শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ফারাক্কার সব গেট খুলে দিয়েছে ভারত

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম


গঙ্গা-পদ্মা নদীর উজানের অববাহিকায় বিহার রাজ্যসহ পশ্চিম-মধ্য ভারত এবং নেপালে ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রবল বন্যা অব্যাহত রয়েছে। এরফলে গঙ্গা-পদ্মার ভাটি অঞ্চল বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঢল-বানের পানি। এ সপ্তাহেই বন্যা কবলিত হতে পারে রাজশাহী, কুষ্টিয়া, পাবনা, ফরিদপুর এবং এর আশপাশ এলাকাগুলো।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার পর্যন্ত উজানে ভারতে গঙ্গা নদীতে ফারাক্কা বাঁধে একশ’রও বেশি গেইট-স্পিলওয়ে দিয়ে বানের পানি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এর উদ্দেশ্য ভারতের গঙ্গা সংলগ্ন এলাকাগুলো বন্যামুক্ত করা। এ কারণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বাড়ছেই। অথচ ভাটিতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে তেমন বৃষ্টিপাত নেই অনেক দিন যাবৎ।

এদিকে পদ্মা অববাহিকা সংলগ্ন গড়াই নদীর পানির সমতল আরও বেড়ে গিয়ে গতকাল বিকেলে ঠিক বিপদসীমা বরাবর এসে গেছে। কামারখালী পয়েন্টে গড়াই নদীর পানির বিপদসীমা হচ্ছে ৮ দশমিক ২০ মিটার। গড়াই নদীর পানির প্রবাহ অপর পয়েন্ট গড়াই রেলব্রিজে বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে গঙ্গা-পদ্মা নদীর প্রবাহ সম্পর্কে পানির সমতল প্রতিনিয়ত বৃদ্ধির তথ্য পাওয়া গেছে। গঙ্গা নদীর পানি গতকাল বিকেল পর্যন্ত আরও বেড়ে গিয়ে পাংখা, রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বেড়ে গিয়ে বিপদসীমার যথাক্রমে ৪৯, ৫৩ এবং মাত্র ১০ সে.মি. নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর গঙ্গার ভাটিতে পদ্মা নদীর পানি সার্বিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ, ভাগ্যকুল ও সুরেশ^র পয়েন্টে বিপদসীমার যথাক্রমে ৪, ২৩ ও ৫১ সে.মি. নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়।

পাউবো’র সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানা যায়, গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অববাহিকায় ও ভাটিতে আগামী ৭২ ঘণ্টায়ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদে পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি এবং কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস পেতে পারে।

দেশের নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৩৬টিতে হ্রাস পায় এবং ২টি পয়েন্টে পানি অপরিবর্তিত থাকে। ভারতে উজানে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ভগলপুরে ৯৩ ও পাটনায় ৯২ মিলিমিটার অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।

এদিকে পাউবো’র পূর্বাভাসে জানানো হয়, গেলো সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে গঙ্গা অববাহিকার উজানে ভারতীয় অংশে মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে গঙ্গা নদীর ভাটিতে অর্থাৎ বাংলাদেশ অংশে পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে থাকে। গত মাসের মাঝামাঝি বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও চতুর্থ সপ্তাহ থেকে ভারতের বিহার প্রদেশে অতিভারী বর্ষণসহ অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এ বর্ষণ আজ মঙ্গলবার শুরু হওয়া অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

উজানে অতি বর্ষণের প্রভাবে গঙ্গা নদী বাংলাদেশের রাজশাহী ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে এবং গড়াই রেলওয়ে ব্রিজ এবং কামারখালী পয়েন্টে (গতকাল বিপদসীমায় এসে যায়) এ সপ্তাহেই বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এরফলে চলতি সপ্তাহে গঙ্গা নদীর সংলগ্ন দেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার কতিপয় স্থানে মাঝারি মাত্রার স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

গঙ্গা নদীর পানি বৃদ্ধির কারণে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী গোয়ালন্দ ও ভাগ্যকুল পয়েন্টে এবং পদ্মা সংলগ্ন যমুনার আরিচা পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এরফলে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পদ্মা নদী সংলগ্ন দেশের মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও শরীয়তপুর জেলাসমূহের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
ইতোমধ্যে পদ্মা পাড়ের বির্স্তীর্ণ এলাকায় ও গড়াই তীরের অনেক স্থানে পানি বৃদ্ধি পেয়ে অনেক গ্রাম-জনপদ প্লাবিত হয়েছে। দিন দিন পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
Mohammed Kowaj Ali khan ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:১৭ এএম says : 0
ভারতকে দাঁত ভাংগিয়া দিতে হইবে। বাংলাদেশ যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। মুদিবুদিকে পাকরাও করো..... ।ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
Hasmat Ali ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:৫৬ এএম says : 0
মরণবাঁধ ফারাক্কা গুড়িয়ে দাও। আজ জাতির প্রয়োজন একজন মাওলানা ভাসানী। আমরা ইলিশ মাছ দিলাম, দাদারা ফারাক্কার সকল গেট খুলে দিল!! বুঝুন কেমন বন্ধু !!!
Total Reply(0)
Nasirul Haque ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
রাজশাহী, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, নাটোর অঞ্চলের জনগণকে বন্যার কবল থেকে বাঁচাতে হলে সরকারকে এক্ষুণি জরুরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
Total Reply(0)
Mizanur Babu ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
দিলেও দোষ না দিলে ও দোষ। ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে সারা বৎসর কাজে লাগে।
Total Reply(0)
রহমত উল্লাহ অয়ন ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
কেউ গুজব ছড়াবেন না,,, ইলিশ মাছের ঘ্রানে খুলে গেছে ফারাক্কা খুলে দেইনি
Total Reply(0)
Sultana Khan ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
আমাদের দেশ টা এখন বন্যায় ভেসে যাবে। বর্ষায় তো আমাদের কোন পানির প্রয়োজন হয়না।। যখন প্রয়োজন হয় তখন গেট খুলে দেয়না।
Total Reply(0)
Joynal Abedin ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
আমরা এখন ফারাক্কার পানিতে ইলিশ চাষ করতে পারবো
Total Reply(0)
Shahead Ahmed ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
ফারাক্কা বাঁধ খুলে দেওয়ায় রাগ লাগছে না। কারণ এটা তাদের স্বভাব। রাগ লাগে বাংলাদেশে বসবাস করে কিছু ভারতের দালাল যখন বড় বড় কথা বলে।
Total Reply(0)
Eemon Hhossain Pro ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
পানি নিয়ে ভাবনা আর না আর না ফারাক্কার বাঁধ খুলছে আর নেই ভাবনা।।।
Total Reply(0)
Abdullah Aguan ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
পানির অপর নাম জীবন। এখন অনেক ভারতপন্থী বলবে ভারত আমাদেরকে জীবন দিয়েছে
Total Reply(0)
Miah Muhammad Adel ১ অক্টোবর, ২০১৯, ৪:৫৭ এএম says : 0
ফারাক্কার সব গেট খুলে দিলেও বাংলাদেশ সরকারের একটুও প্রতিবাদের সাহস থাকে না। আসিফ নজরুল সাহেব ঠিকই বলেছেন বংলাদেশ সরকার সম্বন্ধে।
Total Reply(0)
Abdullah al mamun ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:১৭ এএম says : 0
ato khushir khobor taina ?
Total Reply(0)
Abdullah al mamun ১ অক্টোবর, ২০১৯, ১১:১৭ এএম says : 0
ato khushir khobor taina ?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন