শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

স্বাধীনতার দাবিতে উত্তপ্ত কাশ্মীর চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণের প্রভাবে বিক্ষোভ শুরু হতে পারে শঙ্কায় ভারত শাসিত কাশ্মীরজুড়ে লোকজনের চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছে পুলিশ। শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ইমরান ভারত কাশ্মীর থেকে যখন বিধিনিষেধ তুলে নিবে তখন ‘রক্তবন্যা বয়ে যেতে পারে’ বলে বিশ্বকে সতর্ক করেছেন। ভারত সরকার গত ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নিয়ে ওই অঞ্চলকে কড়া নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মুড়ে রেখেছে। কাশ্মীর অঞ্চলে গণহারে ধরপাকড়, যোগাযোগ বন্ধ করে রাখা এবং কারফিউ জারি করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে সেখানে কিছু কড়াকড়ি শিথিল হলেও আটক বিশিষ্ট কাশ্মীরি নেতারা এখনো ছাড়া পাননি এবং বন্ধ করে রাখা মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবাও চালু করা হয়নি। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘে ইমরানের ভাষণের পর শুক্রবার রাতে কয়েকশত কাশ্মীরি বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং ইমরানের সমর্থনে, কাশ্মীরের স্বাধীনতার সমর্থনে শ্লোগান দেয়। এরপর শনিবার পুলিশের স্পিকার লাগানো ভ্যানগুলো শ্রীনগরের কয়েকটি এলাকায় ঘুরে ঘুরে লোকজনের চলাফেরার ওপর বিধিনিষেধ আরোপের কথা ঘোষণা করে, যেকোনো ধরনের প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দমনে রাস্তায় অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করা হয়; দুই জন প্রত্যক্ষদর্শী ও কর্মকর্তাদের বরাতে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সৈন্যরা কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে শ্রীনগরের প্রধান ব্যবসায়িক কেন্দ্রে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়। পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “গত রাতে ইমরান খানের ভাষণের পরই শ্রীনগর শহরজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ায় এটি অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল।” শুক্রবার রাতে শ্রীনগরের নিকটবর্তী সৌরা অঞ্চলসহ কাশ্মীরের কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় নেমে আসা লোকজন নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে পাথর ছুড়ে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয় বলে জানিয়েছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন জানিয়েছে, কাশ্মীরের শ্রীনগরের ১২ মাইল উত্তরের গান্দেরবলে তিন কাশ্মীরি তরুণ নিহত হয়েছে। এছাড়া জম্মু এবং শ্রীনগরের মধ্যে সংযোগকারী মহাসড়কের বাটোটের কাছে পুলিশের তল্লাশি অভিযানের সময় আরো তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। এদিকে, প্রায় ৫০ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর মূল লক্ষ্য ছিল কাশ্মীর ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তিনি বারবার বলতে চেয়েছেন, ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে গত প্রায় দুই মাস ধরে ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে যেভাবে ‘পশুর মতো’ অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, তা যে কোনো সময় বিপজ্জনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। ইমরান খান সাবধান করেন, আশঙ্কা রয়েছে কাশ্মীরি তরুণ যুবকরা যে কোনো সময় সহিংস বিক্ষোভ শুরু করতে পারে, যার জন্য ভারত হয়ত পাকিস্তানকে দায়ী করবে। তিনি বলেন, তেমন কিছু হলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা নাকচ করা যায় না। যে যুদ্ধ পারমাণবিক সংঘর্ষের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তিনি আরো বলেন, যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হয়, তাহলে ছোটো দেশ হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার ছাড়া পাকিস্তানের কোনো বিকল্প থাকবে না। রয়টার্স, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এনডিটিভি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন