্যাংকে। কারা দেশের টাকা লুট করছে। দেশের মানুষ জানে। শুধু কি যুবলীগ-ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ লুটপাট করছে। আর আপনাকি আঙ্গুল চুষেছেন।
এ সময় পুলিশের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ ভাইদের বলছি, কেন আপনারা অপকর্মের দ্বায়িত্ব নিচ্ছেন। পারলে জনগণের প্রতিপক্ষ না হয়ে লুটপাটকারীদের প্রতিহত করার দ্বায়িত্ব নিন। এসময় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, নেত্রীর মুক্তির জন্য আরো ঐক্যবদ্ধ হোন। খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি। দলমত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করুন। ইনশাল্লাহ দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
এ সময় ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সাধারন সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ এবং জেলা উত্তর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা: এজেডএম জাহিদ হোসেন, আ: আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মিন্টু, খাইরুল কবীর খোকন, ফজলুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান, আ: বারী ড্যানী, আব্দুল্লাহ ফারুক, কৃষিবিদ শামসুল আলশ তোফা, ডা: মাহাবুর রহমান লিটন, নূরজাহান ইয়াসমীন, আরিফা ইয়াসমীন, শাহ শহীদ সারোয়ার, যুবদলের সাধারন সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আ: কাদির ভূইয়া জুয়েল, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর মাহমুদ আলম প্রমূখ।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন বলেন, সরকারের প্রতিহিংসার কারনে বেগম খালেদা জিয়া জেলে। গায়ের জোরে তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে সরকার যখন দেখল দেশের ৮০ ভাগ মানুষ ধানের শীষে ভোট দিবে। তখন ২৯ তারিখ রাতেই প্রশাসনের সহযোগিতায় ভোট ডাকাতি করে ফেলেছে সরকার। মসজিদের নগরী ঢাকাকে এ সরকার বানিয়েছে ক্যাসিনোর নগরী।
এ সময় মির্জা আব্বাস বলেন, নেত্রীর ভয়ের কিছু নেই। বাঁধা আসলে বাঁধা অতিক্রম করেই সমাবেশ হবে। হাজার হাজার নেতা-কর্মী জেলে। এতে বিএনপির সমর্থন কমেনি, বরং বেড়েছে। মনে রাখবেন এ সরকারের কর্মকান্ডেই বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবেন। এই সমাবেশ তাই প্রমান করে।
সমাবেশে বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, আর মাতাব্বরী করবেন না। খালেদা জিয়ার মুক্তির সমাবেশ আর অনুমতি নিয়ে হবে না। নেতা-কর্মীদের বলেন, রাজপথে নামুন, আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত হবে। এটা সাংবিধানিক অধিকার। মনে রাখবেন খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই গণতন্ত্রের মুক্তি। সমাবেশের আগে লিটন আকন্দসহ অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল লিটন আকন্দ জামিন পেয়েছিল। পরে আরো মামলা দিয়েছেন। মনে রাখবেন আপনারাও মামলা পাবেন। খালেদা জিয়া মুক্তি না পেলে, জেলখানা খালি না হলে আপনারা কোথায় থাকবেন, বলে সরকারের প্রতি প্রশ্ন রাখেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সমাবেশ মাত্র দুই ঘন্টা আগে ৯টি শর্তে লিখিত অনুমতি দেয় স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু দুপুর থেকে বিচ্ছিন্ন মিছিলে মিছিলে সমাবেশস্থলে নেতা-কর্মী ও সাধারন মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে। তবে সমাবেশস্থলে লোক সংকুলন না হওয়ায় সারা শহরেই ছড়িয়ে পড়ে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সরব উপস্থিতি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
শাহজালাল ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৮:৩৭ পিএম says : 0
আওয়ামী লীগ দেশকে নিয়ে ক্যাসিনো খেলছে. আপনারা ক্ষমতায় আসলে দেশকে নিয়ে পোকার খেলবেনা তা জনগণ কিভাবে বিশ্বাস করবে?
Total Reply(0)
দীনমজুর কহে ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ৯:৫০ পিএম says : 0
গনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আন্দলন করুন . আন্দলনেই সফলতা আসবে।মনোনশিল রাজনিতি প্রত্যেকটি গনতন্ত্রমনা মানুষেরই কাম্য।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন