শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

বানৌজা তিতুমীর নাবিক সৃষ্টির সূতিকাগার -খুলনায় প্রেসিডেন্ট

খুলনা ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৯, ১২:১৯ এএম

প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ সমুদ্রে নৌবহরের প্রশিক্ষণ ও লজিস্টিকস সহায়তা প্রদান করছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান নৌঘাঁটি বানৌজা তিতুমীর। দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে নৌসদস্যদের পেশাগত দক্ষতা অর্জনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে এ ঘাঁটি। নবীন নাবিক সৃষ্টির দক্ষ সূতিকাগার হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করেছে এটি। এর অধীনে পরিচালিত নবীন নাবিক প্রশিক্ষণ বিদ্যালয় ও নেভাল প্রভোস্ট অ্যান্ড রেগুলেটিং স্কুল নাবিকদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পাশাপাশি, সরবরাহ শাখার কর্মকর্তা ও নাবিকদের মৌলিক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে স্কুল অব লজিস্টিকস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (সোলাম)। তাছাড়া, খুলনা নৌ-অঞ্চলে অবস্থিত অন্য ঘাঁটি ও জাহাজের প্রয়োজনে সদা অপারেশনাল, প্রশাসনিক ও লজিস্টিকস সহায়তা দিচ্ছে বানৌজা তিতুমীর। এছাড়া অপারেশনাল ও লজিস্টিকস কার্যক্রমে অনন্য সহায়তার স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ নৌবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি বানৌজা তিতুমীরকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) দেয়া হয়। বুধবার সকাল ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বানৌজা তিতুমীরকে এ সম্মাননা দেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করেন ও ভূ-রাজনৈতিক বিবেচনায় একটি আধুনিক নৌবাহিনী গড়ে তুলতে তার স্বপ্নের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর। নৌবাহিনীকে আধুনিক, ত্রিমাত্রিক ও যুগোপযোগী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন বাস্তবমুখী পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। দেশের অপার সমুদ্র-সম্পদ আর সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব পালনে ফোর্সেস গোল-২০৩০’র আলোকে নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে আধুনিক সারফেস ফ্রিগেট, সাবমেরিন, নেভাল অ্যাভিয়েশন ও নৌ-কমান্ডো স্কোয়াডস। একই সঙ্গে, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভিশন-২০৪১ প্রণয়নের কাজও এগিয়ে চলেছে।
আবদুল হামিদ বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ভূ-খ-ের প্রায় সমপরিমাণ সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি। আমাদের এ বিশাল সমুদ্র এলাকা প্রাকৃতিক সম্পদ ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় ভরপুর। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্লু-ইকোনমির বিভিন্ন সম্ভাবনা বাস্তবায়নে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের মোট বাণিজ্যের ৯০ ভাগেরও বেশি সমুদ্রপথেই পরিচালিত হয়। দেশের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল। তাই, সমুদ্র সীমানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আমাদের নৌ-সদস্যরা বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে সার্বক্ষণিক সমুদ্র এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চলেছেন।
জানা যায়, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম বিপ্লবী ছিলেন সৈয়দ মীর নিসার আলী তিতুমীর। ১৮৩১ সালে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তিনি বাঁশেরকেল্লা নির্মাণ করেন ও সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পরে, তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ ঘাঁটির নামকরণ করা হয় ‘বানৌজা তিতুমীর’। ১৯৭৪ সালের ১০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিতুমীরের নামে এ ঘাঁটি কমিশন করেন ও ‘নেভাল এনসাইন’ প্রদান করেন।
এর আগে, সকালে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রেসিডেন্ট খুলনাস্থ বানৌজা তিতুমীর ঘাঁটিতে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান এ এম এম এম আওরঙ্গজেব চৌধুরী তাকে স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সেনা ও বিমান বাহিনী প্রধান, নৌ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নৌবাহিনীর সব নৌ-প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ, মুক্তিযুদ্ধের নৌ কমান্ডোসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি, দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও ঊর্ধ্বতন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তারা।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন