বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ফিটনেস চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন তাঁরাও

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:১৭ এএম

জাতীয় দলের খেলা থাকলে অনেক সময়ই জাতীয় লিগ খেলতে পারেন না প্রথম সারির ক্রিকেটাররা। কিন্তু অনেক সময় জাতীয় দলের খেলা না থাকলেও জাতীয় লিগ খেলতে দেখা যায় না তাদের। নানান অজুহাতে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণীর এই আসর এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা প্রবল। তবে এবার হতে যাচ্ছে ব্যতিক্রম। ভারত সফর সামনে থাকায় জাতীয় লিগ বেশ গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছেন ক্রিকেটাররা। কেবল সিপিএলে খেলতে যাওয়া অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও লিটন কুমার দাস ছাড়া বাকি সবাই লিগ খেলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

গত বছর থেকে ঘরোয়া মৌসুম শুরুতেই ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষা দেওয়া বাধ্যতামূলক করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এবারও লিগ শুরুর আগে ফিটনেস পরীক্ষা নেওয়া হবে। ফিটনেস পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ ১ অক্টোবর। তবে গতবারের তুলনায় এবার ফিটনেসের পরীক্ষায় আরও কড়া হচ্ছে বিসিবি। গতবার যেখানে বিøপ টেস্টে ‘৯’ কিংবা ‘সাড়ে ৯’ পেলেও খেলার সুযোগ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। এবার সেটি নির্ধারণ করা হয়েছে ‘১১’। ফিটনেসের এই পরীক্ষায় পাশ করলেই এনসিএল খেলার সুযোগ পাবেন ক্রিকেটারা। ৩৫ পেরোনো যেকোনো ক্রিকেটারের কাছে এটি ভীষণ কঠিন পরীক্ষা। সবশেষ জাতীয় দলের কন্ডিশনিং ক্যাম্পে প্লিপ টেস্টে বাংলাদেশ দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় গড়ে ‘১০’ পেয়েছিলেন। সিনিয়র ক্রিকেটারদের আশঙ্কা, ফিটনেসের ফাঁদে ফেলে তাঁদের বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

টেস্টে উতরে যেতে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলা বেশির ভাগ খেলোয়াড় হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে ফিটনেস নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। গতকাল মিরপুরে তো তারার মেলাই বসে গেল! বিশ্রাম কাটিয়ে জাতীয় লিগের জন্য ইতিমধ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছেন তামিম ইকবাল। ছিলেন তুষার ইমরান, মোহাম্মদ আশরাফুল, মোশাররফ রুবেলদের মতো সিনিয়র ক্রিকেটাররা। তবে জাতীয় লিগে নিয়মিতদের এবার একটু বেশিই চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে বিসিবি। বিশেষ করে তুষার কিংবা রাজ্জাকদের মতো ধারাবাহিক পারফরমারদের। ক্যারিয়ারের এই গোধূলিতে এসেও ব্যাটিংয়ে তুষার আর বোলিংয়ে রাজ্জাক প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দুর্দান্ত। তাদের চ্যালেঞ্জটা বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর।

আপাতত প্রতিটি বিভাগে যে ৩০ জনের দল করা হয়েছে, সেখানে অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা আছেন। তবে ফিটনেস পরীক্ষার পর সেটি নেমে আসবে ১৮ জনে। এই আঠারো জনে থাকার ব্যপারে আশাবাদী তুষার। কঠিন হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটের নিয়মিত এই পারফরমার চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন সাদরেই, ‘চ্যালেঞ্জ তো নিতে তো সব সময়ই প্রস্তুত। তবে যেভাবে হুট করে বলা হচ্ছে ১১ না পেলে খেলতে পারবে না, এটা বলা ঠিক নয়। খেলাটা আমাদের রুটি-রুজি। তবে অনেক খেলোয়াড় এটা পারবে না, পরীক্ষাটা ভীষণ কঠিন। এই পরীক্ষা কম-বেশি সবাই ভয় পায়! বাংলাদেশ দলের সুপার ফিট অনেক খেলোয়াড়ও তো ম্যাচের পর ম্যাচ রান পায় না, ভালো বোলিং করে না। তাদের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নেন নির্বাচকেরা? আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। এটা আমাদের রুটিরুজি। হয়তো পেরে যাব। তবে অনেক কষ্ট হবে আর কী!’

বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার বলতে তার নামটিই আসে সবার আগে। সেই মোহাম্মদ আশরাফুলও আশাবাদী নিজের ফিটনেস নিয়ে। সাবেক এই অধিনায়ক জানালেন, চ্যালেঞ্জ উতরে যেতে আশাবাদী, ‘আমরা যারা নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলি তাদের মধ্যে এটা নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট যারা খেলছি, সবাই যদি অফ সিজনে ভালো সুযোগ-সুবিধা পেত তাহলে ১১ পাওয়া কোনো ব্যাপারই না। গত বছর আমি ‘১১.৫’ পেয়েছিলাম। ওই সুযোগ-সুবিধা কিন্তু আমরা পাই না। জাতীয় দল বা হাইপারফরম্যান্স (এইচপি), অনূর্ধ্ব-২৩ দলে যারা তাদের থাকে না, তাদের জন্য কিন্তু কঠিন হয়ে যায়। একা একা নিজেকে তৈরি করতে হয়। তবুও আমি আশাবাদী।’

এখনও লড়াইটা করছেন ক্যানসারের সঙ্গে। কোমোথেরাপি চলছে। এরই মধ্যে বিসিবির নতুন চ্যালেঞ্জ। মোশাররফ রুবেলের চ্যালেঞ্জটা তাই ত্রিমুখী। তবুও হেরে যেতে নারাজ এই অভিজ্ঞ পেসার, ‘আমাদের জন্য ১৫ দিন বা এক মাসের একটা কন্ডিশনিং ক্যাম্প হলে ভালো হতো। যদিও এখন সময় নেই। অবশ্যই এটি কঠিন হয়ে যাবে। যেহেতু আমার কেমোথেরাপি (মস্তিষ্কে টিউমারের) চলছে এখনো, শেষ হয়নি। তবে চিকিৎসকেরা বলেছেন, খেলতে পারব। যে কদিন কেমোথেরাপি চলে ওই কদিন বাদ দিয়ে এক সপ্তাহ পর থেকে খেলতে পারব। অনুশীলন শুরু করছি। যুদ্ধ তো করতেই হবে। জীবনের সঙ্গে যুদ্ধ, মাঠে যুদ্ধ। কী করার আছে, করতে হবে। চেষ্টা করে যাচ্ছি যতটুকু লড়াই করা যায়, টিকে থাকা করা যায়। দোয়া করবেন আমার জন্য।’

এবারের জাতীয় লিগ হবে মোট ৯টি ভেন্যুতে। আপাতত লিগ শুরু হওয়ার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ অক্টোবর। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ২৯ সেপ্টেম্বর টুর্নামেন্ট কমিটির সভায়। অক্টোবরে বাংলাদেশ দলের ব্যস্ততা নেই। ঐ মাসের
শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের ভারত সফরের আগে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলতে পারবেন জাতীয় লিগ। ভারতের টি-টোয়েন্টি সিরিজে থাকা ক্রিকেটাররা খেলবেন প্রথম দুই রাউন্ড। টেস্ট স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের মিলবে প্রথম তিন রাউন্ডে। এবার জাতীয় লিগে তাই বিশেষ নজরই থাকছে সবার।

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন