শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বৃষ্টিভেজা প্রচারণায় সরব প্রার্থীরা

রংপুর-৩ উপ-নির্বাচন

হালিম আনছারী, রংপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

প্রকৃতির বৈরি আচরণ। দিন-রাত গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। টানা চারদিন ধরে রংপুরের আকাশে প্রকৃতির এমন বৈরি আচরণ। তারপরও থেমে নেই এরশাদের দূর্গখ্যাত রংপুর-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের প্রচার। বরং প্রচারের শেষ মূহুর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। বৃষ্টিতে ভিজে দিন রাত ছুটে চলেছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন পিছিয়ে থাকা রংপুর উন্নয়ন আর জনকল্যাণে কাজ করার। 

নির্বাচনে অংশ নেয়া ৬ জনের মধ্যে ৩ প্রার্থীই বেশ সরব থাকলেও বাকি ৩ জন অনেকটাই নিরব রয়েছেন। এরশাদ পরিবারের দুই প্রার্থীসহ বিএনপি প্রার্থী ছুটছেন ভোটারদের কাছে। শোনাচ্ছেন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি। হাসিমুখে হাত ধরে বুকে টেনে নিয়ে চাইছেন ভোট। আহ্বান করছেন পিছিয়ে পড়া রংপুরকে এগিয়ে নিতে ৫ অক্টোবর ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য।
দীর্ঘ ২৮ বছর এরশাদের জাতীয় পার্টির দখলে থাকা এ আসনে এবারই প্রথম নৌকার প্রার্থী দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু জাতীয় পার্টির আবদারে তাকে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর প্রতিদ্ব›িদ্ব ৬ প্রার্থীর মধ্যে এখন আলোচনায় রয়েছেন ৩ জন। আগামী বৃহস্পতিবার সকালের পর বন্ধ হবে প্রচার। শেষ মূহুর্তে হেভিওয়েট এই ৩ প্রার্থী একে অপরের দুর্বলতাকে পুঁজি করে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কেউ কেউ তুলে ধরছেন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ। ভোটের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই জটিল হচ্ছে ভোটের হিসেব-নিকেশ। তবে এরশাদপুত্র সাদ আর তার আপন চাচাতো ভাই আসিফ দু’জনই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। অন্যদিকে, ধানের শীষ প্রার্থী রিটা রহমানও বিজয়ের ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী। তবে তার বিজয় ইভিএমে চুরির আশঙ্কা রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগে বলছেন।
সোমবার দুপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে গণসংযোগে বের হয়ে বিএনপি জোট প্রার্থী রিটা রহমান বলেন, আমাদের ঠিকমতো প্রচার চালাতে দেয়া হচ্ছে না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ধানের শীষ সাঁটানো পোস্টার ব্যানার গায়েব হচ্ছে। মঞ্চ, ডায়েস, মাইক ব্যবহারে আমরা কোন সুযোগ পাচ্ছি না। আমাদের নেতা-কর্মিদের গ্রেফতার আতঙ্কে রাখা হয়েছে। অথচ জাতীয় পার্টির প্রার্থী আচরণ বিধির কিছুই মানছেন না। এসব বিষয়ে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়নি এবং হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, সাধারণ মানুষতো ধানের শীষের পক্ষে আছে। তারাতো ভোটের মাধ্যমে পরিবর্তন চায়। কিন্তু অতীত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কারণে কেউই ইভিএম এ আস্থা রাখতে পারছে না। তার পক্ষে স্থানীয় বিএনপির নেতারা সবাই মাঠে না নামলেও গতকাল বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচনি প্রচারে আসেন এবং রংপুরের বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সভা করেন। এসব সভায় তিনি রিটা রহমানের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন এবং দলীয় নেতাকর্মিদের রিটা রহমানের পক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান।
অপরদিকে মোটরগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী শাহরিয়ারও জয়ের ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত। তিনি বলেছেন, এখনো লাঙ্গলের পোস্টারে মৃত ব্যক্তির ছবি রয়েছে। একজনের জায়গায় চার-পাঁচ জনের ছবি। এসব ছবি ব্যবহার করে লাভ হবে না। সাধারণ ভোটাররা এরশাদ পরিবারের যোগ্য প্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রার্থী হিসেবে আমাকে সমর্থন দিচ্ছে। আমি সবখানে ভালো সাড়া পাচ্ছি। ভোটের দিন পর্যন্ত যদি এ রকম পরিস্থিতি থাকে এবং পছন্দের প্রার্থীকে ভোটদানে বাধা দেয়া না হয় তাহলে আমি জিতব ইনশাআল্লাহ্। জাতীয় পার্টি থেকে বহিস্কৃত সাবেক এমপি আসিফের পক্ষে জাতীয় পার্টির তৃণমূলের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে এখন প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারে ও গণসংযোগ করতে দেখা যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে আসিফের পক্ষে স্থানীয় জাতীয় পার্টির একটি অংশ মৌন সমর্থন দিয়ে চলেছেন।
আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে মাথা ব্যথা নেই জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাদ এরশাদের। এরশাদের পুত্র হিসেবে তার বাবার মত তিনিও রংপুরবাসীর স্নেহ-ভালোবাসা পাবেন বলে তিনি আশাবাদি। আর তাই তিনি সবার সাথে কুশল বিনিময় আর ভোটারদের কাছে ছুটে চলেছেন। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন নির্বাচিত হলে তার বাবা এরশাদের অসমাপ্ত কাজ শেষ করে রংপুরকে রঙে রঙে সাজাবেন। সাদ এরশাদের পক্ষে জাতীয় পার্টি মহানগর কমিটি নেতৃবৃন্দ এখনও নির্বাচনী মাঠে নামেননি। তবে জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তিনি নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন