দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গু পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটলেও তা নিয়ে উদ্বেগ কাটছেনা। প্রতিদিনই গড়ে ৪৮ জন করে ডেঙ্গু রোগী সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৩শ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। এসময় মারা গেছেন আরো দুজন। এখনো পিরোজপুর, ভোলা ও বরগুনা জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটাই নাজুক। এসব জেলাগুলোর হাসপাতালে প্রতিদিনই গড়ে ১৮জন করে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে। শুক্রবার সকাল পর্যন্ত সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী ভর্তিও সংখ্যা ৫ হাজার ৭শতে পৌঁছেছে। এর মধ্যে বরিশালের শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছে প্রায় আড়াই হাজার। বরিশাল মহানগরীর দুটি বেসরকারী হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ছিল ১১০জন। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত ১৪জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই মারা গেছেন ৮জন।
তবে সরকারী বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছেন ৫ হাজার ৫৬০জন ডেঙ্গুজ¦র আক্রান্ত রোগী। সরকারী হাসপাতালের বাইরেও আরো অন্তত ৫ হাজার ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন পর্যায়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। সে হিসেবে এখন পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের ওপরে বলে দাবী করেছে একাধিক দায়িত্বশীল মহল।
তবে শুক্রবার সকালের পূর্ববর্তী ২৪ঘন্টায় বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলায় নতুন করে ৩৮জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়েছে। এরমধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ভর্তি হয়েছে ১৮জন। বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেবে অনুযায়ী শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতালগুলোতে প্রায় ১৪০জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিল। যার মধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই ৬৮জন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসাধীন ছিল।
গত জুলাই মাস থেকেই দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ডেঙ্গুজ্বর ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থার শুরু হয়ে জুলাইয়ের শেষ থেকে। যা পুরো আগষ্ট থেকে সেপ্টেম্বরের প্রথম দশক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। দক্ষিণাঞ্চলে ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের ৯০ভাগই ঢাকা থেকে আগত। সেখানে এডিস মশার আক্রমনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দক্ষিণাঞ্চলে এসে এরা হাসপাতালে ভর্তি হন।
জুলাই-আগস্টের নাজুক পরস্থিতির মধ্যে বরিশাল সিটি করপোরেশন সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন পৌরসভা ও প্রশাসন এডিস মশার উৎস ধংশ সহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে সক্রিয় হলেও ইতোমধ্যে তা আবার ঢিলেঢালা হতে শুরু করেছে। গত চার দিন ধরে দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগ যুড়ে হালকা থেকে মাঝারী মৌশুমী বৃষ্টিপাতও হচ্ছে। ফলে এডিস মশা ও এর উৎস নিয়ে এখনই নিশ্চিন্ত হবার কিছু নেই বলে মনে করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। প্রাণঘাতি এ রোগ প্রতিরোধে যেকোন উপায়ে এডিস মশা নির্বংশ করার কোন বিকল্প নেই বলেও মনে করছে মহলটি। খোদ বরিশাল মহানগরীতেই মশক নিধন কর্মসূচী যথেষ্ঠ ঢিলেঢালা হয়ে পড়েছে বলে াভিযোগ নগরবাশীর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন