শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

আশরাফুল-রাজ্জাকদের কি হবে?

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ক্রিকেটারদের সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গেলে মনে হতেই পারে ‘এই মাত্রই বোর্ড পরীক্ষার ফল ঘোষনা হয়েছে’। কেউ হাস্যোজ্জ্বল ছবি দিয়ে লিখেছেন নিজের প্রাপ্ত নম্বর, আবার কেউ একধাপ এগিয়ে যোগ করে দিয়েছে ‘সিজিপিএ’ শব্দটিও! কারণটাও অজানা নয়। গত ক’দিন ধরে ফিটনেস টেস্টের নতুন মানদন্ড নিয়ে যে উত্তাপ গেছে তাতে এই ঝড়ো বৃষ্টিতেও স্বস্তির পরশ বুলাতে ব্যর্থ ঘরোয়া ক্রিকেটের আকাশ। কেউ কেউ সূর্যের ঝিলিক দেখলেও অনেক অভিজ্ঞদের অকাশেই উড়ে বেড়াচ্ছে শঙ্কার কালো মেঘ।

গতকাল দেশের একাধিক ভেন্যুতে জাতীয় লিগে অংশ নিতে যাওয়া আট বিভাগীয় দলের ক্রিকেটাররা অংশ নেন বিপ টেস্টে। ঢাকায় মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ইনডোরে বিসিবির ট্রেনার তুষার কান্তি হাওলাদারের তত্ত¡াবধানে চলে এই পরীক্ষা। তাতে এবারের নির্ধারিত ১১ না পেলেও আগের পারফরম্যান্স বিচার করে বিবেচনার সুযোগ রেখেছিলেন নির্বাচকরা। তবে সিনিয়র ক’জন ছাড়া খুব বেশি ক্রিকেটারদের বিশেষ বিবেচনার প্রয়োজন পড়ছে না। ফিটনেস নিয়ে খেটে সেরা অবস্থাতেই জাতীয় লিগে নামতে যাচ্ছেন ক্রিকেটাররা।

ঢাকা বিভাগ, খুলনা বিভাগ, ঢাকা মেট্রোর বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার সকাল থেকেই দিয়েছেন পরীক্ষা। তাতে বেশিরভাগেরই অবস্থা আগেরবারের চেয়ে ভালো। সবচেয়ে কম স্কোরকরাদের কেউও নয়ের নিচে নামেননি। ৩৭ পেরুনো অভিজ্ঞ আব্দুর রাজ্জাক স্কোর পেয়েছেন ৯.৬। আগেরবারের চেয়ে নিজের ফিটনেসের উন্নতি করেছেন তিনি। তবে হতাশ করেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। সাবেক অধিনায়ক পেয়েছেন ৯.৫। প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল না করলেও আশরাফুল আশাবাদী সামনের এক সপ্তাহে অনুশীলন করলে কাটিয়ে উঠতে পারবেন ফিটনেসের এ ঘাটতি, ‘আমি ৯.৭ পেয়েছি। সাত-আট দিন অনুশীলন করলে আশা করি আরও উন্নতি করতে পারব। তবে এই উদ্যোগ ইতিবাচক, এটিই হওয়া উচিত। আজ (কাল) বেশির ভাগই ১০.৫ থেকে ১১ দিয়েছে। এই উন্নতিটা হয়েছে ফিটনেসের এই বাধ্যবাধকতার থাকার কারণেই।’

আশরাফুল-রাজ্জাকদের মতো বয়স বেশি না হলেও হতাশ করেছেন নাসির হোসেনও। দশ পেরুতেই পারেননি তিনি। জাতীয় লিগের দ্বিতীয় মৌসুম থেকে খেলা অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শরীফ স্কোর করেছেন এগারো ছুঁইছুঁই। অভিজ্ঞ হলেও ফিটনেসে কমতি রাখেননি নাঈম ইসলাম, জুনায়েদ সিদ্দিকীরা। অনায়াসেই তারা পেরিয়েছেন বেঁধে দেওয়া ১১- এর সীমানা। সবচেয়ে ভালো করেছেন পেসার আলি আহমদ মানিক। সর্বোচ্চ ১২.৮ স্কোর করেছেন তিনি। ৬৫ জন ক্রিকেটারের বিপ টেস্ট বেশ সন্তোষজনক জানিয়েছেন ট্রেনার তুষার, ‘ঢাকায় যাদের পরীক্ষা হলো তারা গড়ে দশের উপর পেয়েছে, যেটাকে আমরা বেশ ভালো বলতে পারি। কারণ গড় হিসেব করলে গতবার এর চেয়ে কম ছিল। তার মানে প্রায় সবাই উন্নতি করেছে।’
গত বছরই জাতীয় লিগের আগে বিপ টেস্টের বাধ্যবাধকতা যুক্ত করেন নির্বাচকরা। গতবার ন্যূনতম ৯ থেকে বাড়িয়ে এবার সীমা বেঁধে দেওয়া হয় ১১। এবার ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষার সার্বিক ফল পেয়ে বেশ খুশি নির্বাচক হাবিবুল বাশার। স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে ফিটনেস নিয়ে সচেতনতা বাড়াতেই সবচেয়ে ইতিবাচক দিক দেখছেন তিনি, ‘আমার মনে হয় যে যাই বলুক খেলোয়াড়রা কিন্তু এটি খুব ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। এটা খেলোয়াড়দের জন্যই ভালো কিন্তু সবাই এটা উপলব্ধি করতে পেরেছে। এই কারণে আমি খুবই খুশি। যতদূর দেখলাম এখন পর্যন্ত ঢাকাতে...ঢাকার বাইরের ফলাফল এখনও হাতে আসেনি, ঢাকাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৬ ভাগ পাস করে গেছে। যে লক্ষ্যটা দেয়া হয়েছিল সেটা পূরণ করতে পেরেছে।’

যে কয়েকজন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেননি, সুযোগ থাকছে তাদেরও। এমনিতে অভিজ্ঞ নিয়মিত পারফর্মারদের ছাড় দেওয়ার কথা আগেই বলেছিলেন নির্বাচকরা। এবার জানালেন, কেউ একবার না পারলে এমনকি বারবার পরীক্ষা দেওয়ারও সুযোগ থাকছে, ‘আমরা কিন্তু এটা বলেছি যে যদি কেউ পূরণ করতে না পারে আমরা দ্বিতীয়বার, তৃতীয়বার নেব, চতুর্থবার নেব। সুযোগটা থাকবে ওই পর্যায়ে আসার। আমরা একটা স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করার চেষ্টা করছি, সংস্কৃতি তৈরি করার চেষ্টা করছি। আমি আশা করছি সবাই এটা বুঝতে পারবে। আমার খেলোয়াড়রা বুঝতে পেরেছে তো আমি খুবই খুশি।’

আগামী ১০ অক্টোবর থেকে দেশের চার ভেন্যুতে শুরু হবে জাতীয় ক্রিকেট লিগের ২১তম আসর। সেই ২০১৫ সালের পর এর মধ্যে চার বছর পর মিরপুর শের-ই-বাংলায় ফিরছে ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় এই আসর। প্রথম দিনই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঢাকা মেট্রোর হোম ভেন্যুতে আতিথ্য নেবে তামিম ইকাবালের চট্টগ্রাম বিভাগ। একই দিন ফতুল্লায় মুখোমুখি হবে রংপুর বিভাগ ও ঢাকা বিভাগ। এছাড়া খুলনা ও রাজশাহীতে হবে অপর দুই ম্যাচ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন