শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রূপকথা যেখানে বাস্তব

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

রেজাউল করিম রাজু, রূপপুর ঈশ্বরদী পাবনা থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র -ফাইলফটো


গল্প নয়, সত্যি ঘটনা। ঘটনা হলিউডি-বলিউডি-ঢালিউডি ফিল্মের কিছু গাঁজাখোরি গল্পের সঙ্গে মেলানো যেতে পারে। কিন্তু এটি একেবারে সত্য ঘটনা। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এখন বাস্তবতা। ইতোমধ্যেই বদলে গেছে পাবনার রূপপুরের রূপ। বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হলে পাল্টে যাবে বাংলাদেশের রূপ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ নির্মাণের লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে আলোচনা করেন। ২০০০ সালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ৬০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্লান-২০০০ অনুমোদন করিয়ে নেন।

৪৫ বছর আগের বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং প্রায় ২০ বছর আগের বিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়ার প্রচেষ্টা সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে। ১০৬৯ একর জমিতে চলছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ নির্মাণকেন্দ্রের বিশাল কর্মযজ্ঞ। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ বিশ্বে ৩২তম দেশ হিসেবে নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হয়েছে। রেকর্ড পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। একেবারে ২৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের মেগা প্রকল্প। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই এই কেন্দ্র উৎপাদনে যাবে। তখন পাল্টে যাবে দেশের চেহারা। পরিবর্তন ঘটবে দেশের মানুষের যাপিত জীবন।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিমাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়নে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা ঋণসহায়তা দিচ্ছে রাশিয়া। ৪ শতাংশ সুদে ২০ বছর মেয়াদে এ ঋণ শোধ করতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে একক প্রকল্প হিসেবে এখানে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এখান থেকে ৬০ বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। ফলে দেশে শিল্প সম্প্রসারণ ও নতুন শিল্প স্থাপনে সহায়ক হবে। দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় নিউক্লিয়ার যুক্ত করার মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হচ্ছে। পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশবান্ধব হওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পদ্মার তীর ঘেঁষে শ্যামল সবুজ গ্রামের নাম রূপপুর। এক সময় প্রমত্তা পদ্মার সাথে মিতালি আর হার্ডিঞ্জ সেতুর ওপর দিয়ে রেলগাড়ির ঝমঝম শব্দ হৃদয়ে বাজতো। নিত্যদিন পদ্মায় মাছ ধরা আর শস্যক্ষেতে চাষাবাদ। সেই ১৯৬১ সালে বলা হলো, এখানে ২০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে। বিদ্যুতে আলোকিত হবে দেশ। গ্রামগঞ্জের মানুষের কুপিবাতির দিন হবে শেষ। পরের বছর থেকে শুরু হলো তোড়জোড়। জমি অধিগ্রহণ করে পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য ২৬০ একর জমি নেয়া হয়। শুরু হয় ভূমি উন্নয়ন, অফিস, রেস্ট হাউজ, বৈদ্যুতিক স্টেশন আবাসনের কাজ। প্রকল্পের জন্য আলোচনা হয় কানাডা, সুইডিস, নরওয়ে সরকারের সাথে। ১৯৬৫ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য যন্ত্রপাতি জাহাজে করে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) উদেশে পাঠানো হয়। তৎকালীন সরকার সেই জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে না ভিড়িয়ে নিয়ে যায় করাচিতে। প্রকল্পটি বাতিল করে দেয়। থমকে যায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্বপ্ন।

মূলত দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। এ নিয়ে ১৯৭৪ সালে বন্ধুরাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে এ নিয়ে আলোচনা করেন। ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক ঘটনার পর সবকিছু হয়ে যায় ওলটপালট। এরপর পদ্মায় অনেক পানি গড়িয়েছে। ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে। সব সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে আলোচনা-সমীক্ষা হয়েছে। প্রয়োজনের নিরিখে আরো বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্র নির্মাণের কথা সুপারিশ হয়েছে। কিন্তু দৃশ্যমান না থাকায় মানুষ ভুলে যায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কথা।

২০০০ সালে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া ৬০০ মেগাওয়াট সম্পন্ন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার অ্যাকশন প্লান-২০০০ অনুমোদন করান। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করা হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় আনা হয় প্রকল্পটি। শুরু হয় কর্মকা-। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ পরমাণু কমিশন আর রাশান ফেডারেশন স্টেট অ্যাটমিক অ্যানার্জি কর্পোরেশনের (রোসাটম) মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। এরপর একের পর এক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক আন্তর্জাতিক পরমাণু সংস্থার লোকদের সফরসহ বিভিন্ন কাজ এগিয়ে চলে। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। জেগে ওঠে রূপপুর। দেশি-বিদেশি হাজার হাজার কর্মীর পদচারণায় মুখরিত হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে পাকশী স্টেশনে নেমেই বোঝা গেল চার দিকে কর্মব্যস্ততা। পরিত্যক্ত হওয়া জমিতে গড়ে উঠছে গ্রিনভ্যালি নামে বিশাল বিশাল আবাসিক ভবন। আর প্রকল্প এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে চলছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূল ভৌত অবকাঠামো রিঅ্যাক্টার টারবাইন ও অন্যান্য কাজ। চলছে সুপার স্ট্রাকচারের ঢালাই ও উভয় ইউনিটের ফাউন্ডেশনের কংক্রিট ঢালাইয়ের কাজ। নিরাপত্তার কাজটি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বিজিবি, পুলিশসহ অন্যান্য সংস্থা দেখভাল করছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশ, রাশিয়া ও ভারতের ৩০-৩৫টি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। রাশিয়ার দেড় হাজার কর্মী রয়েছে। বাংলাদেশের আরো পাঁচ-সাত হাজার কর্মী দুই সিফটে কাজ করছে। সকালে গেটের সামনে রাখা সারি সারি বাইক আর সাইকেল। দেশি-বিদেশি হাজারও কর্মী কাজ করছে অথচ কোনো কোলাহল নেই। যে যার মতো কাজ করে চলেছে। আর কঠোর নিরাপত্তার চোখ চার দিকে। নদীর দিকে চলছে নদী শাসন ও জেটি নির্মাণের কাজ, যেখানে জাহাজ ভিড়বে। ড্রেজিং করা হবে। মালামাল নিয়ে আসার জন্য পাকশী রেল অফিসের পাশ দিয়ে ঈশ্বরদী থেকে প্রকল্প পর্যন্ত রেলপথ স্থাপনের কাজও বেশ এগিয়ে চলেছে। চওড়া হবে রাস্তাঘাট। নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য বন্ধ হওয়া পাকশী পেপার মিলের স্থানে চলছে ভূমি সংস্কারের কাজ। স্থানীয়রা বলেন, পুরো পাকশী পেপার মিল থেকে রেলের অফিসের পূর্ব পর্যন্ত নেয়া হবে। নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার জন্য এমন ব্যবস্থা।

রূপপুর প্রকল্প নিয়ে স্থানীয় মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেল, বিদেশি ছাড়াও কয়েক হাজার মানুষ কাজ করছে। এর মধ্যে স্থানীয়দের সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের মতো। বাকিরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছে।
প্রকল্প নিয়ে বেশ ক’জনের সাথে আলাপকালে তাদের মনে এক অজানা শঙ্কা বিরাজ করছে। ডিজিটাল জামানায় গুগলে সার্চ দিয়ে ইতিবাচক-নেতিবাচক বিষয়গুলো জানার চেষ্টাও কম নয়। জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক বিশিষ্ট প্রকৌশল বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. আবু বকর মো: ইসমাইল ইনকিলাবকে বলেন, রূপপুর প্রকল্প নিশ্চিতভাবে দেশের জন্য কল্যাণকর, যা দেশের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ভালো ভূমিকা রাখবে। এটি পরিচালনার জন্য দক্ষ জনশক্তি আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, সরকার দক্ষতা বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করছে। আমাদের অনেক শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণের জন্য রাশিয়া যাচ্ছে। এ প্রকল্প চালুর পর আমাদের নিজেদের জনশক্তি বৃদ্ধির জন্য তারা ছাত্রদের চুক্তির ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে। তেজস্ক্রিয় পদার্থ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে বলেন, এ প্রকল্পে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই বিষয়টি দেখা হচ্ছে। সবকিছু মাথায় রেখে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বর্জ্য রাশিয়া নিয়ে যাবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তার তেমন কিছু নেই। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারোই হাত নেই।

দিনভর প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন, বিভিন্ন মানুষের সাথে আলাপচারিতার পর নতুন হাট গ্রিনভ্যালি এলাকায় পরমাণু শক্তি কমিশনের অফিসে তথ্য নিতে যেতেই গেটে বিজিবি সদস্যদের বাধা। সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে তারা নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করছেন। তাছাড়া এখানে বিদেশীদের অবস্থান। এরপর অফিস সংলগ্ন আবাসন প্রকল্পের বালিশ কাহিনীর পর একটু বেশি কড়াকড়ি করা হয়েছে।

প্রকল্পের সিনিয়র কর্মকর্তা বি এম রুহুল কুদ্দুস প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় প্রসঙ্গে বলেন, এটি একটি সমন্বিত প্রকল্প। এখানে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন, বিদ্যুৎ বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক বিভাগ, রেল সবাই যে যার মতো কাজ করে যাচ্ছে। প্রকল্পের কাজ পরিকল্পনামাফিক এগিয়ে চলেছে। এখন পর্যন্ত সব ঠিকমতো চলছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হলে উৎপাদিত ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। যার সুফল ভোগ করবে দেশের ৬ কোটি মানুষ। রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে ৬০ বছর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় কম হবে। প্রকল্পটিতে রুশ ডিজাইনের ৩+ প্রজন্মের রিয়াক্টর স্থাপন করা হচ্ছে, যা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সংক্রান্ত সকল আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটাতে সক্ষম। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দেশে-বিদেশ আন্তর্জাতিক মানদ-ের নিরিখে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে এবং হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রূপপুর প্রকল্পের কর্মীদের আবাসনের জন্য ৩১ একর জমির ওপর গ্রিন সিটি ক্যাম্পাস নামে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ২০ তলা ও ১৬ তলাবিশিষ্ট। ১৯টি ভবনের মধ্যে ২০ তলা ভবন আটটি আর ১৬ তলা ভবন ১১টি। ভবনগুলো নির্মাণ করেছে গণপূর্ত বিভাগ। ২০২২ সালের মধ্যে যার কাজ সম্পন্ন হবে। বেশকিছু ভবনে বিদেশিরা থাকছেন। অন্যগুলো সাজসজ্জা করা হচ্ছে। ‘বালিশ’ ক্রয়কা- নিয়ে কর্মকা-ে বেশ বিব্রত কর্তৃপক্ষ। আবাসিক এলাকার পাশে প্রকল্পের জন্য আরো ছয় একর জমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এখানে নির্মাণ করা হবে বিশেষায়িত ফায়ার সার্ভিস, ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্লান্ট ও নিরাপত্তা ক্যাম্প।

প্রকল্প অফিস রূপপুর নতুন বাজার বসেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত দেশি-বিদেশি কর্মীদের পদচারণায় মুখরিত থাকছে। গড়ে উঠেছে বিপণি বিতান, মুদি দোকান, বিউটি পার্লার, মানসম্মত সেলুন, চায়নিজ রেস্তোরাঁ, বাংলা রেস্তোরাঁ, খাবার হোটেল, চায়ের স্টল ও বিভিন্ন ফলের দোকান। এখানে কেনাকাটা করে দেশি-বিদেশি কর্মীরা। কোয়ার্টারে থাকে বিদেশিরা। বিকেল বেলায় কাজ থেকে এসে বের হয় বাজারে। প্রচুর রাশিয়ান কর্মী। ওরা ভাঙা বাংলায় কথা বলে আবার বিপণি বিতান মুদি আর ফলের দোকানিরা রাশিয়ান ভাষায় দরদাম করে। অনেকে চলার মতো রাশিয়ান ভাষা রপ্ত করে ফেলেছে। বাংলাদেশি আর রাশিয়ানরা একে অপরকে বন্ধু বলে সম্বোধন করে। অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড বাংলার সাথে রাশিয়ান ভাষায় লেখা। অনেক পণ্যের গায়ে রাশিয়ার ভাষা। যেন রাশিয়ার এক খ- গ্রাম। এখানকার অনেক মানুষের হয়েছে কর্মসংস্থান। জীবনমানও বেশ ভালো। বেড়েছে বাড়ি ভাড়া। সব মিলিয়ে বেশ মিলে মিশে আছে সবাই।

রূপপুর প্রকল্পের জন্য জমি-জিরাত গেছে হাকিম ম-লের। এগারো বছর বয়সে প্রকল্প এলাকা ছেড়ে পাশে বাঘোল দিয়াড় এলাকায় আশ্রয় নেন। আলাপকালে বলেন, ভাবতেই পারিনি কখনো বিদ্যুৎকেন্দ্র হবে; কিন্তু এখন বাস্তব। আমাদের প্রত্যাশা প্রকল্পের জন্য বাপ-দাদার ভিটে গেছে। সেখানে যেন আমাদের সন্তানদের কর্মসংস্থান হয়।

ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টালে দেখা যায়, উত্তরাঞ্চলের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রতিষ্ঠা হয় প্রথম ঈশ্বরদী ইপিজেড। এখানকার জেনারেল ম্যানেজার মো: আব্দুল আলিম বলেন, পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ শিল্প সম্প্রসারণ সহায়ক হবে। অন্যদের মতো তিনিও বন্ধ হয়ে যাওয়া ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি চালুর দাবি জানান। তার মতে, এতে বিদেশি উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়বে। দিনভর রূপপুর ঘুরে সন্ধ্যায় ফেরার ট্রেন ধরার জন্য পাকশী স্টেশনের প্লাটফর্মে পায়চারির সময় হঠাৎ নজরে পড়ে রূপপুরের মূল প্রকল্প এলাকায় আলোর ঝলকানি। আলোময় করে তুলেছে মাইলের পর পর মাইল গ্রামীণ জনপদ। চারদিকে কালো অন্ধকারের মধ্যে এমন আলোর ঝলকানি ইঙ্গিত দেয় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু হলে তখনকার দৃশ্যটি কেমন হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
SH Forhad Bhuiyan ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
উন্নায়নের সরকার
Total Reply(0)
Ariyan Joy ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
নেত্রীর সফলতা কামনা করি।জয় বাংলা।
Total Reply(0)
Md Saiful Islam ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে দূর্বার। যতদিন তোমার হাতে রবে দেশ,পথ হারাবে না বাংলাদেশ।
Total Reply(0)
Shariful Jone ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এভাবেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
Total Reply(0)
Faiz Ali ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৩ এএম says : 0
সাগরতল হতে পদ্মাসেতু আর মহাকাশ হয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎ,- সাবাশ বাংলাদেশ, এ পৃথিবী আবাক তাকিয়ে রয়.
Total Reply(0)
Wahid Hasan ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৪ এএম says : 0
আমি বঙ্গবন্ধু কে দেখি নাই আমি তাজউদ্দীন আহমেদ কে ও দেখি নাই,,আমি দেখেছি শেখ হাসিনাকে ,হে মহান নেতা আপনার হাত ধরে আমরা দেখেছি সুখী সমৃদ্ধিশালী ক্ষুধা ও দারিদ্র মুক্ত সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন..!!
Total Reply(0)
Md Rakibul Hasan Rakib ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
উন্নয়নের অগ্রপথিক শেখ হাসিনা সরকার।
Total Reply(0)
মারুফ ভূঁইয়া ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনা।।
Total Reply(0)
এম আনোয়ারুল হক ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১:০৫ এএম says : 0
বাংলার মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার শেষ আশ্রয়স্থল প্রিয়নেত্রী,জননেত্রী শেখ হাসিনার। শেখ হাসিনার জন্য বাংলাদেশ ধন্য।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন